আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর দেশের মানুষ এখন মুক্ত
- চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
- ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৮

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের বলেছেন, আওয়ামী দুঃশাসনের অবসানের পর দেশের মানুষ এখন মুক্ত। দেশের সব মানুষ নির্দ্বিধায় চলাফেরা করতে পারছে। এমনকি ফ্যাসিস্ট আাওয়ামী লীগের শাসনামলের চেয়ে বর্তমানে অপেক্ষাকৃত কিছুটা ভালো নাগরিক সুবিধা ভোগ করার সুযোগ পাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা চেয়েছিলাম শেখ হাসিনার পদত্যাগ। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় সে পদত্যাগের পাশাপাশি দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। যার ফলে সারা দেশের পাশাপাশি আমরা চৌদ্দগ্রামের মানুষও আজ মুক্ত ও স্বাধীনভাবে নির্দ্বিধায় চলাফেরা করতে পারছি।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহিলা বিভাগের চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মহিলা সম্মেলনে আলাদা প্যান্ডেলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা: সৈয়দ আবদুল্লাহ মো: তাহের এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর আমি নিজ জন্মস্থান তথা আপনাদের কাছে আসতে পারিনি। আমাকে চৌদ্দগ্রামে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এ সময়ে আমার বাবা-মায়ের কবর পর্যন্ত জিয়ারত করার সুযোগ পাইনি। ইতোমধ্যে অনেক আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও সাংগঠনিক নেতাকর্মী ইন্তেকাল করার পর আমার হৃদয়জুড়ে ছিল কান্নার ঢল এবং অশ্রু সংবরণ করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও গুণ্ডাপাণ্ডাদের হামলা-মামলা ও অত্যাচার-নির্যাতনের কারণে মৃতদের জানাজা, কাফন-দাফনে অংশগ্রহণ এমনকি কর্মী সমর্থকদের কোনো ধরনের খোঁজখবর নেয়ার সুযোগ পর্যন্ত ছিল না।
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিগত ১৫ বছরে আমাদের শত শত কর্মী-সমর্থককে নির্যাতনের মাধ্যমে পঙ্গু করে দিয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মীকে গুলি করে ও পিটিয়ে হত্যা করেছে। কয়েক শ’ বাড়িঘর লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে বাড়িঘর ছাড়া করেছে। তাদের নির্যাতনে এই দীর্ঘ সময় আমাদের অনেক নেতাকর্মী ঢাকা, চট্টগ্রাম, পাশ্ববর্তী ফেনী ও কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আত্মীয় স্বজন ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাসা-বাড়িতে অবস্থান নিয়ে দিনাতিপাত করেছে। কেউ কেউ মাঝে মধ্যে বৃদ্ধ ও অসহায় বাবা-মা ও ভাই-বোন ও স্ত্রী-সন্তানদের এক নজর দেখার জন্য বাড়িতে গেলেও মুজিবের লালিত সন্ত্রাসীরা তাদের ধরে বেদম মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করে দিতো। এভাবে আওয়ামী দুঃশাসনের পুরো সময়টি আমরা এক আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা ও অসহায়ত্বের মধ্যে কাটিয়েছি।
মহিলাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে হজরত সুমাইয়া, আয়েশা ও খাদিজাদের মতো অসংখ্য মহিয়সী নারী ইসলামের জন্য আত্মত্যাগের পাশাপাশি তাদের সম্পদ ও সময় দিয়ে ইসলামকে প্রতিষ্ঠা করার কাজে সহযোগিতা করেছিলেন। আপনারা তাদের উত্তরসূরী হিসেবে ইসলামের পক্ষে সমর্থন ও কাজ করার লক্ষে আজকের এ সমাবেশে সমবেত হয়েছেন।
চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন।
মূল প্যান্ডেলে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মহিলা বিভাগের সেক্রেটারি নুরুন্নিসা সিদ্দিকা, কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি সাঈদা রুম্মান, রাজনৈতিক ও পার্শ্ব সংগঠন বিভাগীয় সেক্রেটারি ডা: হাবিবা চৌধুরী সুইট, কুমিল্লা অঞ্চল সহকারী শাহীন আক্তার, ফেরদৌস সুলতানা প্রমুখ।
এর আগে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন মহিলা জামায়াতের জেলা সেক্রেটারি শাহিনা আক্তার।