নাসিরনগরে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে নারীসহ আহত শতাধিক
- নাসিরনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদাতা
- ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে ইয়াবা বিক্রির টাকা নিয়ে বিরোধের জেরে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী-পুরুষ, গবাদি পশু ও শিশুসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। এ ছাড়াও প্রতিপক্ষের বাড়ি ঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আহতের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। সংঘর্ষের পর থেকে দুই পক্ষ মুখমুখি অবস্থানে রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের কামাল দিঘী পাড়ে এ ঘটনা ঘটে। নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আলম সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, ফান্দাউক গ্রামের শাহজানের ছেলে রুবেল শাহ একজন মাদককারবারি। একই গ্রামের আজদন মিয়ার ছেলে শাফায়েত মিয়া রুবেলের কাছ থেকে কিছু ইয়াবা কেনেন। এ নিয়ে কিছুদিন পর পর পাওনাদারদের সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে গতকাল বুধবার রাত ১০টার দিকে মাদককারবারি রুবেল শাহ ও শাফায়েতের আত্মীয় পারভেজ মিয়ার মধ্যে মাদকের টাকা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় উভয় পক্ষের নারী-পুরুষসহ ৭০ জন আহত হয়।
পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে পশুর হাটে যাওয়ার সময় শাফায়েতের পক্ষের মারুফ মিয়ার ওপর অতর্কিত হামলা চালায় রুবেল শাহের লোকজন। এ সময় দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে যায়। এতে আরো ৪০ জন আহত হয়। সংঘর্ষের সময় শাফায়েতের পক্ষের বেশ কয়েকটি বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের অভিযোগ উঠে।
অভিযুক্ত রুবেলের সাথে কথা হলে তিনি মাদকের টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার বড় ভাই নাইম শাহ পাশের বাড়ির শাফায়েত ও পারভেজের কাছে ৭০ হাজার টাকা পায়। সে টাকা ফেরত চাওয়ায় আমাদের ওপর হামলা করে শাফায়েতের লোকজন। দুই দফা হামলায় আমাদের প্রায় ৭০-৮০ জন আহত হয়।
আহতরা হলেন বক্কর শাহা, ফকরুল শাহা, সাফিউল শাহ, সালাউদ্দিন শাহ, আলামিন শাহা, সালমান শাহ, ইয়ামিন শাহ, ইমন শাহ, জাকির শাহ, মেরাজ শাহ, মবিন শাহ, হৃদয় শাহ, লালন শাহ, মহিন শাহ, রায়হান শাহ, নিজাম শাহ, মুন্না শাহ, মুক্তাদির শাহ, মুন্নী শাহ, সজল শাহ, ফয়সাল শাহ, শিফন শাহ, শামীম শাহ, বাদল শাহ, ইধন শাহ, নাজুল শাহ, আলম শাহ, শাকিল শাহ, ইমন শাহ, মাসুক মিয়া, কামরুল মিয়া, নিজাম মিয়া, জুবায়ের মিয়া, শাহনাজ মিয়া, আবদুল্লাহ মিয়া, বক্কর মিয়া, হুমায়ুন মিয়া, তানভির ফয়সল মিয়া, লীমা বেগম, রাকিবা বেগম, নাসুমা, নাছিমা বেগম, ফারহানা বেগম, লীজা বেগম, কল্পনা বেগম, আকলিমা বেগম, তানজু বেগম, শেলিনা বেগম, খুদেজা বেগম, রাকিবা, সিমু বেগম, সুমাইয়া বেগম, জান্নাত বেগম, ইভা বেগম ও নুসরাত বেগম।
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার সাইফুল ইসলাম বলেন, সংঘর্ষের পর দুই পক্ষের আহতরাই চিকিৎসা নিয়েছেন। গতকাল রাত ১০টার পর থেকে প্রায় ১২টা পর্যন্ত চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। আজ মারামারির পর দুই পক্ষের লোকজন চিকিৎসা নিতে এসেছে।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আলম বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি। মাদকের টাকা নিয়ে সংঘর্ষের বিষয়টি আমার জানা নেই। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা আছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা