০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ৭ শাবান ১৪৪৬
`

গৃহবধূকে হত্যা পর লাশ পাঠাল বাবার বাড়ি

নিহত মুক্তা বেগম - ছবি : নয়া দিগন্ত

নরসিংদী জেলার রায়পুরার মুক্তা বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার লাশ বাবার বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পাঠিয়েছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনায় মুক্তার শ্বশুর রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমান ও শাশুড়ি খোশনাহার বেগমকে আটক করেছে।

শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। এর আগে, ভোর ৪টার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে আশুগঞ্জে পাঠানো হয় লাশ।

জানা যায় মুক্তার স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল থেকে ওই আত্মীয়কে লাশের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহত মুক্তা বেগম আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর হোসেনপুর (কুড়ের পাড়) গ্রামের গোলাম মিয়ার মেয়ে। তার সাত মাস বয়সী একটি ছেলে রয়েছে।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মুজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী খোশনাহার বেগম মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তারা জানান যে রাত ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত মুক্তা ও তার স্বামী আব্দুল্লাহর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। রাত ২টার দিকে স্বামী আব্দুল্লাহ মুক্তাকে মুখে হাত চেপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। ঘটনা আড়াল করতে মুক্তার লাশ তার পরিবারের কাছে অসুস্থতার খবর দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুক্তাকে মৃত ঘোষণা করলে খায়েশ মিয়া নামে আত্মীয়কে দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় লাশটি মুক্তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তার বুকের ব্যথার কথা বলে তারা ওই আত্মীয়কে সহযোগিতা করতে সাথে নিয়েছিল।

নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বিগত দেড় বছর আগে নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার চাঁনপুর গ্রামের মুজিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহর সাথে মুক্তার বিয়ে হয়। আব্দুল্লাহ মিষ্টির দোকানের কারিগর। বিয়ের কয়েক মাস যেতে না যেতেই আব্দুল্লাহ ও তার পরিবারের লোকজন মিষ্টির দোকান দেয়ার জন্য মুক্তার বাবার কাছে তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করতে থাকে। এ নিয়ে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়িসহ অন্যান্যরা প্রতিনিয়ত মুক্তাকে মানসিক নির্যাতনসহ মারধর করত। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিগত এক বছরে বেশ কয়েকটি সালিশ হয়েছে। মুক্তার বাবা গোলাপ মিয়া মেয়ের শান্তির কথা চিন্তা করে যৌতুকের টাকা দেয়ার আশ্বাস দিলেও অক্ষমতার জন্য ব্যবস্থা করতে না পারায় দিতে পারছিলেন না। এরই মধ্যে মুক্তার একটি ছেলে শিশুর জন্ম হয়। গোলাপ মিয়া মেয়ের জামাইকে মিষ্টির দোকান দিতে টাকা দিতে না পারলেও তার মেয়ের ও নাতির চিকিৎসা ও সিজারিয়ান অপারেশনের খরচ প্রদানসহ নানাভাবে সহযোগিতা করে আসছিলেন।

তারা আরো জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে মুক্তারশ্বশুরবাড়ির পক্ষ থেকে গোলাপ মিয়াকে মোবাইল ফোনে জানানো হয় যে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে তার মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হচ্ছে। খবর পেয়ে গোলাপ মিয়া সদর হাসপাতালে পৌঁছার আগেই তার লাশ নিয়ে বেড়িয়ে যায়। পরে তিনি বাড়িতে এসে তার মেয়ের লাশ দেখতে পান।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সজল কান্তি দাস বলেন, নিহতের লাশের সুরতহাল করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তার গলা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহতের শ্বশুর-শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা মুক্তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি আরো বালেন, যেহেতু ঘটনাস্থল নরসিংদী উপজেলার রায়পুরায়, তাই নিহতের স্বজনদের রায়পুরা থানায় এজাহার দিতে বলা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement
আগামীকাল ঢাকার নবাবগঞ্জে আজহারীর মাহফিল পতিত ফ্যাসীবাদ দেশকে অস্থিতিশীল করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত : ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম জার্মান নির্বাচনে বিদেশী হস্তক্ষেপের শঙ্কায় ৮৮ শতাংশ ভোটার আশুলিয়ায় জুমার খুতবায় হেদায়েতের যে উপায় বললেন সৌদি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রধান উপদেষ্টা শাওন ও সাবাকে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দিলো ডিবি প্রয়োজনে নতুন আইন করে আ’লীগের নেতাকর্মীদের বিচারের আহ্বান টসে জিতে চিটাগংকে ব্যাটিংয়ে পাঠালো বরিশাল অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বব্যাপী কতটুকু সমর্থন পেল পরাধীনতার কারণেই দেশের মানুষ দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছে : অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ‘ফেব্রুয়ারিতেই জুলাই গণহত্যা মামলার একাধিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত হবে’ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে মালিক-শ্রমিক ঐক্য গড়তে হবে : মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম

সকল