০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১, ১ শাবান ১৪৪৬
`

কৃষি আধুনিকায়নে বাংলামার্ক : অ্যাসেম্বলি লাইনে কম্বাইন হারভেস্টারের যাত্রা শুরু চন্দনাইশে

কম্বাইন হারভেস্টারের যাত্রা শুরু চন্দনাইশে - ছবি : সংগৃহীত

দক্ষিণ চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলা চট্টগ্রাম থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরত্বে থাকা সত্ত্বেও এখানে উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো শিল্প কারখানা গড়ে উঠেনি। এমতাবস্থায় এলাকার জনসাধারণের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং কৃষি খাতকে আধুনিকায়নের লক্ষ্যে বাংলামার্ক লি: চন্দনাইশ উপজেলার পশ্চিম এলাহবাদে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি অত্যাধুনিক এবং স্বয়ংক্রিয় কৃষিযন্ত্র ও যন্ত্রাংশ উৎপাদনকারী কারখানা স্থাপন করেছে। যেখানে সহস্রাধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বাংলামার্ক লি: বিশ্বাস করে তাদের এই প্রকল্পটি আর্থসামাজিক ও কৃষি উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) কারিগরি সহায়তায় বাংলামার্ক ইতোমধ্যে ব্রি মডেলের থ্রেসার, উইডার, উইনোয়ার ও চপার মেশিন তৈরি করেছে। এছাড়া, ব্রি-এসএফএমআরএ প্রকল্পের সহায়তায় প্রতিষ্ঠানটি ব্রি গ্রেইন কালেক্টর আপগ্রেড করেছে, যা চাতাল থেকে শুকানো ধান সংগ্রহ বস্তায় ভরার কাজে ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি ব্রি’র ডিজাইন অনুসরণ করে হাওর অঞ্চলের উপযোগী কম্বাইন হারভেস্টার আপগ্রেডের কাজ শুরু করেছে। এই কারখানায় কম্বাইন হারভেস্টার, রাইস ট্রান্সপ্লান্টার, ট্র্যাক্টরসহ বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি উৎপাদন করা হবে, যা কৃষকদের কাজের সময় কমিয়ে দেবে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়াবে ফলে কৃষিক্ষেত্রে আমদানিনির্ভরতা হ্রাস পাবে এবং দেশীয় প্রযুক্তির বিকাশের পাশাপাশি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্র উৎপাদন ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বাংলামার্কের এই পদক্ষেপ কৃষিখাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের চন্দনাইশে বাংলামার্কের ওয়ার্কশপে ব্রি কৃষিযন্ত্র প্রস্তুত ও বিপণনের উপর একটি লঞ্চিং প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রি’র সাবেক মহাপরিচালক ড. মো: আব্দুল বাকী, এসএফএমআরএ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. এ কে এম সাইফূল ইসলাম, এলএসটিডি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো: মোফাজ্জল হোসেন, পিএসও ড. মো: গোলাম কিবরিয়া ভূঞা।

অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলামার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো: রফিকুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মো: সিরাজুল ইসলাম, ব্রি ও বাংলামার্কের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে স্থানীয়ভাবে কৃষিযন্ত্র উৎপাদন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। বাংলামার্কের এই উদ্যোগ কৃষকদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে উচ্চমানের যন্ত্রপাতি নিশ্চিত করবে, যা কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। এটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং স্থানীয় প্রযুক্তিগত দক্ষতা বৃদ্ধি করবে।

বাংলামার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য কৃষকদের কাছে স্বল্পমূল্যে উন্নত কৃষিযন্ত্র পৌঁছে দেয়া, যাতে তারা কম খরচে আধুনিক প্রযুক্তির সুবিধা নিতে পারেন। বাংলামার্ক দেশীয় কৃষিযন্ত্র উৎপাদনে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে প্রস্তুত।’

কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশীয়ভাবে কৃষিযন্ত্র উৎপাদন বাড়ানো গেলে কৃষকদের জন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি আরো সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হবে। এতে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়বে এবং দেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রক্রিয়া আরো বেগবান হবে।

তারা আরো উল্লেখ করেন, একটি শক্তিশালী কৃষি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে হলে, শুধু ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি নয়, বরং কৃষির সকল পর্যায়ে প্রযুক্তি ব্যবহার করে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এই শক্তিশালী কৃষি ইকোসিস্টেমটি গড়ে তোলা সম্ভব হলে, কৃষি খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে, যা দেশের কৃষকদের এবং কৃষি খাতের উন্নতির জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

বাংলামার্কের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, এটি শুধু কৃষি খাতের জন্যই নয়, দেশের প্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement