২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১, ২৩ রজব ১৪৪৬
`

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো শিবিরের প্রকাশনা উৎসব

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিবিরের প্রকাশনা উৎসবে শিক্ষার্থীদের ভীড় - ছবি : নয়া দিগন্ত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে নববর্ষ প্রকাশনা উৎসব। এ উপলক্ষ্যে কলেজের প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয় তোরণ। শিবিরের এ আয়োজনকে ঘিরে জেলার স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক উদ্দীপনা।

বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত জেলার সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের মূল ভবনের সামনে নিয়াজ মুহম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে চলে এ প্রকাশনা উৎসব।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি হাসান মাহমুদ প্রকাশনা উৎসবের শুভ উদ্বোধন করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আমির অধ্যক্ষ গোলাম ফারুক।

জেলা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি মো: জুলফিকার হায়দার রাফির সঞ্চালনায় প্রকাশনা উৎসবে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা মোবারক হোসেন, নায়েবে আমির কাজী ইয়াকুব আলী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা আমির মাওলানা আবুল বাশার, শিবিরের সাবেক জেলা সভাপতি মো: আতিকুল ইসলাম ভূইয়া। এ সময় বিভিন্ন নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রকাশনা উৎসবে শিক্ষার্থীদের জন্য বই ক্রয়ের পাশাপাশি স্টলে বসে পড়ারও ব্যবস্থা করা হয়। মেলার স্টলগুলো সজ্জিত করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে রঙিন সাজে, যা এক ভিন্ন আবহে রাঙিয়ে তুলে। দিনভর নববর্ষ প্রকাশনা উৎসবে শিক্ষার্থীদের বই কেনার পাশাপাশি স্টলে বসে পড়তে দেখা যায়।
স্টলে কোরআন, হাদিস ও ইসলামী বইসহ ছাত্রশিবির প্রকাশিত বিভিন্ন বই, স্টিকার, লিফলেট, ক্যালেন্ডার ও জুলাই আন্দোলনবিষয়ক ম্যাগাজিন স্থান পায়। রাখা হয় দেশ বিদেশের প্রখ্যাত লেখকদের সাড়া জাগানো বিভিন্ন বইও।

প্রকাশনা উৎসবে আসা রকিবুল বলেন, ‘ছাত্রশিবিরের শিক্ষা, বুদ্ধিভিত্তিক ও ক্যারিয়ারমূলক কার্যক্রম আয়োজন করছে, তা সত্যি প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশের সব ছাত্র সংগঠনগুলোর উচিত এ ধরনের প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করা।’

প্রকাশনা দেখতে আসা আরেক শিক্ষার্থী মাহিম রহমান বলেন, ‘বিগত দিনের ট্যাগিং, ব্লেমিং এবং মাইনাস ফর্মুলার যে রাজনীতি ছিল, তাতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা শিবির সম্পর্কে জানার কোনো সুযোগ পায়নি। ছাত্রসংগঠনগুলো যদি এমন বুদ্ধিভিত্তিক উদ্যোগগুলো গ্রহণ করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট ছাত্র সংগঠন সম্পর্কে জানতে পারবে। যেটা গণতান্ত্রিক চর্চা বুদ্ধিভিত্তিক আন্দোলন ও আগামী দিনের রাজনীতিতে সুফল বয়ে আনবে বলে আমাদের বিশ্বাস।’

আরেক শিক্ষার্থী সঞ্জীব দাস বলেন, ‘এখানে ধর্মীয়সহ ক্যারিয়ার বিষয়ক বই রয়েছে, যা মানসিক চিন্তা শক্তির বিকাশ ঘটাতে সহায়ক। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা অ্যাকাডেমিক পড়াশোনার বাইরে অন্য বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারছে, আমার বেশ ভালো লেগেছে।’

প্রকাশনা উৎসবের আয়োজন নিয়ে জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান মাহমুদ বলেন, ‘দীর্ঘদিন পর তরুণ ছাত্রসমাজের কাছে আমরা সংগঠনের গ্রন্থগুলো তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছি। তরুণ ছাত্র সমাজের কাছে হেরার আলো পৌঁছে দিতে, শিক্ষাঙ্গণগুলোকে জুলাইয়ের স্পিরিটের আলোকে সাজাতে আমাদের আজকের এ আয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘ইসলামী ছাত্রশিবির কেবল একটি ছাত্রসংগঠন নয় এটি একটি ক্রিয়েটিভ ও স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বটে। এই সংগঠন সাধারণ শিক্ষার্থীদের নৈতিক চরিত্র গঠন, মানোন্নয়ন এবং প্রচলিত শিক্ষার সীমানা ছাড়িয়ে জ্ঞানের এক বিস্তৃত জগতের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়।’


আরো সংবাদ



premium cement