তারুণ্যের উৎসব : ফেনী কলেজে দায়সারা আয়োজনে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
- ফেনী অফিস
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২১:০১
‘এসো দেশ বদলাই, এসো পৃথিবী বদলাই’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে ফেনী সরকারি কলেজে তারুণ্য মেলা বুধবার (১৫ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়েছে। তবে আয়োজন দায়সারা হয়েছে এমন অভিযোগ করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তারুণ্যের উৎসবে জুলাই-আগস্ট স্মৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে তারুণ্যের উৎসব উদযাপনের ঘোষণা দেয়া হয়। এর অংশ হিসেবে ফেনী সরকারি কলেজ মাঠে তিনদিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে শুক্রবার পর্যন্ত।
বুধবার দুপুরে কলেজ মাঠে গিয়ে দেখা গেছে, তারুণ্য মেলা উপলক্ষ্যে ১৪টি স্টল বসানো হয়েছে। সকাল ১০টায় কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এনামুল হক খোন্দকার উদ্বোধনের কথা থাকলেও দুপুর দেড়টায় এটি উদ্বোধন হয়। তখনও মঞ্চ তৈরির কাজ চলছিল। পরে তিনি মাঠে দাঁড়িয়েই মেলা উদ্বোধন করেন।
রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান নুরুল আজিম ভূঞার পরিচালনায় এ সময় উপাধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ আইউব, শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক ফরিদ আলম ভূঞা, ইতিহাস বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ফজলে এলাহী, সমাজকর্মের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ফখরুল আমিন পিন্টু, ইতিহাসের সহযোগি অধ্যাপক জেসমিন আক্তার, সমাজকর্মের প্রভাষক রোকনুজ্জামান, বাংলা প্রভাষক মাহবুবুল আলম, হিসাব বিজ্ঞানের প্রভাষক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ সাথে ছিলেন।
মেলায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ, ফেনী সরকারি কলেজ ডিবেটিং সোসাইটি, যুব রেড ক্রিসেন্ট ইউনিট, ছাত্র সংবাদ পাঠক ফোরাম, বাঁধন, ফেনী স্কিল ক্লাব, ইকো রেভ্যুলেশনের স্টল বসানো হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ‘৩৬ জুলাই’ ও ‘ইনকিলাব মঞ্চ’ এর ব্যানার সাঁটানো হলেও স্টলে কাউকে দেখা যায়নি। এছাড়া অপর ৫টি ছিল ফাঁকা।
হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রী বলেন, “পিঠা, মাটির তৈরি জিনিসপত্র নিয়ে তারা স্টলে বসেছিল। বেলা ১২টা পর্যন্ত তারা স্টলের ব্যানার পায়নি। তিন দিনব্যাপী মেলা হওয়ার কথা থাকলেও এটি মূলত একদিনের।”
আবদুল্লাহ আল আবিদ নামে এক ছাত্র জানান, “তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষ্যে মেলা হওয়ার কথা শুনে মনে হয়েছিল খুবই জমজমাট হবে। আসলে এমন কিছুই হয়নি। শিক্ষকরাও আশানুরুপ সহযোগিতা করেননি। আয়োজনে ঘাটতি হওয়ার কারনে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল তুলনামূলক কম।”
ইসলামের ইতিহাসের শিক্ষার্থী হাসানুল বাহার ও জাহেদুল হক জানান, তারা বাহারি রকমের পিঠাপুলি তৈরি করে এনেছেন। সাড়ে ১২টা পর্যন্ত স্টল না পেয়ে হতাশ হন।
কলেজ ডিবেটিং সোসাইটির সেক্রেটারি আবু সুফিয়ান নোমান বলেন, “তারুণ্যের মেলায় তরুণদের প্রত্যাশা বেশি ছিল। শিক্ষার্থীরা কাঙ্খিত মেলা পায়নি। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার দরকার ছিল।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মোহাইমিন তাজিম বলেন, “অন্তবর্তীকালীন সরকার তারুণ্যকে যুক্ত করতে তারুণ্যের মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। কলেজ অধ্যক্ষ তথা কলেজ প্রশাসন মেলায় সকল ডিপার্টমেন্টকে অন্তর্ভূক্ত করতে পারেনি।”
কলেজ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, “সকাল থেকে বারবার সময় পিছিয়েও দুপুর ১টা পর্যন্ত উদ্বোধন হয়নি। শুক্রবার কলেজ ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে। বন্ধের দিন কেন মেলার তারিখ বেছে নিয়েছে সেটিও বোধগম্য নয়।”
কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক আবদুল হালিম মানিক বলেন, “তারুণ্যের মেলার উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সকাল থেকে কলেজ মাঠে অপেক্ষা করেছি। তারুণ্যের উৎসবে তারুণ্যের জোয়ার বয়ে যাওয়ার কথা কর্তৃপক্ষের দায়সারা আয়োজনে নামমাত্র মেলা হচ্ছে। এমন হ-য-ব-র-ল পরিস্থিতিতে আমরা হতাশ।”
উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হারুনুর রশিদ বলেন, তার বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যক্ষের কাছে স্টল বরাদ্দের বিষয়টি জানালেও স্টল দেয়া হয়নি।
জানতে চাইলে কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মোহাম্মদ এনামুল হক খোন্দকার নয়া দিগন্তকে বলেন, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষ ও একাদশের পরীক্ষা থাকায় শিক্ষকরা ব্যস্ত রয়েছে। এ জন্য আয়োজনে বিলম্ব হয়েছে। তবে মেলা আয়োজনে কোনো ঘাটতি ছিল না বলে তার দাবি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা