ফিল্ড ট্যুর নিয়ে আভ্যন্তরীণ কোন্দলে নোবিপ্রবির ফিমস বিভাগের ২ শিক্ষক
- নোবিপ্রবি প্রতিনিধি
- ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১৫:২৩, আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২০:৪২
বিভাগীয় ফিল্ড ট্যুর নিয়ে আভ্যন্তরীণ কোন্দলে জড়িয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) মৎস্য ও সমুদ্র বিজ্ঞান (ফিমস) বিভাগের শিক্ষকরা। গত ৮ জানুয়ারি বিভাগীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেহেদী মাহমুদুল হাসান বরাবর ফিমস বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থীরা এমন অভিযোগ করেন। অভিযোগের এক সপ্তাহেও কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় বিষয়টি জানাজানি হয়।
ট্যুরে যাওয়া এবং না যাওয়ার বিষয়ে নোবিপ্রবি শিক্ষক ড. নাহিদ সুলতানা এবং ড. মো: মফিজুর রহমানের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চরম আকার ধারন করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের জোর করে ট্যুরে যাওয়া এবং না যাওয়ার বিষয়ে পৃথকভাবে আবেদন লিখতে বাধ্য করা হয়। এছাড়াও বিভাগের ফিল্ড ট্যুরে না গেলে ওই কোর্সে শূন্য নম্বর দেয়া এবং শিক্ষার্থীদের অনেকের আর্থিক সমস্যা থাকার পরও তাদের ট্যুরে যেতে বাধ্য করছেন সহকারী অধ্যাপক ড. নাহিদ সুলতানা।
অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়, ফিশারিজ জুওলজি সেশনাল কোর্সের ফিল্ড ট্যুর সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি ও সাজেকসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে পরিদর্শনের জন্য ড. নাহিদ সুলতানা একটি প্রস্তাব করেন। একই সাথে তিনি শর্ত দেন, যদি শিক্ষার্থীরা ট্যুরে না যায় তাহলে তাদের কোর্সকোড ফিসম-১১০৪ এ শূন্য নম্বর দেয়া হবে। শিক্ষার্থীদের আর্থিক সমস্যা থাকার পরও শুধুমাত্র শূন্য পাওয়ার ভীতি থেকে তারা ট্যুরে যাওয়ার জন্য সম্মতি দেয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ট্যুরের ব্যাপারে কোর্সের আরেকজন শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক ড. মো: মফিজুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার পর তিনি শিক্ষার্থী সবার অর্থনৈতিক দিক বিবেচনা করে একদিনের একটি ট্যুর প্রস্তাব করেন এবং যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু ড. নাহিদ সুলতানা তার সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
বিভাগীয় সূত্রে জানা যায়, ফিশারিজ জুওলজি-১১০৪ কোর্সটি ড. নাহিদ সুলতানা এবং ড. মো: মফিজুর রহমান এই দু’জন শিক্ষক পড়াচ্ছেন। ট্যুরে এই দু’জন শিক্ষক যাওয়ার কথা থাকলেও ড. নাহিদ সুলতানা এবং বিভাগের অন্য একজন শিক্ষক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান রিমন গিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একই কোর্সের শিক্ষক ড. মো: মফিজুর রহমান বলেন, ‘সাধারণত আমাদের ফিল্ডট্যুরগুলো একদিনেরই হয়। আমার কাছে মনে হয়েছে যে এই কোর্সের ফিল্ড ট্যুরের জন্য একদিনই যথেষ্ট। চার দিনের যাওয়ারতো যৌক্তিকতা নেই।’
শিক্ষার্থীদের আটকে রেখে আবেদন লেখার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি এ অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করছি। শিক্ষার্থীদের সাথে আমার একাডেমিক সম্পর্ক। তাদেরকে জোর করে আটকে রাখার এখতিয়ার আমার নাই। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীই যথেষ্ট ম্যাচিউর, আমি যদি তাদেরকে জোরপূর্বক কিছু করতে বাধ্য করি, তারা অবশ্যই তা করবে না বা করতে বাধ্য না। এটা আমার বিরুদ্ধে সাজানো একটি চক্রান্ত। আমার বিরুদ্ধে কিছু না পেয়ে এই চক্রান্ত করছে।’
চার দিনের ফিল্ড ট্যুরের বিষয়ে ড. নাহিদ সুলতানা বলেন, এ ফিল্ড ট্যুর সকল শিক্ষার্থীদের সম্মতিতেই হয়েছে। এ ব্যাপারে আমি কোনো জোর করিনি। আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ওবিই) কারিকুলামের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরাই বলেছে সাজেক এবং খাগড়াছড়ি যাবে। সুতরাং এখানে আমি কাউকেই জোর করিনি। জুলোজি কোর্সের প্রাকটিক্যালের জন্য আমরা কক্সবাজার এসেছি। এরপর ওবিই কারিকুলামের অংশ হিসেবে সাজেক এবং খাগড়াছড়ি যাবো। যে কারণে ৩/৪ দিন লাগছে এ ট্যুর।
ফিমস বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মেহেদী মাহমুদুল হাসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনিসুজ্জামান রিমন একাডেমিক কাজে নেই, শুধু ট্যুরে যাওয়ার জন্য যাওয়া। শিক্ষার্থীদের দু’টি আবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের বিভাগে আলোচনা হচ্ছে। আমি ওভারঅল বিষয়টি দেখতেছি।
এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা শিগগিরই এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিব।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা