০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১, ৮ রজব ১৪৪৬
`

বাবার জীবন বাঁচাতে ৬০ শতাংশ লিভার দিলেন মেয়ে

বাবার জীবন বাঁচাতে ৬০ শতাংশ লিভার দিলেন মেয়ে - নয়া দিগন্ত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে বাবা মাওলানা মো: নুরুল ইসলামকে (৫৪) বাঁচাতে নিজের লিভারের ৬০ শতাংশ দিয়েছেন তার মেয়ে উম্মে আয়মনা।

বাবা-মেয়ের এ বিরল ঘটনাটি ঘটে উপজেলার ধামতী ইউনিয়নের দুয়ারীয়া গ্রামে।

মাওলানা মো: নুরুল ইসলামের পাঁচ সদস্যের পরিবারের মধ্যে রয়েছে স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে। এর মধ্যে স্ত্রী জুলেখা বেগম গৃহিনী, ছেলে মো: আসাদুল্লাহ গলিভ ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদরাসায় নবম শ্রেণীতে পড়েন। তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে উম্মে হাবিবা (২৪) ও উম্মে আয়মনার (২২) বিয়ে হয়ে গেছে। ছোট মেয়ে উম্মে হানি (১৮) কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে অনার্স পড়েন।

মেয়ে উম্মে আয়মনা ঢাকার ডেমরার সারুলিয়া আসসিফা ফিজিও থেরাপি সেন্টারে মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত আছেন। একই সেন্টারে তার স্বামী মো: মাকসুদুর রহমান ইমনও মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট হিসেবে কর্মরত।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় মাওলানা মো: নুরুল ইসলামের প্রথমে এইচবিএস ধরা পড়ে। পরে লিভার সিরোসিস এবং সম্পূর্ণ লিভার নষ্ট হয়ে গেলে তার জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে। এ সময় বাবার পাশে দাঁড়ান উম্মে আয়মনা।

চিকিৎসার বিষয়ে জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসায় গয়না, জমি বিক্রি করে এবং ধার-দেনা করে এখন সর্বস্বান্ত হয়ে গেছি। আমার চিকিৎসায় প্রায় ৪০ লাখ টাকা খরচ হয়ে গেছে।’

তিনি গত বছরের ২৯ জুলাই ভারতের দিল্লি ইনস্টিটিউট অফ লিবার অ্যান্ড বিলিয়ারি সাইন্স হাসপাতালে ডা. বিলিয়েন্দ্র পামেজার তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন। গত ১১ নভেম্বর উম্মে আয়মনার লিভারের ৬০ শতাংশ কেটে নিয়ে বাবার শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়। অস্ত্রোপচার সফল হলে গত ১৩ ডিসেম্বর দেশে ফিরে আসেন নুরুল ইসলাম।

উম্মে আয়মনা বলেন, ‘সন্তান হিসেবে বাবার জীবন বাঁচাতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। এক্ষেত্রে আমার স্বামীর অনুপ্রেরণা আমাকে সাহস জুগিয়েছে। আমি এখন শারীরিক ও মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ আছি।’

তার স্বামী মো: মাকসুদুর রহমান ইমন বলেন, ‘আমার শ্বশুর আমার কাছে পিতৃতুল্য। তাই বাবার জীবন বাঁচাতে স্ত্রীর ইচ্ছাকে স্বাগত জানিয়ে নিজেও গর্ববোধ করছি।’


আরো সংবাদ



premium cement