দুই ডাক্তার নিয়ে ১০০ শয্যার হাসপাতাল চলছে ৫০ শয্যায়
- রফিক আহমদ (চকরিয়া) কক্সবাজার
- ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬:১১
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০০ শয্যার হাসপাতাল চলছে ৫০ শয্যা ও দু’জন ডাক্তার নিয়ে। প্রশাসনিক অনুমোদন ও পর্যাপ্ত জনবল সঙ্কটের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এ হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা। দু’জন মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চলছে ছয় লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা। ফলে এলাকার গরীব-অসহায় রোগীরা সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সরকার ২০২১ সালে এলাকার সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসার লক্ষ্যে চকরিয়ায় ১০০ শয্যার হাসপাতালের অত্যাধুনিক চতুর্থ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণ করেন। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘ তিন বছর পার হওয়ার পরেও প্রশাসনিক অনুমোদন না হওয়ায় ১০০ শয্যা চালু করা হয়নি। যার ফলে এলাকার সাধারণ জনগণ সরকারি চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সদ্য যোগদানকারী স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন দৈনিক নয়া দিগন্তকে জানান, ১০ জন মেডিক্যাল অফিসারের স্থানে দু’জন মেডিক্যাল অফিসার রয়েছে। তা দিয়েই প্রতিদিন জরুরি বিভাগ ও বহির্বিভাগে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা প্রায় ১১ শ’ থেকে ১২ শ’ রোগীকে চিকিৎসা সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে ইউনিয়ন মেডিক্যাল সাব-সেন্টারে কর্মরত ডাক্তারদেরকে নিয়ে এসে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যেতে হচ্ছে। এতে তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘সেবার দরজা খোলা রয়েছে, তবে নেই ডাক্তার।’
কর্তৃপক্ষ জানান, পাশের পার্বত্য উপজেলা লামা, আলীকদম ও উপকূলীয় কুতুবদিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া উপজেলার রোগীরা যোগাযোগ সুবিধার কারণে এ হাসপাতালে প্রতিনিয়ত চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। জরুরি রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়ার জন্য সরকারিভাবে দু’টি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে, যার মধ্যে আবার পর্যাপ্ত তেলের বরাদ্দ না থাকায় একটি গাড়ি বন্ধ হয়ে পড়ে থাকে। এ অ্যাম্বুলেন্সটি অনেক দিন ধরে বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে পড়েছে। সচল অ্যাম্বুলেন্সটি এক বৃদ্ধ ও অসুস্থ চালক দীর্ঘদিন ধরে চালিয়ে আসছেন বলে জানা গেছে।
তিনি আরো বলেন, গত জুলাইয়ের গণবিপ্লবের পরে কর্মরত ১১ জন মেডিক্যাল অফিসার মধ্যে পাঁচজন উচ্চতর প্রশিক্ষণে চলে গেছেন। বাকি ছয়জন মেডিক্যাল অফিসার বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন। ফলে এ শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে হেলথ অ্যান্ড জেন্ডার সাপোর্ট (এইচজিএসপি) প্রকল্পের আওতায় ৫৮ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এ হাসপাতালে বিভিন্ন দফতরে সেবা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। গত জুলাই মাসে এ প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সঙ্কট আরো প্রকটাকার ধারণ করে।
প্রকল্পের আওতায় একজন টেকনোলজিস্ট দিয়ে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা মূল্যের আল্ট্রাসনোগ্রাফির মেশিনটির কাজ চালু ছিল। প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় টেকনোলজিস্টের অভাবে তাও বন্ধ হয়ে পড়ে।
তাছাড়া, এ হাসপাতালে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য স্বল্প ব্যয়ে ডেলিভারি সেন্টার চালু রয়েছে। তাতে গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার মাকসুদা বেগমকে সরকারিভাবে হাসপাতালে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
তবে, তিনি ঢাকা মেডিক্যালে অফিস করেন বলে জানা গেছে। এ হাসপাতালে কর্মরত হিসেবে তার বেতন ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে। তার অনুপস্থিতিতে চর্ম ও যৌন রোগের চিকিৎসক ডাক্তার শামীমা সুলতানাকে দিয়ে নরমাল ও সিজারিয়ান ডেলিভারি করানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। প্রতি মাসে এ হাসপাতালে ১০ থেকে ১২জন গর্ভবতী মহিলাকে স্বল্প ব্যয়ে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করানো হয়।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা