বান্দরবানে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭ বসতঘরে আগুন : ডিসি-এসপির পরিদর্শন
- মিনারুল হক, বান্দরবান
- ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:২৮
বান্দরবানের লামায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৭টি পরিবারের বসতঘর দুর্বৃত্তরা পুড়িয়ে দেয়ার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন ও পুলিশ সুপার (এসপি) মো: শহীদুল্লাহ কাওছার।
তবে ওই জায়গাটি পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজির আহমেদের দখলে ছিল। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সেখান থেকে উচ্ছেদ করা লোকজন পুনরায় সেখানে বসতি স্থাপন করেছিলেন।
বৃহস্পতিবারে (২৬ ডিসেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গা ঝিড়ি এলাকায় বেতছড়া নতুন পাড়ায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ১৯টি পরিবারের মধ্যে ১৭টি পরিবারেরই বসতঘর আগুনে পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইদ্রিস জানান, ‘কারা আগুন দিয়েছে এটি এখনো জানা যায়নি। তবে জায়গা-জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে সেখানে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।’
তবে পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের লোকজন এ ঘটনায় জড়িত বলে দাবি ক্ষতিগ্রস্তদের।
জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন জানিয়েছেন, ‘এ ঘটনায় যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের রক্ষা নেই। এ বিষয়ে প্রশাসন গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। যারা জড়িত তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা দেয়া হয়েছে।’
পুলিশ সুপার মো: শহীদুল্লাহ কাওছার জানান, ‘ইতোমধ্যে এই ঘটনায় মামলা হয়েছে ও ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে চারজনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে।’
এদিকে, ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির নির্দেশ দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সু প্রদীপ চাকমা। এ ঘটনায় তিনি একটি বিবৃতিও দিয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সূত্রে জানা গেছে, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদ তার স্ত্রীর নামে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের টঙ্গা ঝিড়ি এলাকায় প্রায় ১০০ একর জায়গা দখল করেন। এসব জায়গা স্থানীয় পাহাড়ি ও বাঙালিদের ছিল। এছাড়া সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নে আরো ৫০ একর জায়গা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে দখল করেন বেনজির আহমেদ। ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পর সুয়ালক এলাকায় ২৫ একর জায়গা প্রশাসন দখলে নিয়ে বাগানবাড়ি সিলগালা করে দেয়। তবে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের জায়গাগুলো ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ক্ষতিগ্রস্ত ১৯টি পরিবার পুনরায় দখলে নিয়ে সেখানে একটি নতুন বেতছড়া পাড়া তৈরি করে।