শ্রমিকদের সম্মান দিতে পারলে দেশের চেহারা বদলে যাবে : অধ্যাপক মজিবুর রহমান
- লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০:২৮
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘শ্রমিকদের সম্মান দিতে পারলে দেশের চেহারা বদলে যাবে। শ্রমিকরা সমাজ সভ্যতার প্রতিক।’
আজ বুধবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত শহরের লিল্লাহ মসজিদ মাঠে শ্রমিক গণজমায়াতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘৭১ সালে মানুষ তিনটি জিনিসের স্বাধীনতা চেয়েছিল। কথা বলার স্বাধীনতা, ভোটের স্বাধীনতা ও ভাতের নিশ্চয়তা। কিন্তু পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ও খুনি হাসিনা মানুষের মৌলিক এই তিন অধিকার কেঁড়ে নিয়েছিল। মানুষের অধিকার কেঁড়ে নেয়ায় মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। তখন তারা হাজার হাজার মানুষকে গুম-খুন ও হত্যা করেছে। শেষে ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে। যে স্বৈরাচার একবার পালিয়ে গেছে সে আর বাংলাদেশে ফিরে আসতে পারবে না।
এখন বাংলাদেশে শান্তি ফেরাতে হলে আল্লাহর আইন চালু করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একমাত্র আল্লার আইন মেনে চললেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে জামায়াতে ইসলামী আল্লার আইন মেনে চলে, জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দিলে তারা সংসদে আল্লার আইন বাস্তবায়ন করবে।’
আল্লার আইন বাস্তবায়নে আগামী নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শ্রমিকদের অবদান কম নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শ্রমিকরাও ওই আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ায় বিপ্লব তরান্বিত হয়েছে। আমাদের দেশে বিগত স্বৈরাচার সরকারের সময় শ্রমিকদের শ্রমের মূল্যায়ল করা হয়নি। এতে করে শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছ। শ্রমিকদের যদি আমরা সঠিক মর্যাদা দিতে পারি তাহলে দেশের চেহেরা পরিবর্তন হয়ে যাবে।’
তিনি শ্রমিকদের যথাযথ সম্মান দেয়ার জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরো বলেন, ‘বিগত সাড়ে পনেরো বছর আওয়ামী লীগ ভোট ডাকাতি, টাকা পাচার, গুম-খুন ও উন্নয়নের নামে লুটপাটের ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। দেশের মানুষ আওয়ামী ফ্যাসিস্টকে যেমনি চায় না, তেমনি নতুন কেউ ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ পরিচালনায় আসুক এটাও চায় না। দেশের মানুষ সত্যিকারের একটি পরিবর্তন চায়। যেখানে মানুষ আত্মমর্যাদা ও নিরাপত্তা নিয়ে বসবাস করতে পারবে। জামায়াতে ইসলামী এ ধরনের একটি দেশ গড়ার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সবক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি দেশবাসীকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াতে ইসলামীর পাশে থাকার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরে সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘স্বৈরাচার পালিয়ে গেছে, কিন্তু দেশে এখনো চাঁদাবাজি চলছে। অবিলম্বে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি করে তাদের চরিত্র শিয়াল-কুকুরে মতো। যারা শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছেন। তারা চাঁদাবাজি ছেড়ে দেন। না হলে চাঁদাবাজদের হাত ভেঙে দেয়া হবে।’
জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মমিনুল হক ও শহর এডভোকেট মঞ্জুরুল আলম মিরনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রধান উপদেষ্টা এস ইউ এম রুহুল আমীন ভূঁইয়া।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন জেলা উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নাজির আহমদ, এ আর হাফিজ উল্লাহ, মাওলানা নাছির উদ্দীন মাহমুদ, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির মুরাদ, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আবুল খায়ের, জেলা পরিবহন ইউনিয়নের সভাপতি জাকির হোসেন সবুজ, হোটেল শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন সভাপতি সালাহউদ্দিন নাছির, সদর উপজেলা সভাপতি, আমীর হোসেন মেম্বার, চন্দ্রগঞ্জ সভাপতি ডা. কাউসার হামিদ, রামগতি উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক একরামুল হক, রামগঞ্জ উপজেলা সভাপতি সাইফুল ইসলাম এবং রায়পুর উপজেলা সভাপতি মহি উদ্দিন প্রমুখ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা