২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে ২ পারের রোহিঙ্গাদের

- ছবি : সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইনে প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গাদেরও আবাসস্থল। মংডু আরাকান আর্মির দখলে চলে যাওয়ায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে দুই পারের রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে। তাদের সাথে আরাকান আর্মির বিরোধ আছে। রাখাইনের পাঁচ লাখ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেয়া হতে পারে। এমন আশঙ্কা থেকে কক্সবাজার বান্দরবান সীমান্তে টহল জোরদার করেছে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

মিয়ানমারের শান্তিতে নোবেল পুরস্কার জয়ী নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সামরিক বাহিনী। তারপর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা চলছে। সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভ রক্তপাতের মধ্য দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার পর জান্তা বিরোধীরা অস্ত্র তুলে নিয়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে।

কক্সবাজারের টেকনাফ লাগোয়া মংডু শহর আগেই দখলে নেয় বিদ্রোহীগোষ্ঠী। বাংলাদেশের সাথে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরও বেশিভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের শান শহরও পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে আরাকান আর্মি।

জানা গেছে, এই শান শহরেই মিয়ানমার জান্তা সরকারের আঞ্চলিক সেনা সদর দফতর ছিল। এই নিয়ে দ্বিতীয় কোনো আঞ্চলিক সামরিক কমান্ডার নিয়ন্ত্রণ হারাল ক্ষমতাসীন জান্তা। এর আগে, গত আগস্টে চিন সীমান্তবর্তী শান প্রদেশের রাজধানী লাশিওতে অবস্থিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক কমান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল বিদ্রোহীরা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে রাখাইনে জান্তা বাহিনীর ঘাঁটি নিশানা করে হামলা শুরু করেছিল আরাকান আর্মি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা তরুণ বলেন, ‘আমি আমার বন্ধুদের সাথে যুদ্ধ করতে মিয়ানমারে গিয়েছিলাম। জান্তা বাহিনী আমাদের অস্ত্র দিয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছিল। আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে চলা জান্তা বাহিনীর যুদ্ধ থেকে কৌশলে রাতের আধারে অন্যদের সাথে আমি পালিয়ে এসেছি।’

তিনি বলেন, ‘রাখাইন প্রদেশের ১৭টি শহরের মধ্যে ১২টিরই দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। জান্তা সরকারের সাথে কাজ করা অনেকেই আবার গোপনে আরাকান আর্মির সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে তথ্য ফাঁস করছেন। এদিকে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যকার ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত আছে। এর আগে, মংডু শহর দখলের সাথে সাথেই সেই ২৭০ কিলোমিটার পুরোটাই দখলে চলে গেছে আরাকান আর্মির।’

ফিরে আসা আরেক রোহিঙ্গা কলিম উল্লাহ জানান, ‘বর্তমানে রাখাইন প্রদেশের সিত্তে শহরটি জান্তার দখলে রয়েছে। তবে প্রদেশের বেশিভাগের ওপরই জান্তার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। এদিকে রাখাইন প্রদেশে এখনো প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা আছে বলে তিনি দাবি করেন। ওখানকার রোহিঙ্গারা এ কারণেই আপাতত জান্তাকে সমর্থন করছে।

জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে অনেক রোহিঙ্গা দেশে ফিরে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছে। আবার আরাকান আর্মিও নাফ নদীর তীরে রোহিঙ্গাদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রোহিঙ্গারা। গত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ৮০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে দাবি করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস নিজে।

এই পরিস্থিতিতে টেকনাফ প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সীমান্তে বাংলাদেশ উপকূলরক্ষী বাহিনী এবং বিজিবির নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

উখিয়া ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সোলতান আহমেদ বলেন, ‘আমরা নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা পেলেই স্বদেশে ফিরবো।’

আরাকান আর্মির শক্তিশালী অবস্থানের বিষয়ে রোহিঙ্গা নেতা ডাক্তার জুবায়ের বলেন, ‘মিয়ানমারের জান্তা সরকার রোহিঙ্গাদের ওপর যে গণহত্যা চালিয়েছিল আমরা তা ভুলিনি। গণহত্যার সঠিক ন্যায়বিচার ও রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার ফিরিয়ে দিলে আমরা যেকোনো সময় আমাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে প্রস্তুত রয়েছি।’

তিনি আরো বলেন, ‘অধিকার ও নিরাপত্তা এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা হলে তবেই ফিরবো দেশে।’


আরো সংবাদ



premium cement
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব হলেন সরওয়ার আলম প্রধান উপদেষ্টার সাথে বিশ্বব্যাংকের আবাসিক পরিচালকের বিদায়ী সাক্ষাৎ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় তরুণদের প্রস্তুতি নিতে হবে : পরিবেশ উপদেষ্টা চুয়াডাঙ্গায় বিজিবির অভিযানে ৪টি স্বর্ণের বার উদ্ধার স্বামীসহ সাবেক এমপি হেনরীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা সিলেটে ৫ হাজার কোটি টাকার দুই ‘মেগা’ প্রকল্প বাতিল পৌনে চার ঘণ্টায় ঢাকা থেকে ট্রেন যাবে খুলনায়, কাল উদ্বোধন দেশে ফ্যাসিবাদী ষড়যন্ত্র এখনো চলছে : বিএনপি মহাসচিব চৌদ্দগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধাকে নাজেহাল করার ঘটনায় জামায়াতের নিন্দা শ্রম সংস্কার কমিশনের কাছে প্রস্তাবনা পেশ করেছে পোশাক শ্রমিক নেতারা স্বামীর পরকীয়ার জেরে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যা

সকল