লাখো পর্যটকে মুখরিত পাথুরে গাথা ইনানী সমুদ্র সৈকত
- হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া (কক্সবাজার)
- ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:৩২
বরাবরই পর্যটকদের পছন্দের স্থান কক্সবাজার। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে পাথুরে গাথা উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকত। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের পাশে ইনানী সী-বীচ। বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শেষ। শীতের এ সময়ে ভ্রমণের জন্যে ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণা বাড়ে। এখন লাখো পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার।
হোটেল-মোটেল, কীটকট, শামুক, ঝিনুক, ডাব ও অন্য পণ্য সাজিয়ে যারা ব্যবসা করছেন তারা মহাখুশি। পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিন ভোর থেকে রকমারি পণ্য সাজিয়ে পর্যটকদের জন্য উৎসব মুখর পরিবেশ তৈরি হয়। পর্যটকদের কেনা-কাটার ওপর নির্ভর করে শত শত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের পরিবারের সংসার চলে ইনানী সী-বীচকে কেন্দ্র করে।
পটিয়া চট্টগ্রাম থেকে আসা শাহ হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারে এলেই আমি চলে আসি উখিয়ার ইনানী সমুদ্র সৈকতে। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ পাথুরে গাথা সী-বীচের ওপর সাগরের জলরাশির মহা-মিতালী, মেরিন ড্রাইভ সড়কের একপাশে সমুদ্র আর অন্যপাশে বিশাল আকৃতির পাহাড় আমাকে সত্যি আকর্ষণ করে।’
রংপুর থেকে আসা সানজিদা জানান, ‘কক্সবাজার এসেছি তিনদিন হয়। ইনানী সী বীচে আজ সকালে এসেছি।’
ইনানী সী-বীচে তিনি প্রথম এসেছেন। তিনি তার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘বইয়ের পাতায় যা পড়েছি সত্যিই ইনানী পাথুরে বীচ তার চাইতে অধিক সুন্দর।’
সৌদি আরব থেকে এসেছেন মোহাম্মদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছরই আমি কক্সবাজার আসি। এখানে এসে নিরিবিলি উখিয়ার পাথুরে গাথা ইনানী সমুদ্র সৈকত আমার খুব ভালো লাগে। এখানকার সমুদ্রের হিমেল বাতাস, একটু একটু শীতে হাঁটতে চমৎকার লাগে।’
ইনানী এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশর বলেন, ‘দেশী-বিদেশী পর্যটকে মুখর উখিয়ার ইনানী। এখানকার পাঁচ তারকা মানের হোটেল, কটেজ, রিসোর্টগুলো পর্যটকে মুখরিত। এতে এখানকার অর্থনীতিতেও চাঙ্গা ভাব বিরাজ করছে।’
ইনানীর স্থানীয় বাসিন্দা আবুল বশর বলেন, ‘প্রতি বছর শীতকালে পর্যটন মৌসুমে কক্সবাজার থাকে পর্যটকদের ভিড়। শীতে কক্সবাজার ছাড়িয়ে উখিয়ার পাথুরে রানী খ্যাত ইনানী সমুদ্র সৈকতে এসে সাগরের নীল জলরাশিতে উচ্ছ্বাস আর আনন্দে মেতে উঠেন ভ্রমণ পিপাসুরা।’
উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) কর্মী হুমায়রা বলেন, ‘১৬ ডিসেম্বর ছুটিতে সকালে ইনানী হয়ে কক্সবাজার এসেছি। কক্সবাজারের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ সমুদ্র সৈকত। সকাল-বিকেল সমুদ্রতীরে বেড়াত আর সৈকতে সূর্যাস্ত আর সূর্য ডুবার দৃশ্য দেখার মজাই আলাদা। এছাড়া সাগরের নুনা পানিতে গোসল যেন দূর করে দেয় কর্মক্লান্তি। আর এটি ইনানীর মতো কোলাহলমুক্ত কোনো জায়গায় হলে তো কথাই নেই।’
কক্সবাজার সী প্যালেসের বিপরীতে কলাতলি সৈকত পার্ক বনকুঞ্জ রিসোর্ট-এর পরিচালক মোহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘কক্সবাজারে যেভাবে দেশী-বিদেশী পর্যটক আসা শুরু করেছে তাতে এখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা মনে করছেন বাকি পর্যটন মৌসুমটাও তাদের বেশ ভালো যাবে। সব হোটেল এখন পর্যটকে ভরপুর। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের জন্য বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যটকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়াসহ নানা হয়রানি বন্ধে তারা দিন রাত কাজ করে যাচ্ছে। স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শেষে এবং বিজয় দিবসের ছুটিতে কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটেছে। পর্যটকদের ভিড় ভাড়ার সাথে তাল মিলিয়ে হোটেল-মোটেলের ভাড়াও বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে কয়েকগুণ। তবুও পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলের প্রায় সব রুমই বুকিং হয়ে গেছে।’