প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে লক্ষ্মীপুরে ছাত্রহত্যায় অংশ নেয়া আ‘লীগ নেতা
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৬:৩১
লক্ষ্মীপুরে ছাত্রহত্যায় অংশ নেয়া আওয়ামী লীগ নেতা আশরাফ উদ্দিন আরজু ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও এখন প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শুধু তাই নয়, গুলি বর্ষণ বিষয়ে কেউ মুখ খুললে তাকে দেখে নেয়ারও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন তিনি।
দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
জানা যায়, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী ও আন্দোলনকারীদের ওপর হামলাকারী লক্ষ্মীপুর পৌর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন আরজুকে এখনো গ্রেফতার করা হয়নি। অথচ যুবলীগ ক্যাডার হিসেবে পরিচিত এই নেতা একাধিক মামলার আসামি। এছাড়া তার ভয়েই গত জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত অজানা আতঙ্কে ছিল ছাত্রজনতা।
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর শহরের মাদাম ব্রিজ ও বাজারের তমিজ মার্কেট এলাকায় গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ ও হামলা চালান আরজু। সাবেক যুবলীগ নেতা, স্থানীয় চেয়ারম্যান এ কে এম সালাউদ্দিন টিপুর নেতৃত্বে এই হামলায় অংশ নেন তিনি।
এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান চার শিক্ষার্থী এবং আহত হন কয়েক শ‘। ওই হত্যাকাণ্ডে নিহত আফনানের মা এবং নিহত সাব্বিরের বাবা আমির হোসেন লক্ষ্মীপুর সদর থানায় পৃথক দু’টি হত্যা মামলা করেন। কিন্তু সন্ত্রাসী আশরাফ উদ্দিন আরজু প্রকাশ্যে চলাফেরা করলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অজানা কারণে তাকে গ্রেফতার করছে না।
পুলিশ জানায়, ১৪ আগস্ট রাতে আফনানের হত্যাকাণ্ডে তার মা নাছিমা আক্তার ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৫০০ থেকে ৭০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। একই দিন রাতে সাব্বির হত্যা মামলায় তার বাবা আমির হোসেন ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাত ২০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। দু’টি মামলাতেই চেয়ারম্যান টিপুকে প্রধান আসামি করা হয়।
স্থানীয়রা জানিয়েছে, মাদাম ব্রিজ এলাকায় সংঘর্ষের পূর্ব মুহূর্তে আরজুসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনবিরোধী নানা স্লোগান দেয়। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। সেখানে প্রকাশ্যে অস্ত্র হাতে দেখা যায় আওয়ামী ক্যাডার এই আরজুকে।
৪ আগস্টের ওই হামলায় আহত এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ‘ওইদিন ছাত্রদের ওপর হামলায় সন্ত্রাসী আরজু ছিল। আমার ছেলেও তাদের হামলায় আহত হয়েছে। কিন্তু সে এখনো প্রকাশ্যে ঘুরছে। আমি তার উচিত বিচার চাই।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরেকজন বলেন, ‘দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে শহরের বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, পুলিশের ওপর হামলা থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরণের অপরাধেই আরজু যুক্ত ছিল। তবে ৫ আগস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে কয়েক দিন সে গা ঢাকা দিলেও বর্তমানে বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে।’
লক্ষ্মীপুরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মো: আরমান হোসাইন বলেন, ৪ আগস্ট লক্ষ্মীপুরে যারা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাদের ভিডিও-ছবি প্রশাসনকে দিয়েছি। তাদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা সড়ক অবরোধও করেছি। কিন্তু এখনো আরজুদের মতো আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের অনেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে, এটা ২৪-এর চেতনার জন্য হুমকি। প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি তাদের গ্রেফতারের জন্য।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আব্দুল মোন্নাফ বলেন, হামলায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা