লক্ষ্মীপুর একই ফিলিং স্টেশনে ফের বাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণ, নিহত ১
- লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
- ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৪৫
লক্ষ্মীপুর পৌর শহরে ফিলিং স্টেশনে বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আবুল কালাম (২২) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন আরো তিনজন।
বুধবার ভোররাত ৪টার দিকে পৌর শহরের মুক্তিগঞ্জ এলাকায় গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত আবুল কালাম পৌরসভার সাহাপুর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে। তিনি ফিলিং স্টেশনে পাশে একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতেন।
আহতরা হলেন আবুল হোসেন (৫৫), নাইম উদ্দিন(২৪) ও হোসেন আহমেদ (৩৮)। তাদের ঢাকা ও নোয়াখালীর বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তাদের একজন ওই ফিলিং স্টেশনের শ্রমিক, অপর দুজন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বলে জানিয়েছেন ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার মো: আল আমিন।
ফিলিং স্টেশন, ফায়ার সার্ভিস ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ভোর রাত ৪টার দিকে গ্রীনলীফ ফিলিং স্টেশনে আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস গ্যাস নিতে আসে। ওই সময় বাসের সিলিন্ডারে গ্যাস ঢোকানোর সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ হয়। এতে চারদিকে ধোঁয়াচ্ছন্ন হয়ে গেলে স্টেশনে থাকা সিএনজি-অটোরিকশা
চালকেরা ছোটাছুটি শুরু করে। ওই সময় ঘটনাস্থলে মারা যান ওয়ার্কশপ-শ্রমিক আবুল কালাম। আহত হন তিনজন।
আরো জানা গেছে, ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের লাশ উদ্ধার করে সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। আহতদের উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে গুরুতর আহত তিনজনকে ঢাকা ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নাইম ও আবুল হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস নিচ্ছিল তারা। হঠাৎ আল মদিনা পরিবহন নামে একটি বাস ফিলিং স্টেশনে এসে লাইনে না দাঁড়িয়ে সরাসরি গ্যাস নিতে চলে যায়। ওই সময় পাম্পের অপারেটর বাসের গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে গ্যাস সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার বলেন, ‘গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এর মধ্যে একজন মারা যায়। তিনজন আহত হয়। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি মেয়াদোত্তীর্ণ ও নিম্নমানের হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।’
সদর হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আহতদের মধ্যে দুজনের পা ও একজনের হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ ও নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’
জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার বলেন, ‘সড়কে যেন ফিটনেসবিহীন কোনো পরিবহন চলাচল করতে না পারে, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাসের গ্যাস সিলিন্ডারটি নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।’
গত ১৪ অক্টোবর রাতে একই ফিলিং স্টেশনে মেঘনা পরিবহন নামে একটি বাসে গ্যাস নেয়ার সময় সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে সদর উপজেলার চরমনসার বটু মিয়ার ছেলে সুমন হোসেন, বাঞ্ছানগর এলাকার সুজা মিয়ার ছেলে মো: ইউসুফ মিয়া ও হৃদয় হোসেনসহ তিনজনের মৃত্যু হয়, আহত হয় ২০ জন।