০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ অগ্রহায়ন ১৪৩১,
`

সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক পার্বত্য চুক্তির পুনমূল্যায়ন ও সন্তু লারমার পদত্যাগ দাবি

- ছবি : নয়া দিগন্ত

পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধনের দাবি জানিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। একই সাথে পাহাড়ের উপজাতি (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী) বাঙালির মধ্যে বৈষম্য দূর করে সমতা আনয়ন পূর্বক চুক্তির পুনমূল্যায়ন করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

সোমবার দুপুরে সংগঠনটির রাঙ্গামাটি জেলা কমিটি নেতৃবৃন্দ রাঙ্গামাটিতে এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এই দাবি জানান।

পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের রাঙ্গামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহমেদ।

এ সময় রাঙ্গামাটি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ সোলায়মান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিক, রাঙ্গামাটি পৌর কমিটির সভাপতি ডা: মুহাম্মদ ইব্রাহিম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম যুব পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুর হোসেনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ বলেন, দুই দশকেরও বেশি সময় পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎকালীন শান্তিবাহিনী রক্তের হোলি খেলায় মেতেছিল।

১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর সরকার ও জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে পার্বত্য চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে অনাকাঙ্ক্ষিত এসব ঘটনার অবসান ঘটে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) ওই পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছর পূর্তি হচ্ছে। চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর কেটে গেছে ২৭ বছর। একের পর এক চুক্তির বিভিন্ন শর্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে পাহাড়জুড়ে। সরকারের দাবি, চুক্তির অধিকাংশ ধারাই এরই মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। অবশিষ্ট কিছু ধারা বাস্তবায়নাধীন। চুক্তির পর পার্বত্য অঞ্চলে একে একে কয়েকটি সশস্ত্র সংগঠন পার্বত্য অঞ্চলে চাঁদাবাজিসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে।

চুক্তি সম্পাদনের সময় বাঙালি জনগোষ্ঠীর জাতিসত্তাকে অস্বীকার করে তাদের ‘অ-উপজাতি’ আখ্যা দিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করেছে। শুধু তাই নয়, চুক্তির ক খণ্ডের ১ নম্বর ধারায় উভয়পক্ষ পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলকে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এর মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রায় অর্ধেক জনগোষ্ঠী বাঙালির অস্তিত্বকে অস্বীকার করা হয়েছে। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধায় পার্বত্য উপজাতিদের নানা অগ্রাধিকার শর্তযুক্ত করে বাঙালিদের প্রতি বৈষম্য করা হয়েছে।

ভূমি ব্যবস্থাপনায় প্রথাগত রীতি অনুসরণের বিধান যুক্ত করায় সেখানে বসবাসরত বাঙালিরা ভূমিহীন ও বাস্তুচ্যুত হবার আশঙ্কায় দিন গুনছে। ইতোমধ্যে চুক্তির বিভিন্ন ধারা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট করা হয়েছে। এই রিটের রায়ে উচ্চ আদালত চুক্তির অনেকগুলো ধারা অসাংবিধানিক বলে বাতিল করে দিয়েছে। যদিও উচ্চ আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ দেয়া হয়েছে। মামলাটি আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে।

চুক্তির আওতায় গঠিত ভূমি কমিশন আইনের সর্বশেষ সংশোধনীকে বিশেষজ্ঞরা রাষ্ট্রীয় অখণ্ডতা, কর্তৃত্ব ও এখতিয়ারবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন। এতে প্রমাণিত হয়, শান্তিচুক্তির কিছু অংশের সাথে বাংলাদেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের সাংঘর্ষিক অবস্থান রয়েছে।

মানবিক সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষের তৈরি কোনো বিধান একবারে নির্ভুল বা চূড়ান্ত হয় না। সময় ও প্রয়োজনের নিরীখে তার পুনর্মূল্যায়ন, সংশোধন ও পরিবর্তন হয়।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংবিধান সময় ও প্রয়োজনের দাবিতে সংশোধিত ও পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানও ১৬ বার সংশোধিত হয়েছে। কোনো চুক্তি বা আইন তো আর সংবিধানের ঊর্ধ্বে স্থান পেতে পারে না। এই কথা উল্লেখ করে এই সংবাদ সম্মেলন থেকে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাংলাদেশের সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ও বৈষম্যমূলক ধারাগুলো সংশোধন, পাহাড়ের উপজাতি (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী) বাঙালির মধ্যে বৈষম্য দূর করে সমতা আনয়ন, চুক্তির পুনমূল্যায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি স্থাপনে ব্যর্থ আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান সন্তু লারমার অপসারণসহ পাহাড়ের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তাবাহিনীর ক্যাম্প পুনস্থাপনের দাবি জানিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ।


আরো সংবাদ



premium cement
চোরতন্ত্রে পরিণত হয় দেশ বাংলাদেশে সুইডেনের বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা বিএনপি ক্ষমতা পেলে ফ্যামিলি ও ফার্মার্স কার্ড দেয়া হবে পশ্চিমতীরকে যুক্ত করে নিতে ইসরাইলের খসড়া পরিকল্পনা তৈরি দেশ স্থিতিশীল রাখতে জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিক তাঁবেদার রেজিম উৎখাতে ভারতের নীতিনির্ধারকরা এখন বেসামাল বাংলাদেশী সংখ্যালঘুদের দলে দলে ভারত পালানোর তথ্য সঠিক নয় ৫ আগস্টের পর ভারতের সাথে সম্পর্কে সমস্যা চলছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠাতে মোদির কাছে আবদার মমতার মুক্তিযুদ্ধ চূড়ান্ত অধ্যায়ে রূপ নেয়

সকল