১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা : শিবির সভাপতি

বক্তব্য দিচ্ছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা মন্তব্য করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম বলেছেন, ‘বিগত সরকার অর্থনৈতিক সেক্টর ধ্বংসের মাধ্যমে জাতির মেরুদণ্ডকে ভেঙে দিয়েছে। তিনি শিক্ষাব্যবস্থাকে রাজনীতিকীকরণের মাধ্যমে জাতিগঠনের অন্তরায় হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন।’

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে একটি রিসোর্টে ছাত্রশিবির কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা আয়োজিত সাড়ে ৩০০ শিক্ষার্থীকে নিয়ে নবীন বরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির সভাপতি হাফেজ ইউসুফ ইসলাহীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি হাফেজ মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম। এছাড়াও বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কলেজ কার্যক্রম সম্পাদক মো: শফিউল্লাহ, ঢাবি সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ, কুমিল্লা মহানগরের সভাপতি নোমান হোসেন নয়ন, কুবির সাবেক সভাপতি শাহাদাত হোসাইন ও ইমরান আল হাসান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মনজুরুল ইসলাম বলেন‚ ‘শিক্ষার মূল কাজ হলো একজন ব্যক্তিকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক যে পক্রিয়া সেখানে একজন মানুষকে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা ছিল সামান্য। শিক্ষাব্যবস্থা ছিল রাজনীতি কেন্দ্রিক। অথচ শিক্ষাব্যবস্থা হওয়া উচিত ছিল একজন শিক্ষার্থীকে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলবে। সুতরাং ক্লাসের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কী শিখে যাবো এবং জাতিকে কী দিবো।’

এ সময় তিনি নবীন শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক দিক থেকে সফল হতে বিনয়, নম্রতা ও মেধার চর্চার মাধ্যমে একজন সুনাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ বলেন, ‘চব্বিশের গণ-আন্দোলনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম রক্তাক্ত হয়েছিলো। প্রথম প্রতিরোধও শুরু হয়েছিলো এখান থেকে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাংস্কৃতিক প্রতিবন্ধকতা ও অনৈতিক আগ্রাসনের ফলে সুস্থ সংস্কৃতি চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে অপসাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে মোকাবিলা করতে হলে সুস্থ সংস্কৃতিকে চর্চা করতে হবে।’

এ সময় সমাপনী বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইউসুফ ইসলাহী বলেন, ছাত্রসমাজ চাইলেই বাংলাদেশের ইতিহাস পরিবর্তন করে দিতে পারে। এ বাংলাদেশের ইতিহাস যতবার পরিবর্তন হয়েছে ততবার ছাত্রসমাজের অবদান রয়েছে। এছাড়াও তিনি জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা ও অবদান তুলে ধরে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মাদক ও সন্ত্রাস দমনে এবং ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতার আহ্বান জানান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০তম সিন্ডিকেটে ক্যাম্পাসে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার পরেও নবীন বরণ প্রোগ্রাম করার বিষয়ে জানতে চাইলে শিবিরের সেক্রেটারি মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘প্রশাসনের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা ক্যাম্পাসের ভেতরে বা ক্যাম্পাস গেটের আশেপাশে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করছি না।’

এ বিষয়ে ভিসি অধ্যাপক ড. মো: হায়দার আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অঙ্গীকারনামায় আগেও ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল। তবে তা কেউ মানেনি। বর্তমানে আমরা ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে কাউকে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দিচ্ছি না। ভবিষ্যতেও দিব না। আগামী সিন্ডিকেট সভায় ছাত্র রাজনীতির নিষিদ্ধের আওতায় শিক্ষার্থীরা কী কী করতে পারবে এবং কী কী করতে পারবে না তাও স্পষ্ট করে দেয়া হবে।’


আরো সংবাদ



premium cement