লংগদুর কাট্টলী বিলে বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদনের হিড়িক
- বিপ্লব ইসলাম, লংগদু (রাঙ্গামাটি)
- ১০ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৫
রাঙ্গামাটির কাপ্তাই হ্রদের শুঁটকি জেলার চাহিদা মিটিয়েও এখন ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। বিভিন্ন জেলায় নিয়মিত পাঠানো হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির এসব শুঁটকি। দেশে উৎপাদিত দেশীয় প্রজাতির মিঠা পানির শুঁটকির একটি বড় অংশ উৎপাদন হয় কাপ্তাই হ্রদের মৎস্য দিয়ে।
আগে দামে সস্তা থাকায় শুঁটকিকে গরিবদের খাবার বলা হতো। কিন্তু এখন বদলে গেছে শুঁটকির সেই অবস্থান। শুঁটকি এখন দেশের ধনীদের খাবার ম্যানুতে স্থান পাচ্ছে। এমনকি দেশের বিভিন্ন নামী-দামি রেস্টুরেন্টে ও বিলাসবহুল হোটেলেও শুঁটকির বিশেষ চাহিদা রয়েছে।
শীতের শুরু থেকে কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকার নদী পাড়ে কাঁচা মাছ রোদে শুকিয়ে ‘শুঁটকি মাছ’ উৎপাদনের ধুম পড়েছে। আগামী এপ্রিল-মে পর্যন্ত চলবে শুঁটকি উৎপাদনের মৌসুম। অনুকূল আবহাওয়া ও সূর্যালোকের কারণে রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায় প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ কেজি কাঁচা মাছের শুঁটকি উৎপাদন হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
লংগদু উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় এসব ছোট-খাটো অনেক শুঁটকির সাইট। তবে কাপ্তাই হ্রদের কাট্টলী বিলের মধ্যস্থানে অবস্থিত কাট্টলী বাজারে গিয়ে দেখা যায় বৃহৎ পরিসরের বেশ কয়েকটি শুঁটকির ঘের। দূর থেকে মনে হয় এ যেন কোনো শুঁটকিপল্লী।
সরজমিনে বিভিন্ন বয়সের ২০-৩০ জনকে শুঁটকি উৎপাদনে ব্যস্ত দেখা যায়। কাপ্তাই হ্রদের বিভিন্ন এলাকা থেকে অসংখ্য ট্রলার মাছ আহরণ করে প্রতিদিন কাট্টলী বিলের বাজার ঘাটে ভিড়ছে। এসব ট্রলারে আসা বিভিন্ন কাঁচা মাছ রোদে শুকিয়ে শুঁটকি করা হচ্ছে।
এছাড়াও মাইনী মুখ, কালাপাকুজ্জা, মাহিল্যা, গুলশাখালী, বগাচতর, ভাসাইন্যাদম, ফোরের মূখ, সাদু টিলাসহ লংগদু উপজেলার নদী পাড়ের মানুষের কয়েক হাজার বসত-ঘরের ছাদে ও উঠানে মাচা বানিয়ে তৈরি হচ্ছে শুঁটকি।
উৎপাদনকারীরা জানায়, উপজেলায় উৎপাদিত বেশিভাগ শুঁটকিতে কোনো রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয় না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে নদী পাড়ে মাচা তৈরি করে এ শুঁটকি তৈরি করা হয়। তাই কাপ্তাই হ্রদের শুঁটকির চাহিদা সারাদেশেই বেশি।
উপজেলার শুঁটকি ব্যবসায়ীরা জানায়, এখানে কেচকি, চাপিলা, চান্দা, পুটি, শোল, চিংড়ি, ভাইম, ফলিপাতা, তেলাপিয়াসহ ১২-১৫ প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয়। বর্ষাকালে টানা বৃষ্টির সময় ছাড়া বছরের পাঁচ-ছয় মাস চলে শুঁটকি উৎপাদন।
এ বিষয়ে জানতে উপজেলা মৎস্য কর্মকতার সাথে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে মেসেজ দিয়েও তার থেকে কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।