নিষেধাজ্ঞা উঠতেই বাজারে প্রচুর ইলিশ, তবে দাম চড়া
- এম মাঈন উদ্দিন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম)
- ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৩:১৭, আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৪:৪৫
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার পর বিভিন্ন বাজারে প্রচুর মাছ আসছে। দীর্ঘিদন পর সাগের মাছ ধরেত পারায় জেলেরাও খুশি। ক্রেতারাও মাছ কিনতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। তবে এখনো দাম চড়া।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ১৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য সমুদ্র ও নদীতে ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। এ সময় মাছ ধরা, বিক্রি, বিপণন, মজুত ও পরিবহন নিষিদ্ধ ছিল। গত ৩ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে এ নিষেধাজ্ঞা উঠে যায়।
মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বড়তাকিয়া মাছ বাজারে দেখা গেছে, ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হয়ে উঠেছে মাছ বাজার। ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর অন্য দিনের তুলনায় ক্রেতাদের বেশি ভিড় ছিল। সেইসাথে ইলিশ কিছুটা কম থাকলেও বিভিন্ন প্রজাতির অনেক মাছ ছিল। দামও ছিল বেশি। আকার ভেদে নানা দামে মাছ বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে বাজার ঘুরে জানা গেছে, আগের দিনে চেয়ে প্রতি কেজি ইলিশ ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে। বড় আকারের (দেড় কেজি বেশি) ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে। প্রায় এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায়। আর ছোট আকারের ইলিশের দাম প্রতি কেজি এক হাজার ১০০ টাকায়। পোঁয়া মাছ ৪০০ টাকা, লইট্টা ২২০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৬০০, বড় চিংড়ি এক হাজার ১০০ টাকা, বাটা মাছ ৫০০ টাকা, কোরাল ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, বিভিন্ন আকারের রুই ২৫০ টাকা থেকে সাড়ে ৩৫০ টাকা, ছোট রুই (নলা) ১৯০ থেকে ২০০ টাকা ও বড় আকারের পাঙ্গাশ ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ কিনতে আসা শাহদাত হোসেন বলেন, ‘বাজারে প্রচুর মাছ উঠেছে, তবে দাম অনেক চড়া। এত দিন নিষেধাজ্ঞা ছিল, সেক্ষেত্রে বাজারে মাছ ছিল কম। আজকে নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার কারণে বাজারে প্রচুর মাছ উঠেছে। তাই বাজার থেকে মাছ কিনেছি।’
আরেকজন ক্রেতা স্কুল শিক্ষক হুমায়ুন মোরশেদ বলেন, ‘মাছের দাম অনেক বেশি। তারপরও মাছ কিনতে এসেছি, তেলাপিয়া কিনে বাড়ি যাচ্ছি। বাজারে ইলিশ মাছ ছিল কম, তাই ইলিশ মাছ কিনতে পারি নাই।’
মাছ বিক্রেতা তেজেন্দ্র নাথ বলেন, ‘২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার পর আড়তে গিয়ে ইলিশ মাছ কিনতে পারি নাই। তবে অন্য মাছ ছিল প্রচুর। আমি অন্য মাছ কিনে বাজারে এসেছি।’
তিনি বলেন, ‘বেশিভাগ ক্রেতাই আজ ইলিশ কিনতে বাজারে এসেছেন, কিন্তু মাছ ছিল কম। তবে দু’এক দিন পর ইলিশ মাছ বাজারে সরবরাহ বাড়বে। তখন ক্রেতারা কিনে খেতে পারবেন। আজকে ইলিশের দাম বেশি ছিল, সরবরাহ বাড়লে ইলিশের দামও কমবে।’
উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা নাসিম আলম মাহমুদ বলেন, ‘মা ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে ১৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য সমুদ্র ও নদীতে ইলিশ ধরা নিষেধাজ্ঞা ছিল। গত ৩ নভেম্বর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হয়েছে। এতে বাজারে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ উঠেছে। তাই বাজারে ক্রেতাদের সমাগম বেড়েছে।’