বায়তুশ শরফ আধ্যাত্মিকতা, সেবা ও জ্ঞান চর্চার সমন্বিত আধার : ধর্ম উপদেষ্টা
- গোলাম আজম খান, কক্সবাজার অফিস
- ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:০৯, আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৮:১৪
বায়তুশ শরফ আধ্যাত্মিকতা, সেবা ও জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার সমন্বিত আধার মন্তব্য করে ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, ‘প্রচলিত পীর মুরিদীর আবহে পরিবেষ্ট না থেকে বায়তুশ শরফের পীর মুর্শিদরা ইহকাল ও পারলৌকিক কল্যাণে নিবেদিত থেকে যেভাবে দেশে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দিয়েছেন তা অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’
তিনি বলেন, ‘বায়তুশ শরফ মসজিদভিত্তিক একটি আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠান হলেও মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, হেফজখানা, ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সেবা দিয়ে যাচ্ছে।’
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) জুমার নামাজের পর কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স জব্বারিয়া অ্যাকাডেমী স্কুল অ্যান্ড কলেজের কলা ও কারিগরি শিক্ষা ভবন, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রা: মসজিদ এবং অ্যাকাডেমিক লাইব্রেরি উদ্বোধন ও ত্রিরত্ন মেধা বৃত্তি ২০২৪-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স পরিচালিত মসজিদ, মাদরাসার পাশাপাশি স্কুল, কলেজ, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মুসলিম ছাত্রদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি করে ধর্ম-বর্ণ সবার জন্য যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে তা বিরল ঘটনা।’
বায়তুশ শরফের সাথে অনেক আগে থেকে পরিচয় এবং যাতায়াতের কথা তুলে ধরে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, ‘মহানবী সা: যেভাবে সেবা, দয়া ও জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে ইসলামের সুমহান বাণী বিশ্বময় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন বায়তুশ শরফ তারই বাস্তব উদাহরণ। বায়তুশ শরফের পীর-মুর্শিদগণ নিজেরা যেমন একেকজন উঁচু মাপের জ্ঞানী-গুণী ছিলেন, তেমনি প্রতিবছর গুণীজন সংবর্ধনা আয়োজন করে জ্ঞানী-গুণীদের মূল্যায়নের মাধ্যমে সমাজে গুণীজন তৈরির নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘খ্যাতিমান ইসলামিক স্কলারদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকিং ব্যবস্থা, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব নিয়ে একাধিক সেমিনার-সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে দেশে ইসলামী ব্যাংক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দ্বার উন্মোচিত করার কৃতিত্ব বায়তুশ শরফরই।’
বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের সভাপতি ও রাহবারে বায়তুশ শরফ আল্লামা শায়খ মুহাম্মদ আবদুল হাই নদভীর (ম.জি.আ.) সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের মহাপরিচালক আলহাজ্ব এম এন সিরাজুল ইসলাম, ধর্মবিষয়ক সচিব আব্দুল হামিদ, উপদেষ্টার একান্ত সচিব ছাদেক আহমদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দিন।
এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন বায়তুশ শরফ আনজুমনে ইত্তেহাদের সেক্রেটারি জেনারেল হাফেজ মোহাম্মদ আমান উল্লাহ, কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্সের সেক্রেটারি মাওলানা নজরুল ইসলাম।
মহাপরিচালক এম এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘একটি মসজিদ নিয়ে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ শুরু হয়েছিল। পীর সাহেব বায়তুশ শরফ আল্লামা আব্দুল জব্বার এই প্রতিষ্ঠান শুরু করেছিলেন। আজ ১০টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স এ অঞ্চলের বৃহত্তর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে কক্সবাজার বায়তুশ শরফ কমপ্লেক্স আয়োজিত বায়তুশ শরফ ত্রিরত্ন মেধাবৃত্তি ২০২৪-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়। এতে জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দু’হাজারের মতো শিক্ষার্থী অংশ নেয়।