১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৭ আশ্বিন ১৪৩১, ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

‘পিনন’ তঞ্চঙ্গ্যা জাতির ঐতিহ্যের ধারক

পিনন বুননে ব্যস্ত এক তঞ্চঙ্গ্যা নারী - ছবি : নয়া দিগন্ত

পার্বত্যাঞ্চলের তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের কোমর তাঁত ‘পিনন’ এখনো স্বমহিমায় দীপ্তমান। পিনন তঞ্চঙ্গ্যা জাতির ঐতিহ্যের ধারা বহন করে চলছে। পিনন এখনো তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে শোভা পায়। সাধারণতো বাংলা নববর্ষকে সামনে রেখে পুরো পার্বত্যাঞ্চল জুড়ে তঞ্চঙ্গ্যা নারীরা ঘরে ঘরে পিনন বুননে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।

জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১টি ক্ষুদ্র্র নৃ-জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর চেহারা, অভ্যাস, দৃষ্টিভঙ্গি, চাল-চলন ও আচার-আচরণে গভীর মিল রয়েছে। কিন্তু এত কিছুর মিল থাকার পরও প্রত্যেক নৃ-জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে আলাদা আলাদা স্ব-স্ব জাতির ঐতিহ্যগত আচার-অনুষ্ঠান, কৃষ্টি, সংস্কৃতি, ভাষা ও পোশাক-পরিচ্ছদে নানা পার্থক্য। এদের প্রত্যেক ন-ৃগোষ্ঠীর পরিচয় পেতে হলে প্রথমে দৃষ্টি দিতে হবে তাদের সাজ পোশাক ও ফ্যাশনের দিকে। পোশাকই এদের জাতির পরিচয় বহন করে চলছে যুগ যুগ ধরে।

পোশাকই জাতির ঐতিহ্যের মূল প্রতীক হিসেবে দৃশ্যমান হয়ে আসছে। পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসকারী ক্ষুদ্র নৃ-জনগোষ্ঠীর মধ্যে ‘তঞ্চঙ্গ্যা’দের পোশাক ও সংস্কৃতিতে রয়েছে ভিন্নতা।

পার্বত্য জেলার রাঙ্গমাটির জেলা সদর, রাজস্থতলী, বিলাইছড়ি, বান্দরবানের বান্দরবান সদর, রোয়াংছড়ি, রুমা, লামা ও আলীকদম উপজেলায় এদের নিবাস। তঞ্চঙ্গ্যাদের রয়েছে ঐতিহ্যগত নারীদের নিজস্ব পোশাক। যা ‘পিনন’ নামে পরিচিতি লাভ করেছে।

তঞ্চঙ্গ্যা নারীরা বাজার থেকে সুতা সংগ্রহ করে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে নিজেদের মনের মতো করে সাজিয়ে পোশাক তৈরী করে পরিধানে অভ্যস্ত। পুরুষরাও এককালে তুলা থেকে সুতা তৈরী করে বিশেষ ডিজাইনের র্শার্ট পরিধান করত। কিন্তু তা কালের আবর্তে হারিয়ে গেলেও নারীদের ‘পিনন’ এখনো স্ব-মহিমায় জাতির ঐতিহ্যের ধারা বহন করে চলছে।

বর্ষ বরণ, বুদ্ধ পূর্ণিমা, প্রবারণা পূর্ণিমাসহ নানা ধর্মীয় ও সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান সম্পাদনের জন্য নতুন সাজে সাজিয়ে নেয় নারীরা। তবে তার জন্য চাই এদের স্ব জাতীর পোশাক। যা তাদের ঐতিহ্যের পরিচয় বহন করে। এ পোশাকে সাজতে যেন প্রতিটি তঞ্চঙ্গ্যা নারীর জন্য গর্বের বিষয়। তাই প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসের দিকে কোমর তাঁত ‘পিনন’ বুননে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তঞ্চঙ্গ্যা নারীরা। পার্বত্যাঞ্চলে তঞ্চঙ্গ্যাদের ঘরে ঘরে এখনো পিননের শোভা পায়।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল