২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

দুর্বার গতিতে জেগে উঠার আহ্বান জামায়াতের

উখিয়া হলদিয়া পালং ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলন। - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির নুর আহমদ আনোয়ারী বলেছেন, হাতে হাত কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত নতুন বাংলাদেশে শহীদের এ জমিনে আবারো সকলকে দুর্বার গতিতে জেগে উঠার মাধ্যমে দ্বীন প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে হবে।

শনিবার (৫ অক্টোবর) হলদিয়া পালং ইউনিয়ন জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, এ সময়ে একমাত্র জামায়াতে ইসলামী একটি আধুনিক সভ্যতা ও কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করতে পারে। তাই জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের এই ঐতিহাসিক ভূমিকা পালনের মাধ্যমে পরকালীন মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

হলদিয়া পালং ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাবেক কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি এ কে এম অ্যাডভোকেট শাহজালাল চৌধুরী।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক ছাত্রনেতা কক্সবাজার জেলা জামায়াতের সহ-সেক্রেটারি জাহেদুল ইসলাম, কক্সবাজার জেলা জামায়াতের প্রচার সেক্রেটারি আল আমিন মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, উখিয়া উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল ফজল, উখিয়া উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা নুরুল হক, উখিয়া উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মৌলভী সোলতান আহমদ, ছাত্রশিবিরের কক্সবাজার জেলা শহরের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গির আলম প্রমুখ।

উখিয়া হলদিয়া পালং ইউনিয়নের এই কর্মী সম্মেলনে বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

জামায়াত কর্মীদের শপথবদ্ধ জিন্দেগির কথা স্বরণ করিয়ে দিয়ে নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার লক্ষ্যে বৃহত্তর আন্দোলনে বাইয়াতের কর্মী হিসেবে নিজেকে তৈরি করার বিকল্প নেই।

তিনি আরো বলেন, সারাদেশে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার মিথ্যা মামলা দিয়ে মাসের পর মাস বছরের পর বছর জেলখানায় আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। বহুসংখ্যক নেতাকর্মীকে ক্রসফায়ার দিয়ে এবং মাওলানা নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীসহ অসংখ্য নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। শত শত নেতাকর্মীকে রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক, মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে অনেককে পঙ্গু করা হয়েছে। গুম করা হয়েছে শত শত নেতাকর্মীকে। একজন সাধারণ পিয়ন তার সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হয় সেখানে স্বৈরশাসক আওয়ামী সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার মালিক বনে যায়। এটাতে বুঝা যায় বৈষম্যের বিশাল ফারাক ছিল দেশে। এখন ব্যাংকে গেলে টাকা পাওয়া যায় না। এই টাকা কারা লুটপাট করেছে জাতীর কাছে তা স্পষ্ট হয়ে গেছে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আজ দেশ দ্বিতীয় বারের মতো স্বাধীন হয়েছে। ছাত্র-জনতার সাহসী ভূমিকায় শহীদের রক্তের বিনিময়ে বিশ্বমানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশপ্রেমে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সব ক্ষেত্রে বৈষম্যবিহীন একটি সুন্দর দেশ, স্বৈরচারের পতন, গণতন্ত্র, আইনের শাসন, মানবাধিকার, বাক স্বাধীনতা, বেঁচে থাকার অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তি।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জনগণের প্রত্যাশা ছিল তারা তাদের মৌলিক অধিকারের নিশ্চয়তা পাবে, নিজের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করার ভোটাধিকার পাবে, ইজ্জত ও সম্মান নিয়ে বেচে থাকার গ্যারান্টি পাবে, সভা-সমাবেশ, চলাফেরা ও কথা বলার অধিকার পাবে। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বাধীনতাকে হরণ করেছে। আমরা সব কিছু হারিয়েছিলাম। আজ হারানো ঐতিহ্য ফিরে পেয়েছি। তাই আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামী মূল্যবোধের বাংলাদেশ।


আরো সংবাদ



premium cement