০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১, ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

রামুতে বাঁকখালী নদীর ভাঙ্গনে ৭ শতাধিক বসতবাড়ি হুমকির মুখে

রামুতে বাঁকখালী নদীর ভাঙ্গনে ৭ শতাধিক বসতবাড়ি হুমকির মুখে - ছবি : নয়া দিগন্ত

কমছে বাঁকখালী নদীর পানি। কিন্তু ভাঙ্গছে নদীর পাড়। এতে ঝুঁকিতে একটি গ্রামের সাত শতাধিক পরিবার। এমন দৃশ্য মিলেছে কক্সবাজারের রামু উপজেলার পূর্ব কাউয়ারখোপ রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কঘেঁষে বয়ে চলা বাঁকখালী নদীর তীরে।

চলতি বর্ষায় বন্যা ও পাহাড়ী ঢলে রাতারাতি দেড় হাজার ফুট লম্বা ও ৩০ ফুট প্রস্থের নদীর পাড় ও বসতভিটে নদী গর্ভে চলে গেছে। নদীর ভাঙ্গন রোধে তড়িৎ কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে এক সময় লামারপাড়া গ্রামটি বিলীন হয়ে যেতে পারে।

নদী ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করে জানা গেছে, অনেক বছর আগে থেকে কক্সবাজার-সদর উপজেলার হাজার হাজার পরিবার একে বেঁকে বয়ে চলা বাঁকখালী নদীর দুই পাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস করছে। ইতোপূর্বে এই নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে মনিরঝিল, রাজারকুল, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, দক্ষিণ মিঠাছড়ি গ্রামের শত শত পরিবার বসতভিটে, কৃষিজমি ও ঘরহারা হলেও এসব স্থানে ভাঙ্গনরোধে ব্লক/বল্লি স্পার স্থাপন করা হয়েছে।

এদিকে, গত ২ বছর পূর্বে এই নদী খনন করা হলে নদীর গভীরতা বেড়ে যায়। এতে বর্ষাকালে পানির স্রোত বেড়ে গিয়ে দ্রুত পানি নিস্কাশনের ফলে নদীর পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষ কোনো রকম দীর্ঘসময় পানিবন্ধী সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেলেও নদীর ফতেখারকুল, রাজারকুল, কচ্ছপিয়া, গর্জনিয়াসহ বিভিন্ন স্থান নতুন করে ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে।

জানা গেছে, গত ২০১২ সালের বন্যায় পূর্ব কাউয়ারখোপ মরহুম আবুল বশর সওদাগরের ঘাটা থেকে আইরাবাপের ঘাটা পর্যন্ত বাঁকখালী নদীর পাড় ভাঙ্গন শুরু হলে তৎকালীন বিএনপি দলীয় সাংসদ লুৎফুর রহমান কাজল পরিদর্শনে এসে ভাঙ্গন রোধে দু’টি বল্লি স্পার স্থাপন করে দিলে নদী ভাঙ্গন কিছুটা হ্রাস পায়। কিন্তু ২০১৮ সালের পর থেকে ওই স্থান পুনরায় ভাঙ্গর শুরু হয়। বিশেষ করে চলতি বর্ষায় লাগাতার বন্যা ও পাহাড়ি ঢলে নদী ভাঙ্গন প্রকট আকার ধারণ করলে প্রায় দেড় হাজার ফুট দৈর্ঘ্যর পাড়ের তিন একর পরিমাণের বসত ভিটে নদী গর্ভে চলে যায়। এতে পূর্ব কাউযারখোপ লামার পাড়াস্থ সাত শতাধিক বসতবাড়ি হুমকির মুখে পড়ে।

অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে জীবনের একমাত্র সম্বল বসতবাড়ি হারানোর ভয়ে গ্রামের মানুষ চরম উদ্বিগ্নাবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

নদী ভাঙ্গনের কবলে পাড়া গ্রামের মোহাম্মদ মোস্তফা সওদাগর বলেন, নদী ভাঙ্গন স্থল থেকে বর্তমানে মাত্র ৩০ ফুটের দূরত্বে রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সড়কের অবস্থান। এখন থেকে ভাঙ্গনরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া না হলে গ্রামটি তো বিলীন হবে। অপরদিকে সড়কটিও ঝুঁকিতে পড়তে পারে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিথুন ওয়াদ্দাদার জানিয়েছেন, রামুর বিভিন্নস্থানে নদী ভাঙ্গন বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড অবগত আছে। এসব ভাঙ্গন রোধে যথাসম্ভব জরুরিভিত্তিতে কাজ করা হচ্ছে। পাশাপাশি এসব ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পানি উন্নয়ন বোর্ড।


আরো সংবাদ



premium cement