সংঘাতের খেলায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা
- হুমায়ুন কবির জুশান, উখিয়া (কক্সবাজার)
- ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৯
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে খুনোখুনি থামছেই না। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের আরাকানে গণহত্যার শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় লাখ লাখ রোহিঙ্গা। আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ লাখে। ক্যাম্পগুলো মাদকে ছেয়ে গেছে। আর মাদকের সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণেই গড়ে উঠেছে একের পর এক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। সাত বছরে ক্যাম্পগুলো পরিণত হয়েছে এসব গোষ্ঠীর আধিপত্যের যুদ্ধক্ষেত্র।
ক্যাম্পগুলো রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। ক্যাম্পগুলোতে সক্রিয় রয়েছে চারটি সশস্ত্র সংগঠন এবং সাতটি ডাকাত দল। এর মধ্যে সবচেয়ে সংগঠিত দলটি আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসা। রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও)। আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি এআরএ এবং ইসলামী মাহাজ।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মোটা দাগে চারটি গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও সুসংহত দল আরসা। এর পরেই অস্ত্রশস্ত্রের দিক দিয়ে সুসজ্জিত দলটি আরএসও। সম্প্রতি আরসা ও আরএসওর মধ্যে সংঘাত ছড়িয়েছে ব্যাপক।
এছাড়া সাবেক আরসা সদস্য নবী হোসেন মংডুতে গড়ে তুলেছেন আরাকান রোহিঙ্গা আর্মি (এআরএ) নামে একটি সশস্ত্র দল। মাদক সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে এটিই হয়তো বৃহৎ সশস্ত্র গোষ্ঠী। নবী হোসেন গ্রুপের বেশিরভাগই আরসার সাবেক সদস্য।
আবার আরএনওর একটি অংশ নবী হোসেনের অনুগত। এর বাহিরে রয়েছে রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর দল ইসলামী মাহাজ। সর্বশেষ আধিপত্য বিস্তারের জেরে আরসা ও আরএসও সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের মধ্যে গোলাগুলিতে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিতে আরো পাঁচজন আহত হয়েছেন।
গতকাল বুধবার বিকেলেও হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর এবং জামতলী ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মাঝামাঝি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আব্দুর রহমান (১৯) হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর ছেলে।
আহতরা হলেন, একই ক্যাম্পের সিদ্দিক আহমদের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩২), সোলতান আহমেদের ছেলে মোহাম্মদ জোবাইর (৩৭), রশিদ উল্লাহর ছেলে মো: শাফায়েত ও দিল মোহাম্মদের ছেলে নুর আলম এবং জামতলী ১৫ নম্বর ক্যাম্পের লাল মিয়ার স্ত্রী নেসারা (৫৫)।
স্থানীয়দের বরাতে ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) আমির জাফর বলেন, ‘বুধবার বিকেলে হাকিমপাড়া ১৪ নম্বর এবং জামতলী ১৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝামাঝি এলাকায় মিয়ানমারের সন্ত্রাসী সংগঠন আরসা ও আরএসও সংঘর্ষে জড়ায়। উভয়পক্ষ ২০ থেকে ২৫ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে ছয়জন রোহিঙ্গা গুলিবিদ্ধ হন। খবর পেয়ে এপিবিএনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘পরে আহতদের উদ্ধার করে জামতলী এলাকায় এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক একজনকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত বাকিদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুতুপালং এলাকায় এমএসএফ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এপিবিএন অধিনায়ক জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আধিপত্য বিস্তারের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা