২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

৩ পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার অবরোধ

সাজেকে আটকা ৮ শতাধিক পর্যটক
সাজেকে আটকা পড়েছে ৮ শতাধিক পর্যটক - ছবি : সংগৃহীত

খাগড়াছড়িতে শনিবার ভোর থেকে ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জেলা সদরের কোথাও কোনো পিকেটিং ও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। সকাল থেকে সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে টহল দিতে দেখা গেছে। শুক্রবার রাঙ্গামাটিতে সংঘর্ষের ঘটনায় বাস, সিএনজি, অটোরিকশা, ট্রাক ভাঙচুর ও শ্রমিক আহতের প্রতিবাদে মালিক শ্রমিক যৌথ বিবৃতিতে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়। এ দিকে পরিবহন ধর্মঘট এবং তিন পার্বত্য জেলায় অবরোধের কারণে রাঙ্গামাটির সাজেকে ভ্রমণে গিয়ে আটকে পড়েছেন আট শতাধিক পর্যটক।

শুক্রবার রাজধানী ঢাকার একটি সমাবেশ থেকে জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটিতে সড়ক ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেয়া হয়। কর্মসূচির প্রতি সমর্থন জানিয়ে অবরোধ পালনের ঘোষণা দিয়েছে আঞ্চলিক সংগঠন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।

খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা নৈশ কোচগুলো সকাল সাড়ে ৭টার দিকে শহরে প্রবেশ করে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এ দিকে খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকরা অবরোধের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। সাজেকে যাওয়ার সব গাড়ি বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার খাগড়াছড়ি থেকে ৮০টি গাড়ি সাজেক গেছে বলে জানান খাগড়াছড়ি জিপ মালিক সমিতির সাজেক কাউন্টারের লাইনম্যান মো: আরিফ জানান। জিপ গাড়ির লাইনম্যান মো: ইয়াছিন আরাফাত বলেন, ইউপিডিএফের অবরোধের ডাকে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় আগুন দেয় অবরোধকারীরা। শুনেছি, বেইলি সেতুগুলো থেকে পাটাতন খুলে নেয়া হয়েছে। এই অবস্থায় পর্যটকদের বহন করা গাড়ি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ। তাই সমিতির পক্ষ থেকে কোনো গাড়ি সাজেক থেকে ফেরেনি।

খাগড়াছড়ি সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতৃবৃন্দ জানান, নিরাপত্তাহীনতায় আমরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছি। বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতার ঘটনায় শ্রমিক ও ড্রাইভাররা অনিরাপদ বোধ করছেন।

উল্লেখ্য, বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরে চুরির অভিযোগ এনে মো: মামুনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনার জেরে দীঘিনালা ও খাগড়াছড়ি সদরে অপ্রীতিকর ঘটনায় তিনজন নিহত ও আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়। দীঘিনালায় পুড়িয়ে দেয়া হয় শতাধিক দোকানপাট। পরবর্তীতে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে খাগড়াছড়ির কয়েকটি উপজেলাসহ রাঙ্গামাটি জেলায়।

চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় ৭২ ঘণ্টার অবরোধের কারণে সাজেকে আটকা পড়েছে আট শতাধিক পর্যটক।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ভ্রমণে গিয়ে তারা আটকা পড়ে। এর আগে শুক্রবার সাজেকে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকরা ফিরতে পারেননি।

জানা যায়, সকাল থেকে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) এ অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ ডাকার পরেই রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে দূরপাল্লার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সব যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ জানান, অবরোধের কারণে সাজেকে আট শতাধিক পর্যটক আটকা পড়েছে। মূলত শুক্রবার খাগড়াছড়ি থেকে যারা সাজেক গিয়েছিলেন, তারাই সেখানে আটকা পড়েছেন। পরিস্থিতি ভালো হলে তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।

রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার বলেন, অবরোধের কারণে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকায় পর্যটকদের কোনো গাড়ি ছাড়া হয়নি। সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েছেন। পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement