১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

পুঁজিবাজারে দরপতন থামছেই না : হতাশায় বিনিয়োগকারীরা

পুঁজিবাজারে দরপতন থামছেই না : হতাশায় বিনিয়োগকারীরা -

- বিক্রির ৭০ শতাংশ চাপে সূচকের পতন
- উদ্ধার পেতে সাপোর্ট খুঁজছে সূচক
- ডিএসইর বাজারমূলধন ২ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা উধাও

অব্যাহত দরপতনের জালে আবারো আটকা পড়েছে দেশের পুঁজিবাজার। বিক্রির চাপে উঠে দাঁড়াতে পারছে না। ৩০ শতাংশ কেনার চাপের বিপরীতে বিক্রির চাপ আড়াই গুণ বা ৭০ শতাংশ। যেখানে বিক্রেতা ৬১ শতাংশ। প্রায় প্রতিদিনই লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে দিন যত যাচ্ছে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে। এতে বিনিয়োগকৃত অর্থ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের হতাশা বেড়েই চলেছে। বিনিয়োগকারী ও চাকরিজীবী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন আশায় থাকি বাজার ভালো হবে। কিন্তু প্রতিদিনই বাজারে দরপতন হচ্ছে। আর আমাদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে। এরই মধ্যে বিনিয়োগ করা পুঁজির প্রায় অর্ধেক নাই হয়ে গেছে। কবে এই লোকসান থেকে বের হবো সেই টেনশনে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না।
দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, লেনদেন শুরু হয়েছিল চাঙ্গা প্রবণতার মধ্যে দিয়ে। কিন্তু শেষ হয়েছে পতনের ঝাঁজ দিয়ে। লেনদেনের আধা ঘণ্টার মধ্যে ডিএসইর সূচক ২৯ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেরই দাম ছিল ভালো ইতিবাচক প্রবণতায়। এরপর সেল প্রেসার বাড়তে থাকলে সূচকের ঊর্ধ্বগতি থেমে যায়। সূচক নিচে নামতে থাকে। বেলা ১১টায় ডিএসইর সূচক আগের দিনের চেয়ে মাত্র ২ পয়েন্ট বেড়ে লেনদেন হয়। তারপর আবারো সূচক উপরে উঠতে থাকে। আর বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে সূচক ২১ পয়েন্টের বেশি ওপরে উঠে লেনদেন হয়। তারপর আবার সেল প্রেসার বাড়তে থাকলে সূচকও নামতে থাকে। এই সময়ে লেনদেনের মাত্রায়ও ধীরগতি দেখা যায়। এরপর দিনের শেষভাগেও সূচক কয়েকবার ওপরে উঠার চেষ্টা করে। তবে সফল হয়নি। ওপরে উঠতে গেলেই সেল প্রেসার উত্থান থামিয়ে দেয়। শেষবেলায় সূচকের পতন ৩৫ পয়েন্ট অতিক্রম করে যায়। তবে অ্যাডজাস্টমেন্টের পর সূচকের পতন ৩০.১৭ পয়েন্টে স্থির হয়।
ডিএসইর তিনটি সূচকই পতনের বৃত্তে ছিল। ডিএসইএক্স কমেছে ৩০.১৭ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচক ৮.৪৯ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৬.৯১ পয়েন্ট কমেছে। ১৯ কোটি ৪৪ লাখ আট হাজার ৮৬১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৯৩৪ কোটি ৯৬ লাখ ২৭ হাজার ৮৮২ টাকা বাজারমূল্যে, যা আগের দিনের তুলনায় ৩৪ কোটি টাকা কম। গত রোববার লেনদেন হয় ৬৬৮ কোট টাকার। ৪০১টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বেড়েছে ১৫০টির, কমেছে ১৮২টির এবং দর অপরিবর্তিত ৬৩টির। বাজারমূলধন কমে ছয় লাখ ৯০ হাজার ৪৪২ কোটি ৮২ লাখ টাকায় নেমে এসেছে। একদিনেই কমেছে দুই হাজার ৬৯০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ২৭টি কোম্পানির ৪৫ লাখ ৯৫ হাজার ৯০৬টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১৯ কোটি আট লাখ ৯৬ হাজার টাকায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে যে পাঁচ কোম্পানির, সেগুলো হলো- সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিচ হ্যাচারি, বেক্সিমকো এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকারও বেশি। আর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের। কোম্পানিটির ছয় কোটি ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এছাড়া প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের তিন কোটি ১৫ লাখ ৪০ হাজার টাকার, বিচ হ্যাচারি লিমিটেড দুই কোটি ৮৯ লাখ ২২ হাজার টাকার, বেক্সিমকোর এক কোটি ছয় লাখ ৬৭ হাজার টাকার এবং ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের ৯৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টকের সবগুলো সূচক থেকে পয়েন্ট গতকালও ঝরেছে। সিএএসপিআই ৪১.৬১ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ২৮.১০ পয়েন্ট এবং সিএসই-৩০ সূচক ৫২.৬০ পয়েন্ট হারিয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৯৭টির, কমেছে ১০৩টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৫টির। ২৫ লাখ ৯৭ হাজার ২৭০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ১০ কোটি ৯১ লাখ ২০ হাজার আট শ’ টাকা বাজারমূল্যে।
রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, ডিএসইতে সূচক নিম্নধারা অব্যাহত রেখে দিনশেষে পাঁচ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে এসে শেষ হয়েছে। এ ধারা বজায় থাকলে পাঁচ হাজার ৬৩০ পয়েন্টের কাছাকাছিতে এসে সূচক সাপোর্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে, গতকাল ডিএসইএক্স ৩০ পয়েন্ট হারানোর পাশাপাশি লেনদেন হ্রাস পেয়েছে ৩৪ কোটি টাকা। ঢাকার শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) নিম্নমুখী ছিল। মূলধন গত দিনের তুলনায় কমেছে। ১৯টি সেক্টরের মধ্যে ছয়টি সেক্টরের বাজারমূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১৩টি সেক্টরের বাজারমূলধন হ্রাস পেয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে একটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ব্লক মার্কেটে ১৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের ২.৯৯ শতাংশ।
এসএমই বাজার সূচক (ডিএসএমইএক্স) ২০ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৭৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি টাকার, যা গত দিনের তুলনায় ১৯ শতাংশ বেশি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ইসরাইল কি হামাসকে ধ্বংস করতে পারে? রাঙ্গাবালীতে ভোক্তা ঠকানোর দায়ে ৯ জনকে অর্থদণ্ড ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্মে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক : অর্থ উপদেষ্টা ঢাবি ও জাবিতে গণপিটুনিতে হত্যা প্রসঙ্গে যা বললেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পাকুন্দিয়ায় মাদরাসাছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর মাকে মারধর সুশীলতার আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে বিপ্লবের মূল্যবোধ বেক্সিমকো গ্রুপের সম্পত্তি দেখভালে রিসিভার নিয়োগের আদেশ সেনাবাহিনীকে ক্ষমতা দেয়ার বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে বললেন মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার প্রস্তুতি সম্পন্ন : ডা. জাহিদ মহাদেবপুরে স্বামীর লাঠির আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যুর অভিযোগ এক বছরের মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ছাড়ো : ইসরাইলকে জাতিসঙ্ঘ

সকল