২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের কেনার আগ্রহে ভাটা : বাজারে সরব বিক্রেতারা

-

- ৮০ শতাংশ বিক্রির চাপের বিপরীতে ক্রেতা ২০
- ডিএসইর বাজার মূলধন ০.৩৩ শতাংশ বেড়েছে

আবারো টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এক মাসেও প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি দেশের পুঁজিবাজারের। দীর্ঘ ১৬ বছরের একটা গন্ডিতে আটকে ছিল দেশের পুঁজিবাজার। সেখান থেকে বেরিয়ে আসবে এটা বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা। কিন্তু সেটা আজো হয়নি। বিক্রির চাপই পুঁজিবাজারকে আক্রান্ত করেছে। ৮০ শতাংশ বিক্রির চাপের বিপরীতে ক্রেতা মাত্র ২০ শতাংশ। সকাল থেকে সূচকের আচরণ ইতিবাচকই ছিল। কিন্তু দিন যখন গড়াতে থাকে বাজার আস্তে আস্তে নেতিবাচক রূপ নেয়। শেষ পর্যন্ত সেটাতেই শেষ করল। দুই বাজারেই উল্লেখ করার মতো পরিমাণ পয়েন্ট হারিয়েছে সূচকগুলো।

দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূচনাতেই বাজার ইতিবাচক ছিল। বেশির ভাগ কোম্পানির দর ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ১০.৫৬টায় ডিএসইর সূচকের মধ্যে ডিএসইএক্স ৫৩.৩৭ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচক ১০.৫৪ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৮.৩০ পয়েন্ট ফিরে পায়। ২৮৩টি কোম্পানি দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর অর্থাৎ সাড়ে ১২টায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটে। যে পরিমাণ ইতিবাচক পথে ছিল সূচকগুলো তার থেকে প্রায় ৯৫ শতাংশ পয়েন্ট হারিয়ে যায় পতনের চাপে। এই সময় দর পতনের তালিকায় থাকা কোম্পানির সংখ্যা বেড়ে ১৭৫টিতে উন্নীত হয়। দিনশেষে নেতিবাচক রূপ নেয় বাজারের লেনদেন। এতে ডিএসইএক্স ৪৯.৩৩ পয়েন্ট, শরিয়াহ ৭.৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ১৪.১৬ পয়েন্ট হারিয়ে ফেলে।

লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বৃদ্ধিতে ছিল মাত্র ৬৪টি, দর পতনে ২৮৯টি এবং দর অপরিবর্তিত ৪৪টি। ৩৬টি মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেনে অংশ নিলেও দর বেড়েছে মাত্র ৫টির, পতনে ১৬টি এবং দর অপরিবর্তিত ছিল ১৬টির। আঠারো কোটি ৮৬ লাখ ৭৫ হাজার ৩৪৪টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৬৭৮ কোটি ৮২ লাখ ১৭ হাজার ৩০২ টাকা বাজারমূল্যে, যা বৃহস্পতিবারের তুলনায় মাত্র চার কোটি টাকা বেশি। বাজারমূলধন ০.৩৩ শতাংশ বেড়ে এখন ছয় লাখ ৯৪ হাজার ৬৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকায় উন্নীত হয়ছে।

এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৩১টি কোম্পানির ৯৯ লাখ ৮১ হাজার ৪০৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে মোট ২৩ কোটি ৯ লাখ ২১ হাজার টাকায়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে যে পাঁচ কোম্পানির, সেগুলো হলো- লাভেলো আইসক্রিম, এসবিএসি ব্যাংক, মিডল্যান্ড ব্যাংক, ন্যাশনাল টি কোম্পানি এবং ইউনিক হোটেল এন্ড রিসোর্ট লিমিটেড। এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে ১৭ কোটি ৩ লাখ টাকারও বেশি। আর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লাভেলো আইসক্রিমের। কোম্পানিটির ৬ কোটি ৩ লাখ ৯৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এ ছাড়া এসবিএসি ব্যাংকের ৫ কোটি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার, মিডল্যান্ড ব্যাংকের ২ কোটি ৭৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার, ন্যাশনাল টি কোম্পানির ১ কোটি ৯২ লাখ ৯২ হাজার টাকার এবং ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের ১ কোটি ২৬ লাখ ১২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে, চট্টগ্রাম স্টকেও গতকাল দুইটি মূল সূচক বেশ পয়েন্ট হারিয়েছে। প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৪১ পয়েন্ট হারিয়েছে এবং সিএসসিএক্স হারিয়েছে ৮৮.৪০ পয়েন্ট। তবে সিএসই-৩০ সূচক ৪.৫২ পয়েন্ট ফিরে পেয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৩৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বৃদ্ধিতে ৫৭টি, দর পতনে ১৬১টি এবং অপরিবর্তিত ১৬টির দর। ২৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট সাত কোটি ৪৩ লাখ ৩১ হাজার ৩৩৬ টাকায়।

সন্তানদের শেয়ার দেবে ডেল্টার এক উদ্যোক্তা : পুঁজিবাজারে তালিকভুক্ত ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এক উদ্যোক্তা ৮১ হাজার শেয়ার হস্তান্তরের ঘোষণা দিয়েছেন বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) তথ্যটি প্রকাশ করেছে। কোম্পানিটির উদ্যোক্তা মঞ্জুরুর রহমান ৮১ হাজার শেয়ার হস্তান্তর করবেন। এই শেয়ারের মধ্যে কোম্পানির পরিচালক তার মেয়ে মিস সাইকা রহমানের কাছে ২৬ হাজার শেয়ার, পরিচালক তার ছেলে জিয়াদ রহমানের কাছে ২৮ হাজার এবং অপর পরিচালক তার মেয়ে মিস আবিদা রহমানের কাছে ২৭ হাজার শেয়ার হস্তান্তর করবেন। আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘোষণাকৃত শেয়ার উপহার হিসেবে হস্তান্তর করবেন এই উদ্যোক্তা।
এসআইবিএলের ১৮ লাখ শেয়ার কিনবেন সুলতান মাহমুদ: এ দিকে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এক উদ্যোক্তা শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের উদ্যোক্তা আলহাজ সুলতান মাহমুদ চৌধুরী শেয়ারবাজার থেকে ১৮ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা দিয়েছেন। এই উদ্যোক্তা আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে ঘোষণাকৃত শেয়ার ডিএসইর ব্লক মার্কেট থেকে কেনা সম্পন্ন করবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement