অস্থিরতায় সূচকের নাটকীয় প্রত্যাবর্তন
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০০:০০
- এক দিনেই ডিএসইতে ৯ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা ফিরল
- ৮৯ শতাংশ ক্রেতার বিপরীতে বিক্রেতা মাত্র ১১ শতাংশ
দীর্ঘ সময় ধরে থাকা একটি রাজনৈতিক সরকারের পতনের পরও দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা কাটছে না। নতুন একটি অন্তর্বর্তী সরকার আসায় যে প্রত্যাশা ছিল সেটাও পূরণ হচ্ছে না। এ অবস্থায় গতকাল ২১০টি কোম্পানি দর পতনের পরও দেড় শতাধিক দর বৃদ্ধির কারণে ক্রেতার চাপ থাকলেও বিক্রেতা ছিল না বাজারে। ৮৯ শতাংশ ক্রেতার চাপের বিপরীতে বিক্রেতা ছিল মাত্র ১১ শতাংশ। রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, সূচকের নাটকীয় তবে সময়োপযোগী প্রত্যাবর্তন। দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পরিশীলিত করার পদক্ষেপে আশান্বিত পুঁজিবাজার। তবে একটি খাতের ওপর নির্ভরশীলতা বাজারের সার্বিক গতিশীলতাকে বাধাগ্রস্ত করে। এদিন ডিএসইএক্স ৯২ পয়েন্ট বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেন বেড়েছে ২৪১ কোটি টাকা। সূচকের নাটকীয় প্রত্যাবর্তনে ডিএসইর বাজারমূলধন ১.৪৫ শতাংশ বা ৯ হাজার ৮৯৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকায় ফিরেছে।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রথম দিকে বাজার ছিল পতনমুখী। প্রথম চার মিনিটের মাথায় ডিএসইর দু’টি সূচক থেকে বড় ধরনের পয়েন্ট খোয়া যায়। এরপর দুপুর ১২টার পর থেকে বাজারে গতি আসে যা শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল। টানা সূচক হারানোর পর গতকাল ডিএসইর তিনটি সূচকই পয়েন্ট কিছুটা ফিরে পেয়েছে। ডিএসইএক্স ৯২.৯৫ পয়েন্ট, শরিয়াহ সূচক ১৭.৬৬ পয়েন্ট এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৪২.৯৫ পয়েন্ট ফিরে পেলো। লেনদেন হওয়া ৩৯৮টি কোম্পানির বাজারমূল্য পরিবর্তনের ভিত্তিতে দর বৃদ্ধিতে ১৫১টি ও ২১০টি ইস্যুর দর হ্রাস পেয়েছে। দরপতনের ২১০টির মধ্যে ১০৭টি কোম্পানিই হলো এ শ্রেণীর। আর দর অপরিবর্তিত ছিল ৩৩টির। ২৮ কোটি ২৯ লাখ ৫৪ হাজার ৯৭১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে মোট ৭৭৮ কোটি ৫৫ লাখ ৬২ হাজার ৩১৭ টাকা বাজারমূল্য, যা বুধবারের চেয়ে ২৪১ কোটি টাকা বেশি।
আর ব্লক মার্কেটে ৩৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৭৩ লাখ ১৪ হাজার ৯০৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ১৮ কোটি ৭৪ লাখ ৯ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে। ছয়টি কোম্পানির শেয়ার সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে গতকাল ডিএসইতে। সেগুলো হলো- সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গ্রামীণফোন, ম্যারিকো বাংলাদেশ, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং রেনাটা লিমিটেড। এই ছয় প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকারও বেশি। আর সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের। ব্যাংকটির ৫ কোটি ৩৫ লাখ ৩৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্সের দুই কোটি ২০ লাখ ৩৩ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এ দিকে গতকাল চট্টগ্রাম স্টকে তিনটি সূচকই গড়ে দেড় শ’ পয়েন্ট করে ফিরে পেয়েছে। সিএএসপিআই ১৭৫.৫২ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ১৯৭.৪৭ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স ১১০.৬৯ পয়েন্ট ফিরে পেলো। ৫৩ লাখ ৯৭ হাজার ৬৩০টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে মোট ১৩ কোটি ২২ লাখ ৩ হাজার ৯৬৪ টাকায়। ১৯৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বৃদ্ধিতে ছিল ৭০টি, পতনে ১১৩টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ১২টি।
রয়্যাল ক্যাপিটালের বিশ্লেষণ হলো, ঢাকার শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) ঊর্ধ্বমূখী ছিল। মূলধন গতদিনের তুলনায় ১.৪৫ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে ভলিউম ৫৮ শতাংশ এবং টার্নওভার ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। ১৯টি সেক্টরের মধ্যে ১০টি সেক্টরের বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৯টি সেক্টরের বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে। লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষে ছিল উঝঊ:এচ। ব্লক মার্কেটে ১৮.৭ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা মোট লেনদেনের ২.৪ শতাংশ। এসএমই বাজার সূচক (ডিএসএমইএক্স) ৭.৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৩৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বেলা ১২টার পর থেকে বাজারের ইতিবাচক ধারায় গতি আসে যা শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল।