০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ২২ পৌষ ১৪৩১, ৫ রজব ১৪৪৬
`

শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ ডিএসইতে সূচক পতন

একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে তিন বহুজাতিক কোম্পানি- রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভারস ও ম্যারিকো
-

শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকে বড় পতনের মধ্যে দিয়ে সপ্তাহ শেষ করেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ।
বৃহস্পতিবার ডিএসইতে সূচকের পাশাপাশি লেনদেনও কমেছে। সেই সাথে কমেছে বেশির ভাগ শেয়ারের দর।
বিনিয়োগকারীদের কেউ কেউ চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনকে অর্থনীতির জন্য ‘অজানা শঙ্কা’ হিসেবে দেখে শেয়ার বিক্রির কথা বললেও পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি মনে করছে, ‘মুনাফা’ তুলে নেয়ার প্রবণতায় বিক্রি বেড়েছে। বিডি নিউজ।
গতকাল লেনদেন শুরুর পর এক ঘণ্টার বেশি সময় বাজারের প্রধান সূচক ডিএসইএক্স মোটামুটি ঊর্ধমুখীই ছিল। এরপর শুরু হয় বিক্রির চাপ। দিন শেষে সূচক থামে ৫ হাজার ৫০৬ পয়েন্টে, যা আগের দিনের চেয়ে ৬১ পয়েন্ট কম।
আগের দিন বুধবারও সূচক কমেছিল ২৬ পয়েন্ট। অর্থাৎ, একটানা ছয় দিন উত্থানের পর টানা দুই দিনের পতনে ৮৭ পয়েন্ট হারিয়েছে ঢাকার শেয়ারবাজার।
ডিএসইতে এ দিন লেনদেন হয়েছে ৬৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড, যা গত তিন দিনের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গত বুধবার ৯৬৭ কোটি টাকা ও আগের দিন হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল ডিএসইতে।
সপ্তাহের শেষ দিন ৩৬ কোম্পানির শেয়ার দর বাড়লেও ৩৪৩টির কমেছে, আগের দরে লেনদেন হয়েছে ১৮টি।
সরকারি চাকরির কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের মধ্যে মতিঝিলের ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে এ দিন বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি ছিল কম।
হাসান মুরাদ নামের একজন বিনিয়োগকারী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমকে বলেন, ‘ছাত্রদের আন্দোলন কতদিন চলে তার ঠিক নাই, তাই লাভে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছি।’
আগামী সপ্তাহে সার্বিক পরিস্থিতি দেখেই নতুন বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।
তবে বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম মনে করেন, ‘মুনাফা’ তুলে নেয়ার প্রবণতায় সূচকে বেশি পতন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এর আগে ছয় দিন তো সূচক উপরে উঠেছে। এখন তো অনেকেই প্রফিট (মুনাফ) টেকিং করবে। গত বুধবারের চেয়ে বৃহস্পতিবার বেশি প্রফিট টেকিং হওয়ায় সূচক নেমেছে। লেনদেনের পরিমাণ দেখলেও তা ক্লিয়ার বোঝা যায়। আশা করছি, আগামী সপ্তাহে সূচক উত্থানে যাবে।’
এ দিন লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। দিন শেষে মোট লেনদেনের প্রায় সাড়ে ১৯ শতাংশ অবদান এই খাতে তালিকাভুক্ত ৩৩টি কোম্পানির। এসব কোম্পানির মধ্যে ২৬টিই এ দিন দর হারিয়েছে।
সাড়ে ১১ শতাংশ ভূমিকা রেখে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে প্রকৌশল খাতের শেয়ার। লেনদেনে থাকা ৪২টি কোম্পানির মধ্যে ৩৬টি দর হারিয়েছে।
খাদ্য ও অনুষঙ্গিক খাত ছিল তৃতীয় অবস্থানে। লেনদেনে থাকা ২১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার দর কমেছে ১৬টির।
খাতভিত্তিক শেয়ার দর হারানোর তালিকায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো; ৫৮টির মধ্যে দর হারিয়েছে ৫৫টি। একক কোম্পানি হিসেবে লেনদেনের শীর্ষে উঠে এসেছে তিন বহুজাতিক কোম্পানি রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভারস ও ম্যারিকো।
দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ১০ শতাংশের কাছে ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশ দর উঠেছে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস-জিএইচএল এর। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৬ দশমিক ৬৫ শতাংশ দর বেড়েছে স্যালভো কেমিক্যালসের। ওইম্যাক্স ইলেক্ট্রোডের দর বেড়েছে ৬ শতাংশ।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন কোনো কোম্পানির শেয়ারদর ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারে না। এ দিন সবচেয়ে বেশি দরপতন হয়েছে বিবিএস কেবলস, লিন্ডে বিডি ও ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের।


আরো সংবাদ



premium cement