০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১, ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

সূচকের উত্থানে লেনদেন শুরু পতনে দিন শেষ

সূচক কমেছে ২৬ পয়েন্ট, দর হারিয়েছে ২৬৬টি কোম্পানির শেয়ার
-


টানা ৬ কার্যদিবস উত্থানের পর বিক্রির চাপে গতকাল সূচক পতন দেখল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ ডিএসই। এ দিন দর হারিয়েছে লেনদেনে থাকা দুই তৃতীয়াংশ শেয়ার।
বুধবার সকালে লেনদেনের শুরুতে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ঊর্ধ্বমুখী ছিল। একপর্যায়ে সূচক ৫ হাজার ৬০০ পয়েন্ট অতিক্রম করে। কিন্তু শেষ বেলায় শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায় লেনদেন শেষ হয় ৫ হাজার ৫৬৮ পয়েন্ট নিয়ে, যা আগের দিনের চেয়ে ২৬ পয়েন্ট কম। এর আগে গত ১৩ মে ডিএসইএক্স ৫ হাজার ৬৬৬ পয়েন্ট অতিক্রম করেছিল। মাঝের সময়টায় সূচক নেমেছিল ৫ হাজার ৭০ পয়েন্টে।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি চাকরির কোটাপদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে সাধারণ ছাত্রদের ডাকা অবরোধের কারণে কিছু বিনিয়োগকারী বাজারে আসতে পারেননি, এটা ঠিক। তবে এখন অনলাইনে লেনদেন হওয়ায় অবরোধ খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারেনি পুঁজিবাজারে। মূলত মূনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতায় দিন পরে দর সংশোধন হয়েছে।

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকেই দর সংশোধনের বৃত্তে থাকা পুঁজিবাজার ২০২২ সালের প্রথম ভাগে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে। কিন্তু ওই বছরের ফেব্রুয়ারির শেষে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা, দেশে রিজার্ভে পতন, ডলার সঙ্কটসহ নানা কিছুর প্রভাব পড়ে বাজারে।
এর মধ্যে নতুন অর্থবছর থেকে পুঁজিবাজারে ৫০ লাখ টাকা মূলধনী মুনাফায় কর বসানোর প্রস্তাব ও পরিচালকদের শেয়ার হস্তান্তরে উৎসে কর বাড়ানোর খবরে আবার দরপতন শুরু হয়। অর্থমন্ত্রী বাজেটে এই বিষয়টি ফিরিয়ে আনেন।
বাজেট প্রস্তাবের দ্বিতীয় সপ্তাহের গত ১২ জুন থেকে পুঁজিবাজারে ধীরে ধীরে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে, শেয়ারগুলো হারানো দর একটু একটু করে ফিরে পেতে থাকে।
নতুন অর্থবছরের গত ৬ কর্মদিবসেই সূচকে ২৬৬ পয়েন্ট যোগ হওয়ার পর সপ্তম দিনে এসে সংশোধন হলো। তাতে গত ৭ দিনে সূচকে মোট যোগ হয়েছে ২৪০ পয়েন্ট।

ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বুধবার সকালে কেনার দিকে আগ্রহ ছিল বিনিয়োগকারীদের। এ কারণে প্রথমভাগে লেনদেন বেড়েছিল। সূচকও বাড়ছিল। কিন্তু তারপরই শেয়ার বিক্রি করতে শুরু করেন বড় একটি শ্রেণী। তারা মুনাফা তুলে নেন। এতে শেষবেলায় বিক্রির চাপ বাড়লে সূচক পড়ে যায়। এটি বাজার সংশোধন, ভয়ের কিছু নেই।
দিন শেষে ৯৬৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে ডিএসইতে। যা আগের দিন হাজার কোটি টাকারও বেশি ছিল।
এদিন মোট ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দর বেড়েছে, কমেছে ২৬৬টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ৩০টি কোম্পানির শেয়ারের দর।
এদিন লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ওষুধ ও রসায়ন খাত। মোট লেনদেনের ১৮ শতাংশেরও বেশি ছিল ৩৩টি কোম্পানির। মুনাফা তুলে নেয়ায় এ খাতের ২৪টি কোম্পানিই দর হারিয়েছে, বেড়েছে ৯টির।

দিনের লেনদেনে খাদ্য ও আনুষাঙ্গিক খাতের অবদান সাড়ে ১১ শতাংশ। এ খাতের ২১টি কোম্পানির শেয়ার দর বেড়ে কমেছে ১৫টির। আর তৃতীয় অবস্থানে নেমেছে আগের দিনে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বস্ত্র খাত।
একক কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে বিচ হ্যাচারি লিমিটেডের, এরপরই ছিল ওরিয়ন ফার্মা।
দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা বা ১০ শতাংশের মতো দর বেড়েছে বিতর্কিত জিকিউ বলপেনের শেয়ারের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৮১ শতাংশ দর বেড়েছে দেশবন্ধু পলিমারের। এ ছাড়া দর বৃদ্ধির শীর্ষ দশে নাম লিখিয়েছে ইন্ট্রাকো, গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস-জিএইচএল।
নিয়ন্ত্রক সংস্থার নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন কোনো কোম্পানির শেয়ারদর ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারে না। এদিন সবচেয়ে বেশি দর হারিয়েছে পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস-বিবিএস ও লিন্ডে বিডি।


আরো সংবাদ



premium cement