ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে আইন সংশোধন
দায়িত্ব হস্তান্তরে ব্যর্থ হলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা- বিশেষ সংবাদদাতা
- ০২ জুলাই ২০২৪, ০০:০৫
ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) প্রশাসক নিয়োগের বিধান রেখে ‘স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) (সংশোধন) বিল-২০২৪ পাস হয়েছে। গতকাল জাতীয় সংসদে বিলটি পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো চেয়ারম্যান বা চেয়ারম্যানের দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো সদস্য বা প্রশাসক যদি নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব হস্তান্তর করতে ব্যর্থ হন, তাহলে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হবে। বিদ্যমান আইনে এটি ১০ হাজার টাকা।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত সংসদের অধিবেশনে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো: তাজুল ইসলাম বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করেন। পরে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই-বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো এলাকাকে ইউনিয়ন ঘোষণার পর বা পরিষদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পর কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য সরকার একজন উপযুক্ত কর্মকর্তা বা ব্যক্তিকে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করবে। নির্বাচিত পরিষদ গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রশাসক ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশাসক নিয়োগ হবে কেবল এক মেয়াদের জন্য। কোনো দৈবদুর্বিপাক, অতিমারী, মহামারী ইত্যাদি বিশেষ ক্ষেত্রে নির্বাচিত পরিষদ গঠন করা সম্ভব না হলে সরকার ওই মেয়াদ যৌক্তিক সময় পর্যন্ত বাড়াতে পারবে। এ ছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিব পদটির নাম হবে ইউনিয়ন পরিষদ প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে পংকজ নাথ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্য এবং চৌকিদার দফাদারদের সম্মানী বাড়ানোর দাবি জানান। তিনি বলেন, একজন ইউপি পুরুষ মেম্বার একটি ওয়ার্ডের এবং একই সুবিধাধারী একজন মহিলা মেম্বার তার তিন গুণ বেশি ভোটারের দায়িত্বে থাকেন। নির্বাচনে খরচ করতে হয় তাকে তিন গুণ। অথচ সুযোগ-সুবিধা একই। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি ওয়ার্ডের ভোটার সংখ্যা বেশ কমে রয়েছে, যা নির্বাচন কমিশনকে সমন্বয় করার দাবি জানান। পঙ্কজ নাথ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সব ক্ষেত্রে নারীদের ক্ষমতায়ন করলেও এখানে বৈষম্য রয়েছে। তা ছাড়া ইডপিতে প্রশাসক নিয়োগের সমালোচনা করেন তিনি।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য হামিদুল হক খন্দকার বলেন, সম্মানিটা সম্মানজনক হওয়া উচিত। এখন সরকারি টাকা এবং ইউনিয়ন পরিষদের নিজের আয় থেকে মিলিয়ে চেয়ারম্যানের ভাতা ১০ হাজার টাকা আর সদস্যদের ভাতা ৫ হাজার টাকা। বর্তমান বাস্তবাতায় এটি দ্বিগুণ করা উচিত। তিনি বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিধান আগে আইনে ছিল না। এটার সুবিধা যেমন আছে সরকারের স্বেচ্ছাচারের আশঙ্কাও আছে।
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য গোলাম সরোয়ার বলেন, ইউপি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তারা প্রত্যন্ত এলাকায় কাজ করেন। তাদের সম্মানী খুবই অসম্মানজনক। এটা সম্মানজনক হওয়া উচিত। শক্তি
স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এস এম ব্রাহানী সুলতান বলেন, প্রশাসক নিয়োগের বিষয়টি সাংঘর্ষিক।
বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচনে অনেক টাকা খরচ হয়। তারা এ টাকা কিভাবে তুলবে। তখন দুর্নীতি করে। টিআর কাবিখা বিক্রি করে দেয়। এজন্য দুর্নীতি কমাতে তাদের ভাতা বাড়ানো উচিত।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, প্রশাসক নিয়োগ সাংঘর্ষিক নয়। এটা সাময়িক। নতুন ইউপি গঠনের পর এটা করতে হয়, এখানে আইনের সাথে কোনো সাংঘর্ষিক নয়। আইনি জটিলতা সৃষ্টি করেও পদে থেকে যাওয়ার উদাহরণ আছে। এই বিধান এ ক্ষেত্রেও সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ভাতা বাড়ানোর যৌক্তিকতা আছে।