পুঁজিবাজারে অব্যাহত পতনের ক্ষণিক বিরতি
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০৫
- ডিএসইতে পয়েন্ট ফিরলেও সিএসই পয়েন্ট হারিয়ে চলছে
- ফোর্স সেলের থাবায় থামলেও এখনো ২৬ শতাংশ বিক্রির চাপ
- ১৯ খাতের ১০টিরই বাজার মূলধন বেড়েছে, কমেছে ৯টির
দীর্ঘ দেড় মাস ধরে পুঁজিবাজারে শেয়ারের দর ও মূল্যসূচক হারানোর যে স্রোতধারা চলছিল তাতে ক্ষণিকের বিরতি দিয়েছে। সূচক যৎসামান্য বেড়েছে; কিন্তু কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। লেনদেনে অংশ নেয়া ৪২.৫৩ শতাংশ কোম্পানি দর পতনের শিকার হয়েছে। এদের মধ্যে আবার বেশির ভাগই ছিল ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন এ শ্রেণীর কোম্পানির শেয়ার। বাজারমূলধন ডিএসইর আরো ৩২০ কোটি ৯০ লাখ টাকা চলে গেছে। তবে গতকাল কেনার চাপ ছিল; কিন্তু ছিল না বিক্রেতা। মানে জোর করে বিক্রি থামায় কিছুটা বিরতি। ১৯টি সেক্টরের মধ্যে ১০টি সেক্টরের বাজার মূলধন বেড়েছে। ৯টি সেক্টরের বাজার মূলধন কমেছে। বাজার বিশ্লেষক রয়্যাল ক্যাপিটাল এটাকে সামান্য ইতিবাচক নিষ্প্রভ সময়ে আলোক রেখা বলেছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল শুরুর দিকে ডিএসইর বাজারের অবস্থা ভালো পয়েন্টেই উঠছিল; কিন্তু দিন গড়ার সাথে সাথে সূচকের এই উত্থান কমতে থাকে। বাড়তে থাকে দর পতনের কোম্পানির সংখ্যা। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩.১৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে পাঁচ হাজার ৮৩.১৯ পয়েন্টে। আর ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭.১৩ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১০০.৭৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৯.১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৮১২.১৮ পয়েন্টে। আগের দিনের তুলনায় গতকাল টাকায় ও শেয়ার লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা ছিল কম। ১৫ শতাংশ বিনিয়োগকারী তাদের বাজারকে নীরবে পর্যবেক্ষণ করছিল। ডিএসইতে ৯ কোটি ৮৩ লাখ ৮৮ হাজার ৯৭৪টি শেয়ার, মিউচ্যুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৩৫০ কোটি ৭৯ লাখ ৯৮ হাজার টাকায়। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৪৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকার। ফলে গতকাল ৮০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কমেছে বেচাকেনায়। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৯৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১৬১টির, কমেছে ১৬৮টির বা ৪২.৫৩ শতাংশের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৬টির। দরপতনের মধ্যে ১০০টি ছিল এ শ্রেণীর কোম্পানি। আর বৃদ্ধিতে ১৬১টি কোম্পাানির মধ্যে ৯৮টি হলো এ শ্রেণীর।
ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল লেনদেন হওয়া ৪৫টি কোম্পানির ৮০ লাখ ৭৬ হাজার ৬৯৩টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে, যার গতকালের বাজারমূল্য ছিল ৫০ কোটি ৩৮ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। সেগুলো হলো- স্কয়ার ফার্মা, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স, ডিবিএইচ ফাইন্যান্স এবং ব্রাক ব্যাংক পিএলসি। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৬ কোটি ৬১ লাখ টাকারও বেশি।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টকের প্রধান সূচক সিএএসপিআই গতকাল ১৬.৭৫ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ১৪ হাজার ৫৩৫ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ১০ পয়েন্ট কমে আট হাজার ৭৫২.৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এই স্টক অব্যাহতভাবে সূচক থেকে পয়েন্ট হারিয়েই চলছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২১৭টি কোম্পানির মধ্যে দর বৃদ্ধিতে ছিল ৫৩টি, দরপতনের শিকার ১২০টি এবং দর অপরিবর্তিত ৪৪টির। ২২ লাখ ৫৪ হাজার ২৫০টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড বেচাকেনা হয়েছে ১১ কোটি ২৯ লাখ ৯১ হাজার টাকায়।
বাজার বিশ্লেষণে রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, পুঁজিবাজারের এই ইতিবাচক চেহারা ঘুরে দাঁড়ানো নাকি মুনাফা তুলে নেয়া। উত্তরের অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা। শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) টানা তিন দিন পর ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। সূচক ১৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫০৮৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাজার লেনদেন ১৮ দশমিক ৮ শতাংশ বা ৮১ কোটি টাকা কমে ৩৫০ কোটি টাকায় লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনেদেন শুরু হওয়ার দেড় ঘণ্টার মধ্যে সূচক ৪৩ পয়েন্ট বাড়লেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে বিক্রির চাপ আসতে থাকে। এর মধ্যেও আসন্ন ঈদের ছুটিকে সামনে রেখে অধিকাংশ বিনিয়োগকারী নতুনভাবে বিনিয়োগ করেননি। প্রস্তাবিত বাজেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানির কর হার বৃদ্ধি, ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের মূলধনী লাভের ওপর করারোপ এবং অপ্রদর্শিত আয় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে সুযোগসহ অন্যান্য পুঁজিবাজার সম্পর্কিত বিষয়াদি চূড়ান্ত বাজেট প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পুনঃবিবেচনায় নেবে। ঢাকার শেয়ার বাজারে সূচক ঊর্ধ্বমূখী ছিল এবং মূলধন গত দিনের তুলনায় ০.০৫ শতাংশ কমেছে, যেখানে ভলিউম ১০ শতাংশ এবং টার্নওভার ১৯ শতাংশ কমেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা