বাজেটের নেতিবাচক প্রভাবে ৮৭ শতাংশ শেয়ার ধরাশায়ী
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ১০ জুন ২০২৪, ০০:০৬
- দরপতনে ৮৯ শতাংশ বিক্রির চাপে ছিল বাজার
- ছয় হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা চলে গেল ডিএসইর
- আসছে ডেসেকোর ৬০৭ কোটি টাকার প্রিফারেন্স শেয়ার
বাজেটের পরে প্রথম দিনই লেনদেনে বাজেটের নেতিবাচক প্রভাব বড় আকারে দেখা দিয়েছে। দরপতনের জালে আটকে যায় বেশির ভাগ কোম্পানি। খারাপ পরিস্থিতির কারণে বিক্রির চাপে পড়ে ডিএসই। ৬৮ শতাংশ বিক্রেতা থাকলেও বিক্রির চাপ ছিল ৮৯ শতাংশ। যেখানে ক্রেতার চাপ মাত্র ১১ শতাংশ। দিনের শুরুতে যদিও নেতিবাচক প্রভাব খুব একটা মারাত্মক ছিল ন। কিন্তু সময় যতই গড়াচ্ছিল, নেতিবাচক প্রভাব ততটাই জোরদার হচ্ছিল। দিনশেষে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের আরো বড় হতাশায় ফেলে প্রথম দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে। এ দিকে পুঁজিবাজারে আসছে ডেসেকোর ৬০৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ টাকার প্রিফারেন্স শেয়ার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ারবাজারের জন্য কোনো সুখবর নেই। বরং শেয়ারবাজার বিরোধী বাজেট হয়েছে। বাজেট প্রস্তাবে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের ৫০ লাখ টাকার ওপর ক্যাপিটাল গেইনে ট্যাক্স আরোপ করা হয়েছে। আবার অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির করপোরেট ট্যাক্স হার কমানো হয়েছে। এতে তালিকাভুক্ত ও অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির মধ্যে কর হারের ব্যবধান আরো কমে এসেছে। এর ফলেই বাজেট প্রস্তাবের পর শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। ১৯টি খাতের মধ্যে ১০ খাতের শেয়ার কেনার কেউ ছিল না। লেনদেনের তথ্য থেকে বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬৫.৭৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে পাঁচ হাজার ১৭১.৫৬ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৫.৯৩ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১২০.৮২ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২২.৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৮৩৫.৪৫ পয়েন্টে। ডিএসইতে ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৬৫ হাজার ১২৮টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড হাতবদল হয়েছে ৩৫৭ কোটি ৯০ লাখ ২২ হাজার টাকা বাজারমূল্যে। গত বৃহস্পতিবার বাজেটের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৪২ কোটি ৬০ লাখ টাকার। বাজেটের ঠিক পরের দিন লেনদেন কমলো ১৮৪ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ডিএসইতে ৩৯২টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ দিনেও দর বেড়েছে ৩৩টির, দর কমেছে ২৪০টির বা ৮৬.৭৩ শতাংশের এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির।
ব্লক মার্কেটে গতকাল ৫৫টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির ৬৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮৫৭টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ৪৮ কোটি ৬৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে সাত কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে- মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকো, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, স্কয়ার ফার্মা, সিএন্ডএ টেক্সটাইল, বিএসআরএম লিমিটেড এবং এডভেন্ট ফার্মা লিমিটেড। এই সাত কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৩৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকারও বেশি।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের। কোম্পানিটির পৌনে আট লাখ শেয়ার মোট ১৫ কোটি ৩৯ লাখ ১৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ব্রিটিশ অ্যামেরিকান টোব্যাকোর তিন লাখ ৯ হাজার শেয়ার লেনদেনে হয়েছে ১০ কোটি ৩৮ লাখ ২৪ হাজার টাকার। আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের ৩ কোটি ৫৫ লাখ ৫৭ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএই) ৭৭ লাখ ৮৪ হাজার ৯৮৩৬টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ১০৭ কোটি ৮২ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। বাজেটের দিন লেনদেন হয়েছিল মাত্র ১৪ কোটি ৩২ লাখ টাকার। সিএসইতে ২১৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৩৪টির, কমেছে ১৫১টির এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৩২টি প্রতিষ্ঠানের।
আসছে ডেসেকোর ৬০৭ কোটি টাকার অগ্রাধিকার শেয়ার : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) ৬০৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ টাকার প্রিফারেন্স শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দিয়েছে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গতকাল বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সভা শেষে এ তথ্য জানান বিএসইসির মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি জানান, ডেসকোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৬০৭ কোটি ৬৯ লাখ ৩৫ হাজার ১৩০ নন-কিউমুলেটিভ প্রিফারেন্স শেয়ারের প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। সম্পূর্ণ টাকার শেয়ার সরকারের পক্ষে ইস্যু করা হবে। এ শেয়ারের প্রতিনিধিত্ব করবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব। রেজাউল করিম জানান, সরকারকে দেয়া লভ্যাংশের হার হবে মোট মূলধনের শতকরা হারের ওপর ভিত্তি করে অগ্রাধিকার শেয়ার মালিকদের জন্য কর-পরবর্তী নিট মুনাফার অনুমিত শেয়ারের ১৫ শতাংশ। অর্থাৎ সরকারের অগ্রাধিকার শেয়ার লভ্যাংশ = অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন/(সাধারণ শেয়ার মূলধন + অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন)* কর-পরবর্তী নিট মুনাফা ১৫ শতাংশ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা