পতনে ১৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা একদিনেই উধাও
- হামিদ সরকার
- ২০ মে ২০২৪, ০০:০০
- আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা
- ৮৯ শতাংশ শেয়ারের দর নাই
টানাপতনে নাস্তানাবুদ দেশের পুঁজিবাজার। গতকাল ৯১ শতাংশ বিক্রির চাপে ছিল পুঁজিবাজার। ৮৯ শতাংশ কোম্পানির শেয়ারের দর হারিয়েছে। আতঙ্কে বিনিয়োগকারীরা নিম্ন দরে তাদের হাতে থাকা শেয়ারগুলো ছেড়ে দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে পড়ে। কিন্তু বাজারে ছিল না ক্রেতা। ক্রেতাসঙ্কটে দেশের পুঁজিবাজার। যতটুকুই বিক্রি হয়েছে সেই টাকা আর বাজারে ফিরছে না। ফলে একদিনেই বাজার থেকে ১৩ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা উধাও হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা স্টকের সাত হাজার ৫০ কোটি টাকা এবং চট্টগ্রাম স্টকের ছয় হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা চলে গেছে। গত ২৩ কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে গতকাল সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৮৬.১৩ পয়েন্ট কমে পাঁচ হাজার ৪৩১.২৮ পয়েন্টে নেমে গেছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক ২০৫৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ১৯১.৬৩ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৫.৫৫ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৪৮.৫৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সব ক’টি মূল্যসূচক পয়েন্ট হারানোর পাশাপাশি বাজারমূলধনও হারিয়েছে। ১৩ কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৭৪৭টি শেয়ার, মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ড গতকাল লেনদেন হয়েছে ৪০৯ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৯২৫ টাকা বাজারমূল্যে। যেখানে গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয় ৬৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ২৬৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল, এরচেয়েও কম ৩৬৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়। বাজারমূলধন থেকে একদিনেই চলে গেছে সাত হাজার ৫০ কোটি টাকা। ফলে বাজারমূলধনের আকার এখন সাত লাখ কোটি টাকার নিচে চলে গেছে।
অন্যদিকে, ডিএসইর ব্লক মার্কেটে গতকাল ৫৩টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এসব কোম্পানির এক কোটি ৩২ লাখ ৭২ হাজার ৮১২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৪১ কোটি ৫৭ লাখ এক হাজার টাকায়। সবচেয়ে বেশি লেনদেন হতে দেখা গেছে পাঁচ কোম্পানির শেয়ার। কোম্পানি পাঁচটির মধ্যে রয়েছে- ইস্টার্ন ব্যাংক, এসিআই লিমিটেড, রিলায়ান্স ওয়ান দ্য ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়ান্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ড, নর্দার্ন ইন্স্যুরেন্স এবং বিচ হ্যাচারি লিমিটেড। এই পাঁচ কোম্পানির মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২৪ কোটি ৩২ লাখ টাকারও বেশি।
আর কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের। ব্যাংকটির সাত কোটি ৯৫ লাখ ৩১ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসিআই লিমিটেডের চার কোটি ৬৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৬৯.২৭ পয়েন্ট। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ২২.০৭ পয়েন্ট, সিএই-৩০ সূচক ১৩০.৮৯ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স ১৬৫.২৪ পয়েন্ট হারিয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২২৩টি কোম্পানির মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৮৬টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ১৯১টি শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে আট কোটি ৩৭ লাখ ৭৫ হাজার ৪৪৯ টাকায়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
বাজারের প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষক রয়েল ক্যাপিটাল বিশ্লেষণে বলছে, উদ্বিগ্ন বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজারের অস্থিরতার মধ্যে তাদের হোল্ডিং অফলোড করছে। সাইডলাইনে থাকতে পছন্দ করেছে। গত ট্রেডিং দিনের তুলনায় আজ বাজারের টার্নওভার ৩৯.৫ শতাংশ কমেছে। সারা দিন একটি নি¤œধারায় ছিল। ভলিউম ৩৭ শতাংশ কমেছে এবং টার্নওভার ৪০ শতাংশ কমেছে। ১৯টি খাতের মধ্যে সব খাতই লোকসানে ছিল। ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ৪১.৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ১০.১৬ শতাংশ টার্নওভারের প্রতিনিধিত্ব করে। এসএমই সূচক ৩৬.৪৪ পয়েন্ট কমেছে এবং বাজারটি ১৭.৮ কোটি টাকার টার্নওভার তৈরি করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা