ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা

এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজারে মূলধন বেড়েছে ৮ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১ দশমিক ১১ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ২০০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৯ দশমিক ২২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৪৮ শতাংশ কমে এক হাজার ৯০৯ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৭ দশমিক ১৯ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৬২ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) শূন্য দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৩৬ পয়েন্টে।
বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৯৫ হাজার ১৯১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ছয় লাখ ৮৯ হাজার ৭৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে পাঁচ হাজার ৪৫১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৩৫১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল দুই হাজার ১০৭ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ২৪৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায় বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টি কোম্পানির, কমেছে ২০৩টির ও অপরিবর্তিত আছে ৩৭টির। তবে, ১৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়নি।
এ দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩১ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক শূন্য দশমিক ৪৯ শতাংশ কমে ১১ হাজার ৯০৫ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৭৯৪ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক শূন্য দশমিক ১৩ শতাংশ কমে ৯৪১ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে দুই হাজার ১০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে সাত লাখ পাঁচ হাজার ৪৩৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল সাত লাখ দুই হাজার ৪৬৪ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে দুই হাজার ৯৭১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৩৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। এর আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ২৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে চার কোটি ২৯ লাখ টাকা। বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ২৯৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ১১৯টি কোম্পানির, কমেছে ১৫১টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৭টির।

সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষে থাকা ১০ কোম্পানি : বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) দর পতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে সবচেয়ে বেশি দর কমেছে মিডল্যান্ড ব্যাংকের। সপ্তাহজুড়ে প্রতিষ্ঠানটির দর কমেছে ২২ দশমিক ৩০ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ৯ টাকা ১০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে দুই টাকা ৫০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে ফান্ডটির দর কমেছে ছয় টাকা ৬০ পয়সা।
সাপ্তাহিক দরপতনের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা তুংহাই নিটিংয়ের শেয়ার দর কমেছে ১৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল ৩ টাকা ৭০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার দাম দাঁড়িয়েছে তিন টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর কমেছে ৫০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ দর পতন নিয়ে তালিকার তৃতীয় স্থানে রয়েছে নূরানি ডায়িং। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল চার টাকা ৭০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার দাম দাঁড়িয়েছে চার টাকা ১০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর কমেছে ৬০ পয়সা। সাপ্তাহিক দর পতনের শীর্ষ তালিকায় থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে আরএকে সিরামিকস ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ, অ্যাপোলো ইস্পাত ১০ দশমিক ৬৪ শতাংশ, ভিএফএস থ্রেড ৮ দশমিক ৬০ শতাংশ, ফার্স্ট ফাইন্যান্স ৮ দশমিক ১১ শতাংশ, তাল্লু স্পিনিং ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ৭ দশমিক ৪৬ শতাংশ এবং পিপলস লিজিং ৭ দশমিক ৪১ শতাংশ দর কমেছে।

সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষে উঠা ১০ কোম্পানি : গত এক সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকা সবচেয়ে বেশি দর বেড়েছে এস আলম কোল্ড রোলসের। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়েছে ৫৭ দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল ৮ টাকা ৪০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার দাম দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে পাঁচ টাকা ৬০ পয়সা।
ডিএসইর দর বৃদ্ধির তালিকার দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইবিএল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড শেয়ার দর বেড়েছে ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে কোম্পানিটির দর ছিল তিন টাকা ৪০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার দাম দাঁড়িয়েছে চার টাকা ৫০ পয়সা। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে এক টাকা ১০ পয়সা।
দর বৃদ্ধির শীর্ষ তলিকায় ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ দর বেড়ে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে শাইনপুকুর সিরামিক। আগের সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে প্রতিষ্ঠানটির দর ছিল ১০ টাকা ২০ পয়সা। বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে যার দাম দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৪০ পয়সায়। সপ্তাহের ব্যবধানে কোম্পানিটির দর বেড়েছে তিন টাকা ২০ পয়সা।
সাপ্তাহিক দর বৃদ্ধির শীর্ষ তালিকায় উঠে আসা অন্যান্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে গোল্ডেন হারভেস্ট এগ্রোর ১৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ, ইনটেক অনলাইন ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, ফু-ওয়াং ফুডসের ১৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ, ফার কেমিক্যাল ১৪ দশমিক ৬১ শতাংশ, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ, গোল্ডেন সন ১১ দশমিক ৬৩ শতাংশ এবং সোনারগাঁও টেক্সটাইল ১১ দশমিক ১১ শতাংশ দর বেড়েছে।