শেয়ারবাজার রক্ষায় মহাসমাবেশ করবেন বিনিয়োগকারীরা
বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৯৯ শতাংশ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৫
দেশের শেয়ারবাজারে লুটতরাজ চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। এমন পরিস্থিেিত মতিঝিলে প্রতিবাদ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ক্যাপিটাল মার্কেট ইনভেস্টর অ্যাসোসিয়েশন (বিসিএমআইএ)। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের পুঁজি রক্ষার এই মহাসমাবেশ করা হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি।
গতকাল ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়। আগামীকাল (সোমবার) অনুষ্ঠিত বিনিয়োগকারী মহাসমাবেশে সারা দেশের বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের জন্য সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র মো: নূরুল ইসলাম মানিক, সিনিয়র মুখপাত্র এসএম ইকবাল হোসেন এবং মুখপাত্র মো: ফরিদ আহমেদ। মহাসমাবেশে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়, আগামীকাল দুপুর ২টায় ঢাকার মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে প্রতিবাদ মহাসমাবেশ হবে।
বিনিয়োগকারীদের সমাবেশে অংশ নেবেন এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম মাসুদ, শেয়ারবাজার বিশ্লেষক মো: ফজলুল বারী এবং রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের নেতা মো: দিদারুল আলম ভূঁইয়া।
সংগঠনের প্রধান মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে ৯৯ শতাংশ বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত। এসব বিনিয়োগকারীর পুঁজি রক্ষায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান নেতৃত্ব কোনো ভূমিকা রাখছে না। বরং তারা যেন শেয়ারবাজার ধ্বংসের ষড়যন্ত্রে নেমেছে। তিনি বলেন, আগামী সোমবার আমরা মহাসমাবেশ করব। এই সমাবেশে ব্রোকারেজ হাউজের কর্মী ও বিনিয়োগকারীরা যাতে অংশ না নেয়, সেই হুমকি দিয়ে বিএসইসি থেকে চিঠি দেয়া হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
সিনিয়র মুখপাত্র এসএম ইকবাল হোসেন বলেন, পুঁজিহারা বিনিয়োগকারীদের পুঁজি ফিরিয়ে আনার জন্য যা করার, যেখানে যাওয়ার- আমরা তাই করব। তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে লুটতরাজ চলছে। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব কিছু মেনে নিয়েছিলাম। কিন্তু ৫ আগস্টের পর নতুন আশা জাগে। বিনিয়োগকারীরা ভেবেছিল আওয়ামী লীগের আমলে যে লুটতরাজ হয়েছে, সব কিছু পুষিয়ে আমরা লাভের দিকে যাব।
বিরাট পরিবর্তন হবে, এটাই আশা ছিল। সেটাই হচ্ছিল। তিন দিন বাজার ভালো ছিল। কিন্তু তারপর নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন লোকদের দায়িত্ব দেয়া হলো যারা বিনিয়োগকারীদের ধ্বংস থেকে আরো ধ্বংস করছেন। ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত যা হয়েছে, গত পাঁচ মাসে তার থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাঁচ মাসে ৬৬ হাজার কোটি টাকা শেয়ারবাজার থেকে উধাও হয়ে গেছে।
এস এম ইকবাল হোসেন বলেন, ৩ ফেব্রুয়ারি মহাসমাবেশ করার পর পরিস্থিতির উন্নতি না হলে আমরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেবো। এর আগে কোনো স্মারকলিপি দেইনি। তবে বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অর্থ উপদেষ্টার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের সাথে দেখা করেননি। বরং তিনি আমাদের চিঠি বিএসইসি চেয়ারম্যানের কাছে ফরোয়ার্ড করে দেন।