৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

সপ্তাহের শেষ দিন ঊর্ধ্বমুখী দেশের শেয়ারবাজার

-

চলতি সপ্তাহের বেশির ভাগ সময় দেশের শেয়ারবাজারে নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা লক্ষ্য করা গেছে। তবে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের সামান্য উত্থান হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে।
গতকাল বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, ডিএসই ও সিএসইতে আগের কার্য দিবসের তুলনায় টাকার পরিমাণে লেনদেন বেড়েছে। তবে, উভয় শেয়ারবাজারে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম ছিল নি¤œমুখী। গতকাল দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১১২ পয়েন্টে। দিনশেষে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৩ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৩৩ পয়েন্টে এবং ডিএস-৩০ সূচক ৭ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯০৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
গতকাল ডিএসইতে ৩৯৫টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ১২০টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের। নি¤œমুখী ছিল ২১৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৬টির। গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৮৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের কার্যদিবসে হাতবদল হয়েছিল ৩১৪ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
এ দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৯ দশমিক ৭০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭০০ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৩৮ দশমিক ২৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২৯৪ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৪ দশমিক ৬২ পয়েন্ট কমে ৯২৩ পয়েন্টে এবং সিএসই-৩০ সূচক ১১ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে ১১ হাজার ৮৬৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
গতকাল সিএসইতে মোট ২১১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৬০টি কোম্পানির, কমেছে ১২১টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩০টির। দিনশেষে সিএসইতে ১২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৪ কোটি ১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
ঘুরে দাঁড়াল বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর : বেক্সিমকো গ্রুপের ছাঁটাই করা কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করার জন্য শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ও শাইনপুকুর সিরামিকসের শেয়ার বিক্রি করা হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ছাঁটাই করা শ্রমিকদের পাওনা ৫৫০ কোটি টাকা পরিশোধের জন্য কোম্পানি দুটির শেয়ার বিক্রি করার উদ্যোগ নেবে।
সরকারের এমন সিদ্ধান্তের পর বুধবার এই দুই প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম কমেছে। বুধবার বেক্সিমকো ফার্মার শেয়ার দাম কমেছিল ১ টাকা ৪০ পয়সা বা ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং শাইনপুকুর সিরামিকসের দাম কমেছিল ১ টাকা বা ৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। তবে গতকাল কোম্পানি দুটির শেয়ার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। গতকাল বেক্সিমকো ফার্মার দাম বেড়েছে ৪০ পয়সা বা শূন্য দশমিক ৫৩ শতাংশ। আর শাইনপুকুর সিরামিকসের দাম বেড়েছে ৩০ পয়সা বা ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
তথ্যে দেখা যায়, বেক্সিমকো ফার্মা ও শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ার বিক্রি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি দুই প্রতিষ্ঠান ও কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। দেশের অন্যতম শীর্ষ ওষুধ প্রস্তুতকারক বেক্সিমকো ফার্মার চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় বেড়ে হয়েছে ৪ টাকা ১০ পয়সা। ২০২৩ সালের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ১০ পয়সা।
অর্থবছরের দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছে ৭ টাকা ৮৭ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ৬ টাকা ৬৯ পয়সা। অন্য দিকে, চলতি অর্থবছরের অক্টোবর-ডিসেম্বর প্রান্তিকে শাইনপুকুর সিরামিকের শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ১ পয়সা। অর্থবছরের দুই প্রান্তিকে বা ৬ মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে আয় ছিল ২ পয়সা।
ওমেরা পেট্রোলিয়ামের শেয়ার কিনবে এমজেএল বাংলাদেশ : শেয়ারবাজারে জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ওমেরা পেট্রোলিয়ামের শেয়ার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তথ্যে দেখা যায়, ওমেরা পেট্রোলিয়ামের প্রতিটি শেয়ার ২১ দশমিক ৮০ টাকা করে মোট ২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯১৭টি শেয়ার কিনবে এমজেএল বাংলাদেশ পিএলসি। যার মোট মূল্য হবে ৬০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের মাধ্যমে ওই শেয়ার কেনার পরে ওমেরা পেট্রোলিয়ামের ৭৫ শতাংশ মালিকানা হবে এমজেএল বাংলাদেশ।
১৬ লাখ শেয়ার কিনেছেন এসিআইয়ের চেয়ারম্যান : শেয়ারবাজারের ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এসিআই লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা পূর্বঘোষণা অনুযায়ী শেয়ার ক্রয় সম্পন্ন করেছেন। গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তথ্য মতে, এসিআই লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা সাধারণ মার্কেটের বদলে ব্লক মার্কেট থেকে ১৬ লাখ শেয়ার কিনেছেন। এর আগে গত ২৬ জানুয়ারি তিনি উল্লিখিত পরিমাণ শেয়ার কেনার ঘোষণা দেন। ওই ঘোষণার পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পুঁজিবাজার থেকে তিনি শেয়ার ক্রয় সম্পন্ন করেছেন।
এসিআই লিমিটেডের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৭৬ সালে। ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ৮৭ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। সে হিসাবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ৮ কোটি ৭৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৬৯টি। এর মধ্যে কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৩৬ দশমিক ২৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ৪১ দশমিক ৬৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২২ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement