নামমাত্র উত্থান হলেও দর পতনে বেশির ভাগ কোম্পানি
লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার নিচে- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০০
নামমাত্র উত্থান হলেও দেশের পুঁজিবাজারে দরপতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। ডিএসইতে মূল্য সূচকের উত্থান ঘটলেও অধিকাংশ কোম্পানি দর পতনের কারণে লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। একটু উত্থানের কারণে ডিএসইতে শেয়ার কেনার চাপ বেড়ে এখন ৫১ শতাংশ এবং বিক্রির চাপ ৪৯ শতাংশে এসেছে। দুপুর ১২.১৩ টায় ডিএসইতে সূচক সবচেয়ে বেশি পতনে চলে আসে। দর অপরিবর্তিত ছিল ৭০ শতাংশের বেশি মিউচুয়াল ফান্ডের। বলা যায়, বাজার গতকাল স্থবিরতায় ছিল। সার্বিকভাবে ডিএসইর বাজার মূলধন ০.১৬ শতাংশ কমেছে বলে ডিএসইর বাজার তথ্য থেকে জানা গেছে।
লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা স্টকে লেনদেন শুরুর প্রথম ঘণ্টায় বৃদ্ধি পেয়েছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর। লেনদেন হয়েছে ৯৪ কোটি টাকার বেশি। বেলা ১১টা পর্যন্ত ডিএসইর প্রধান সূচক বা ‘ডিএসইএক্স’ সূচক ৮.৩৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ৫ হাজার ২৩৪ পয়েন্টে। শরিয়াহ সূচক ‘ডিএসইএস’ ০.৪৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান নেয় এক হাজার ১৫৪ পয়েন্টে এবং ‘ডিএসই-৩০’ সূচক ৮.১৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান নেয় এক হাজার ৯৩৪ পয়েন্টে।
আর দিনশেষে ডিএসই ব্রড ইনডেক্স (ডিএসইএক্স) গত মঙ্গলবারের চেয়ে সূচক ২.৬০ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ২৪৫.২৬ পয়েন্টে এবং ডিএসইএস শরিয়াহ সূচক (ডিএসইএস) ৮.৫৯ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ১৬২.৫২ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। আর ডিএসই-৩০ মূল্য সূচক ৮.২৬ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৩৪.৬৪ পয়েন্টে নেমেছে। লেনদেনকৃত ৩৭৯টি কো¤পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১১৩টির বা ২৯.৮১ শতাংশ, দর কমেছে ১৮৩টির বা ৪৮.২৮ শতাংশ এবং দর অপরিবর্তিত রয়েছে ৮৩টি কোম্পানির শেয়ার। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৭৯টি কো¤পানির ১২ কোটি ৬৬ লাখ ৫১ হাজার ৬৭১টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে ৩৯৩ কোটি ৭ লাখ ৫১ হাজার ৫৪৬ টাকা বাজার মূল্যে। যেখানে মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ৫১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকার। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ১২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ২৪ শতাংশ।
লেনদেন, দর বৃদ্ধি ও পতনে শীর্ষ ১০: ডিএসইতে গতকাল টাকায় লেনদেনের ভিত্তিতে শীর্ষ ১০টি কো¤পানি হলো:- তৌফিকা ফুড, ইসলামী ব্যাংক, আইসিবি, স্কয়ার ফার্মা, ফাইন ফুডস, সোনালি আঁশ, অগ্নি সিস্টেম, বেক্সিমকো ফার্মা, বীচ হ্যাচারী ও মিডল্যান্ড ব্যাংক। আর দর বৃদ্ধির শীর্ষ ১০টি কো¤পানি হলো:- দেশবন্ধু পলিমার, কুইনসাউথ টেক্সটাইল, আইসিবি, ফাইন ফুডস, আইএসএন লি:, ডিবিএইচ, ম্যাকসন স্পিনিং, ন্যাশনাল হাউজিং ফাইন্যান্স, আইসিবি এএমসিএল ২য় মি. ফা. ও ইসলামিক ফাইন্যান্স। এ ছাড়া দর পতনের শীর্ষ ১০টি কো¤পানি হলো:- শাইনপুকুর সিরামিকস, স্টাইলক্র্যাফট, বিডি থাই ফুড, সোনার বাংলা ইন্সু:, সাফকো স্পিনিং, রংপুর ফাউন্ড্রি, সিটি জেনারেল ইন্সু:, প্রাইম ইন্সু:, সোনালি আঁশ ও বিজিআইসি।
সিএসইতে সবগুলো সূচকের অব্যাহত পতন: চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সবগুলো সূচকই আগের দিনের মতোই দর পতন অব্যাহত ছিল। সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ১৮.৯৩ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২০.৪১ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স ১১.০৫ পয়েন্ট। লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৮টি কোম্পানির মধ্যে ৬০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০১টির বা ৫১.০১ শতাংশের এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ২৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫২২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেন হয়েছে ছয় কোটি ২৩ লাখ ৯১ হাজার ১৫৪ টাকায়। মঙ্গলবারের চেয়ে এই লেনদেন প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। ওই দিন লেনদেন হয় ১১ কোটি ১০ লাখ টাকার।
প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষণ : দিনের লেনদেন বিশ্লেষণে রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, বাজারে গতকাল কিছুটা স্থবিরতা বিরাজ করেছে। ডিএসইর বাজারে প্রধান সূচক প্রায় অপরিবর্তিত থাকলেও লেনদেন হ্রাস পেয়েছে। গত ৩ দিন টানা বাজার নিম্নমুখী থাকার পর গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) কিছুটা অপরিবর্তিত ছিল। তবে বিনিয়োগকারীদের লেনদেনে তেমন আগ্রহ না থাকায় বাজারে লেনদেন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ডিএসইএক্স ২.৬ পয়েন্ট বেড়ে ৫২৪৫ পয়েন্টে শেষ হয়। অপর দিকে, বাজার লেনদেন ১২২ কোটি টাকা কমে ৩৯৩ কোটি টাকা হয়েছে। ডিএসইতে ভলিউম ২৫ শতাংশ এবং টার্নওভার ২৪ তাংশ কমেছে। ১৯ টি সেক্টরের মধ্যে ৭টি সেক্টরের শেয়ার মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১২টি সেক্টরের শেয়ার মূল্য হ্রাস পেয়েছে। ফ্লোর প্রাইসে ১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ব্লক মার্কেটে ১৮.৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা মোট লেনদেনের ৪.৮ শতাংশ। এসএমই বাজার সূচক (ডিএসএমইএক্স) ২.৮৪ পয়েন্ট কমে ১০১৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮.১ কোটি টাকা যা গত দিনের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।