১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ৯ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
বিশ্ব ক্ষুধা সূচক

নেপাল-বাংলাদেশেরও পেছনে ভারত

-


বিশ্ব ক্ষুধা সূচক বা গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২৪-এ ভারতের অবস্থান ১২৭ দেশের মধ্যে ১০৫তম। ভারতের যা অবস্থা তাকে গুরুতর বলে অভিহিত করা হয়েছে প্রতিবেদনে। ভারতের অবস্থান পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের উপরে হলেও বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, মিয়ানমার ও নেপালের মতো দেশের পেছনে। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্সে ভারতের স্কোর ২৭.৩। রিপোর্টে বলা হয়েছে ভারতে ক্ষুধার যে পরিস্থিতি তা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। ২০১৬ সালে ভারতের এই ইনডেক্স ছিল ২৯.৩। ২০০০ সালে এটি ছিল ৩৮.৪ ও ২০০৮ সালে এটি ছিল ৩৫.২। এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ক্ষুধার সূচক ১০৯। ভারতের পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে শিশুর অপুষ্টিকে মনে করা হচ্ছে। ভারতে শিশু মৃত্যুর হারও অনেক বেশি। তবে ২০০০ সাল থেকে এ দিকে অনেকটাই উন্নতি করেছে ভারত। তার পরেও ভারতের কাছে এটি একটি বড় ইস্যু।
অবশ্য বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশও তিন ধাপ পিছিয়েছে অর্থাৎ পরিস্থিতি আগের চেয়ে খারাপ হয়েছে। বাংলাদেশের অবস্থান এ বছর ৮৪তম। সূচক অনুসারে, বাংলাদেশ বর্তমানে ‘মাঝারি মাত্রার’ ক্ষুধা মোকাবেলা করছে। বাংলাদেশের এবারের স্কোর ১৯ দশমিক ৪। গত বছর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ১৯ এবং ১২৫ দেশের মধ্যে অবস্থান ছিল ৮১তম।
২০২৪ সালের যে গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স প্রকাশিত হয়েছে তাতে ২০১৬ থেকে পরিস্থিতি খানিকটা ভালো বলে দেখা যায়। তবে ১২৭টি দেশের মধ্যে ৪২ দেশে ক্ষুধা এখনও যথেষ্ট উদ্বেগজনক। রিপোর্টে বলা হয়েছে বিশ্বে ক্ষুধার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন, লিঙ্গ বৈষম্যের সঙ্গে। শুক্রবার গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (জিএইচআই) বা বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক ২০২৪ প্রকাশ করা হয়। প্রতি বছর আয়ারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা কনসার্ন ওয়ার্ল্ডওয়াইড ও জার্মান সংস্থা ওয়েলথ হাঙ্গার হিলফে যৌথভাবে এ সূচক প্রকাশ করে।

কোনো দেশে অপুষ্টির মাত্রা, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের উচ্চতা অনুযায়ী কম ওজন, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের বয়স অনুযায়ী কম উচ্চতা এবং শিশুমৃত্যুর হার এই চারটি মানদণ্ড বিবেচনা করে ক্ষুধার মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বৈশ্বিক, আঞ্চলিক বা জাতীয় যেকোনো পর্যায়ে ক্ষুধার মাত্রা নির্ণয় করতে সূচকগুলো ব্যবহার করা হয়।
বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে কোনো দেশের স্কোর শূন্য হলে বুঝতে হবে, সেখানে ক্ষুধা নেই। আর স্কোর ১০০ হওয়ার অর্থ, সেখানে ক্ষুধার মাত্রা সর্বোচ্চ। ক্ষুধা সূচক ১০ থেকে ১৯ দশমিক ৯-এর মধ্যে থাকলে ওই দেশ ‘মাঝারি মাত্রার’ ক্ষুধায় আক্রান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। সে দিক থেকে বাংলাদেশ চলতি বছরের আগে ক্ষুধা মেটানোর ক্ষেত্রে ধারাবাহিক উন্নতি করেছিল। ২০০০ সালে বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৩৩ দশমিক ৮। গত বছর ছিল ১৯। যদিও এ বছর তা বেড়ে ১৯ দশমিক ৪ হয়েছে।
ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ নেপাল (৬৮তম অবস্থান, স্কোর ১৪ দশমিক ৭) ও শ্রীলঙ্কা (৫৬তম, ১১ দশমিক ৩)। তবে প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে রয়েছে। ৬ ধাপ এগিয়ে এ বছর ভারতের অবস্থান ১০৫তম, স্কোর ২৭ দশমিক ৩। সাত ধাপ পিছিয়ে পাকিস্তানের অবস্থান ১০৯তম, স্কোর ২৭ দশমিক ৯। দুই ধাপ পিছিয়ে আফগানিস্তানের অবস্থান ১১৬তম, স্কোর ৩০ দশমিক ৮।

জিএইচআই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ায় সার্বিকভাবে ক্ষুধা এখনো গুরুতর অবস্থায় রয়েছে। নিম্নমানের খাদ্য, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্রমবর্ধমান প্রভাবের কারণে এ অঞ্চলে অপুষ্টি বাড়ছে; বিশেষ করে শিশুদের অপুষ্টির সমস্যা উচ্চ স্তরে রয়ে গেছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের জনসংখ্যার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ অপুষ্টির শিকার এবং ২ দশমিক ৯ শতাংশ শিশু তাদের জন্মের পর পাঁচ বছরে পৌঁছানোর আগেই মারা যায়। দেশের ২৩ দশমিক ৬ শতাংশ শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি অপুষ্টির কারণে থমকে গেছে। আর অপুষ্টির কারণে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১১ শতাংশ শিশুর শারীরিক বিকাশ নষ্ট হয়েছে; অর্থাৎ উচ্চতার অনুপাতে তাদের ঠিকমতো ওজন বাড়ছে না।
প্রতিবেদনের উপসংহারে বলা হয়েছে যে, ২০৩০ সালের মধ্যে জিরো হাঙ্গার জাতিসঙ্ঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা খুব কম দেখা যাচ্ছে। পর্যাপ্ত খাদ্যের অধিকারের গুরুত্বের উপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বারবার জোর দেয়া সত্ত্বেও, প্রতিষ্ঠিত মান এবং বাস্তবতার মধ্যে একটি উদ্বেগজনক বৈষম্য রয়ে গেছে। বিশ্বের অনেক অংশে এখনো খাদ্যের অধিকারকে স্পষ্টভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পর্যাপ্ত খাবারের অভাবে প্রতিদিন প্রায় ৭৩৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার সম্মুখীন হয়, যেখানে প্রায় ২.৮ বিলিয়ন মানুষ পুরোপুরি স্বাস্থ্যকর খাদ্য বহন করতে পারে না।
আফ্রিকার কিছু দেশ এ সূচকে চরম প্রান্তে ‘শঙ্কাজনক’ বিভাগের অধীনে রয়েছে, গাজা এবং সুদানের যুদ্ধ ব্যতিক্রমী খাদ্য সঙ্কটের কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া কঙ্গো, হাইতি, মালি এবং সিরিয়াসহ অনেক দেশে সঙ্ঘাত এবং গৃহযুদ্ধ খাদ্যসঙ্কট তৈরি করছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
মুখ থুবড়ে পড়েছে ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম’ কার্যক্রম সবার জন্য সমান অধিকারের বাংলাদেশ গড়তে চাই : ড. ইউনূস বঞ্চিত কর্মকর্তাদের চুক্তি ভিত্তিক নিয়োগে বৈষম্য এস আলমের দুই লাখ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বিপাকে ব্যাংকগুলো ইসরাইলের সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হিংসা ও বিভক্তির কবর রচনা করে জাতীয় ঐক্য চাই : ডা: শফিক আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনা অব্যাহত রাখবে বাংলাদেশ দুবাইয়ে প্রোটিয়াদের কাছেও হারল টাইগ্রেসরা নিহন হিদানকিওর নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ে ইউনূসের অভিনন্দন ভারতের রেকর্ড : হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সাথে পররাষ্ট্র সচিবের সিরিজ বৈঠক

সকল