২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বেশির ভাগ কোম্পানি দরপতনে কেনাবেচার চাপ সমান সমান

-

- ডিএসইতে ৫১.৬৩ শতাংশ ও সিএসইতে ৫৫.৩৩ শতাংশ দরপতন
- ডিএসইর মূলধন কমেছে ২১ কোটি টাকার বেশি

দেশের পটপরিবর্তন এবং বিএসইসিতে পরিবর্তনের পরও তার কোনো সুফল পুঁজিবাজার পাচ্ছে না। উল্টো পতনের জালে আটকে আছে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার মিউচুয়াল ফান্ড। হতাশায় লাখ লাখ বিনিয়োগকারী। তবে ডিএসইর দুইটি সূচক পয়েন্ট বেশি অঙ্কের ফিরে পেয়েছে। গতকালও পতনের হাত থেকে দুই বাজারের গড়ে ৫৩ শতাংশ কোম্পানি রেহাই পায়নি। লেনদেনে টাকার পরিমাণ ও শেয়ার হাতবদলের পরিমাণও কমেছে। ডিএসইর বাজারমূলধন থেকে ২১ কোটি ২৮ লাখ টাকা চলে গেছে। ৬১ শতাংশ বিক্রেতা থাকলেও বিক্রির চাপ ছিল ৫০ শতাংশ। আর ২৮ শতাংশ ক্রেতার বিপরীতে শেয়ার কেনার চাপ ছিল ৫০ শতাংশ। অর্থাৎ কেনাবেচার চাপ সমান সমান।
দিনের লেনদেনের তথ্য থেকে বাজারবিশ্লেষণে দেখা যায়, শুরু থেকে বাজারে সূচকের গতিপথ ইতিবাচকই ছিল। তবে দিন গড়াতে ইতিবাচকেও কমতে থাকে উত্থানে পয়েন্টের হার। ডিএসইতে বেলা ১১.১০টায় প্রধান সূচক ৫৭.৭৪ পয়েন্টে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। বাকি দু’টি সূচকও ঊর্ধ্বমুখী ছিল। লেনদেন হয় প্রথম ঘণ্টায় ১৬৫ কোটি টাকার, যেখানে শেয়ারের পরিমাণ ছিল সাত কোটি ১৭ লাখ ৬৩ হাজারটি। ২৩৩টি কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড ছিল দর বৃদ্ধিতে। তবে সময় গড়াতে পয়েন্ট কমতে থাকে সূচকের। চট্টগ্রাম স্টকেরও ঊর্ধ্বমুখী চিত্র ছিল। তবে তখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ৭৪টি কোম্পানির মধ্যে ৩৬টিই দর পতনের জালে। সোয়া তিন কোটি বেশি টাকার লেনদেন হয়। দুই বাজারে দিন যতই গড়াতে থাকে সূচক থেকে পয়েন্ট ছুটে চলে যায়। তবে চট্টগ্রামের বাজারে পয়েন্ট হারানোর সূচকের সংখ্যাই বেশি।
ঢাকা স্টকের প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ১৮.৯৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬৫৮.১১ পয়েন্টে এবং ‘ডিএসইএস’ বা শরিয়াহ সূচক ৯.১৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২৭১.০৯ পয়েন্টে উন্নীত হয়েছে। আর ‘ডিএসই-৩০’ সূচক ২ পয়েন্ট হারিয়ে এখন ২ হাজার ৬২.৯৩ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইতে বিশ কোটি ছয় হাজার ৪৭২টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড মোট ৪৮১ কোটি ৩১ লাখ ৯৪ হাজার টাকায় হাতবদল হয়েছে গতকাল। যেখানে গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৫৩০ কোটি ৮৫ লাখ টাকার। ফলে লেনদেন কমেছে ৪৯ কোটি ৫৪ লাক টাকা। ডিএসইতে ৩৯৭টি লেনদেনে অংশ নিলেও দর বেড়েছে ১৫৩টির, কমেছে ২০৫টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৯টির।

এ দিকে ডিএসইর ব্লক মার্কেটে ২৭টি কোম্পানির ২৫ লাখ ৫৫ হাজার ২২৩টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে মোট ৮ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার টাকায়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাঁচ প্রতিষ্ঠানের লেনদেন হয়েছে বলে ডিএসইর দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- এডিএন টেলিকম, আলহাজ টেক্সটাইল, ন্যাশনাল ব্যাংক, বেক্সিমকো ও আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের মোট শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৫ কোটি ২২ লাখ টাকারও বেশি। আর প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে এডিএন টেলিকমের। কোম্পানিটির ২ কোটি ৮ লাখ ৩৪ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আলহাজ টেক্সটাইলের ৯৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আর ৮৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন করে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে বেক্সিমকোর ৭৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকার এবং আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৫০ লাখ ৯২ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
এ দিকে ডিএসইতে লেনদেনের ভিত্তিতে (টাকায়) প্রধান ১০টি কোম্পানি হলো, জিপি, ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, এমজেএল বিডি, এসআইবিএল, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, জিআইবি, ইবনে সিনা ফার্মা, সোনালি আঁশ ও এডিএন টেলিকম। দর বৃদ্ধির শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো, খান ব্রাদার্স পিপি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, দেশবন্ধু পলিমার, শাইনপুকুর সিরামিকস, এডিএন টেলিকম, আইসিবি অগ্রণী ব্যাংক মি. ফা-১, জিআইবি, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ও এনসিসি ব্যাংক মি. ফা-১। দর কমার শীর্ষে প্রধান ১০টি কো¤পানি হলো, কাট্টালি টেক্সটাইল, বিডি থাই, সেন্ট্রাল ফার্মা, ভিএফএস থ্রেড, জিএসপি ফাইন্যান্স, পিডিএল, ফরচুন সুজ, মিরাকেল ইন্ডাস্ট্রিজ, এডভেন্ট ফার্মা ও অলিম্পিক এক্সেসরিজ।

অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টকের তিনটি সূচকই পয়েন্ট হারিয়েছে। সিএসই-৩০ সূচক ৫৭.১০ পয়েন্ট, সিএএসপিআই ২৭.৩৬ পয়েন্ট এবং সিএসসিএক্স ৩.৯৬ পয়েন্ট হারিয়েছে। ২০৬টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিলেও দর পতনের শিকার ৫৫.৩৩ শতাংশ বা ১১৪টি, দর বৃদ্ধিতে মাত্র ৭৫টি এবং দর অপরিবর্তিত ১৭টি কোম্পানির। ত্রিশ লাখ ৩৯ হাজার ১৯৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড হাতবদল হয়েছে আট কোটি ৭৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬৪২ টাকা বাজারমূল্যে, যা গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা কম।
মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়েছে: এ দিকে মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) মনিটরিংয়ে উঠে এসেছে। ফলে কোম্পানিটির শেয়ারে বিনিয়োগের আগে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হওয়া উচিত বলে প্রতিষ্ঠানটি সতর্কবার্তা জারি করেছে। ডিএসই জানিয়েছে, কোম্পানির শেয়ার দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে ডিএসই কর্তৃপক্ষ কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠায়। ডিএসইর চিঠির উত্তরে কোম্পানিটির পক্ষ থেকে জানিয়েছে, কোনো রকম অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারটির দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত ৯ সেপ্টেম্বর মিডল্যান্ড ব্যাংকের শেয়ার দাম ছিল ২৭ টাকা ১০ পয়সায়। যা ২৬ সেপ্টেম্বর লেনদেন শেষে ক্লোজিং দাম হয়েছে ২৮ টাকায়। কোম্পানিটির শেয়ার দাম এভাবে বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।
মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তার শেয়ার বিক্রির ঘোষণা: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত মার্কেন্টাইল ব্যাংক পিএলসির একজন উদ্যোক্তা ৫৮ লাখ শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দিয়েছেন বলে ঢাকা স্টক একেচেঞ্জ (ডিএসই) তথ্যটি প্রকাশ করেছে। ডিএসই বলছে, কোম্পানিটির উদ্যোক্তা ডা: এ কে এম শাহেদ রেজার হাতে থাকা মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ৪ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৮৭ শেয়ারের মধ্যে ৫৮ লাখ শেয়ার বিক্রি করবেন। আগামী ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ডিএসইর পাবলিক ও ব্লক মার্কেটে বিদ্যমান বাজার দরে ঘোষিত শেয়ার বিক্রি সম্পন্ন করবেন।
জেড থেকে বি শ্রেণীতে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার: তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন পিএলসির বি ক্যাটাগরি উন্নীত করা হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘জেড’ ক্যাটাগরি থেকে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে। ডিএসই বলছে, গত ৩০ জুন, ২০২৩ সালের সমাপ্ত অর্থবছরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৫ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়ায় ‘বি’ ক্যাটাগরিতে উন্নীত হয়েছে কোম্পানিটি। গতকাল থেকে কোম্পানিটি ‘বি’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করে। তবে ক্যাটাগরি পরিবর্তনের কারণে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে কোম্পানিটিকে ঋণসুবিধা দিতে ব্রোকার হাউজ এবং মার্চেন্ট ব্যাংককে নিষেধ করেছে ডিএসই, যা গতকাল থেকে কার্যকর হবে।

এনভয় টেক্সসের ৩৬ লাখ শেয়ার কিনেছে কসমোপলিটন: আর তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনভয় টেক্সটাইলস লিমিটেডের ৩৬ লাখ শেয়ার কিনেছে কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে। ব্লক মার্কেট থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী প্রচলিত বাজারমূল্যে এনভয় টেক্সটাইলের ৩৬ লাখ শেয়ার কিনে নেয় কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড, যা কোম্পানিটির মোট শেয়ারে ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। ডিএসই তথ্য জানা যায়, এনভয় টেক্সটাইলের পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সুনীল দৌলতরাম দরিয়ানানি, যারা কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
বাজারবিশ্লেষণে প্রাতিষ্ঠানিক বিশ্লেষক রয়্যাল ক্যাপিটাল বলছে, ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল ইস্যু মিলিতভাবে সূচক বাড়াল। পুঁজিবাজারের সংস্কারের জন্য বিএসইসি বাজারের সংশ্লিষ্ট পক্ষের সাথে বৈঠকের আয়োজনের ঘোষণা এবং সূচকের ৫ হাজার ৬২০ পয়েন্টের শক্তিশালী টেকনিক্যাল সাপোর্ট গতকাল সম্মিলিতভাবে বাজারের পতনকে থামিয়েছে। ডিএসইএক্স ১৮ পয়েন্ট বাড়ার বিপরীতে লেনদেন কমেছে ৪৯ কোটি টাকা। ঢাকার শেয়ার বাজারের প্রধান সূচক (ডিএসইএক্স) ঊর্ধ্বমুখী ছিল। মূলধন গত দিনের তুলনায় ০.০০৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যেখানে ভলিউম ১৩ শতাংশ এবং টার্নওভার ৯ শতাংশ কমেছে। ১৯টি সেক্টরের মধ্যে আটটি সেক্টরের বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ১১টি সেক্টরের বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement
সংঘর্ষে কোনো শিক্ষার্থী নিহত হয়নি, অপপ্রচার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ ডিএমপির সিলেটে কর্মবিরতিতে ১১ হাজার চা-শ্রমিক, ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় গ্রেফতার সোহরাওয়ার্দীর পর কবি নজরুল কলেজও বন্ধ ঘোষণা কুলাউড়া রাস্তা জবর দখলের চেষ্টা : প্রতিপক্ষের হামলায় আহত ৭ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অ্যাকশনে গেলে আরো রক্তপাত হতো : আসিফ মাহমুদ দেবীগঞ্জে পরিত্যক্ত কাউন্টার থেকে যুবকের লাশ উদ্ধার নারায়ণগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড আদালতে আ’লীগ নেতার ওপর ডিম নিক্ষেপ, কারাগারে প্রেরণ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উদযাপন বিরল রোগে আক্রান্ত আনহা বাঁচতে চায়

সকল