০৬ অক্টোবর ২০২৪, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ২ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

মুলাদীতে খান বাড়ির লাল টুকটুকে গেট ফুল দৃষ্টি কেড়ে নেয় পথিকের

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বরিশাল জেলার মুলাদী পৌর সদরে খান বাড়ির সাবেক সংসদ সদস্য আঃ জলিল খানের নাতি ও সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. কামরুল আহসান খানের ছেলে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান ডা: তৌহিদুল আহসান খানের বাড়ির গেটটি সাজানো রয়েছে গেট ফুল আর বিভিন্ন প্রজাতির ফুল আর ফলের গাছ দিয়ে। গেটটির দিকে তাকালেই দৃষ্টি কেড়ে নেয় পথিকদের।

বাগান বিলাসীতে রয়েছে কাঞ্চন, জবা, রঙ্গণ, বিচিত্রা, চেরি, জারুল, শিউলি, টিকমা, পাউডার পাম্প, লতাপারুল, কাঠগোলাপ, চন্দ্রপ্রভা, রাধাচুড়া, মর্নিংরোলি, চাইনিজ টগর, রক্তকরবী, ভেকিফুল, বকুল ফুল, নীল টগর ও পান্থপাদক প্রভৃতি ফুল গাছ। চারিদিকে ছিটিয়ে আছে আরো নানা প্রজাতির ফুল গাছ। প্রতিদিন দর্শনীদের ভিড় জমেই থাকে। বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে যাবার সময় পথিকদের চোখ কেড়ে নেয় বিভিন্ন ফুল আর ফলের বাগানে। ইচ্ছে আর অনিচ্ছায় হোক থমকে দাঁড়াতে হয় ক্ষণিকের।

ইংরেজিতে ‘বোগেইনভিলিয়া’। দ্বিপদ নাম ‘Bougainvillea spectabilis’। বাহারি ফুল গাছ। দক্ষিণ আমেরিকায় উৎপত্তি। ফরাসি আবিস্কারক ‘লুই অটেইন ডি বোগেইনভিলিয়ার নাম অনুসারে তার প্রিয় গাছটির নামটি রাখা হয়েছে।

কান্ডটি চিকন, ফুলের সারি প্রসারিত। মনোমুগ্ধকর সারা দুনিয়াতেই। হলুদ, সাদা, গোলাপি, কমলা ও লাল বিভিন্ন রঙের ফুলের মালা সাজায়। বাড়ির সৌন্দর্য্য বহুগুণে বাড়াতে এই ফুলের জুড়ি নেই। অথচ জন্মলাভ করে তারা লতাজাতীয় গুল্ম হয়ে।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন বিলাসী ও অভিজাতের বাড়িতে ফুলগাছটি প্রথম দেখেছিলেন। রঙের রূপে মুগ্ধ কবিগুরু। কবি মনের মাধুরী মিশিয়ে নাম রেখেছেন ‘বাগানবিলাস’ মানে বাগানের বিলাসিতা, বাগানের শোভা, থাকে সে বাড়ির দ্বারে। অভিজাত ও বিলাসীদের বাড়িতেই তখন ফুলগাছটি দেখা যেত। এখনো তাই।

রঙিন কাগজের মতো গাছটির ফুলগুলো। বিভিন্ন রঙের ফুলগুলো জন্ম দেয় বলে তাকে ফুলের নামে মিলিয়ে ‘কাগজ ফুল’ বা ‘কাগজের ফুল’ও ডাকেন অনেকে। অনেকে গেটের পাশের ফুলের গাছ হিসেবে ‘গেট ফুল’ বলেন। নানা দেশে গৃহী মানুষের বাড়ির ধারে, প্রবেশদ্বারে শরীরটি বিছিয়ে বিরাট ফুলের সারি দিয়ে রঙ ছড়িয়ে মন রাঙায়।

খান বাড়ির গেটের মুখে গন্ধহীন ভালোবাসার বর্ণালী ভুবন গড়েছে বাগানবিলাস। টকটকে রঙে গোলাপিতে দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে পথচারিদের। তারা মুগ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন, গল্পে মাতেন খনিকের।

ডা: তৌহিদুল আহসান খানের বাড়ির গেটটিতে জন্মে আছে বাগানবিলাস। রঙের রক্তিমতা এখন তার উজ্জ্বলতায় নতুন দর্শনীয়তা হয়েছে, দর্শনীয় স্থানের তালিকায় বাগানবিলাসের নীচ ও আশপাশগুলো রাখতেই হচ্ছে।

কেউ কেউ বলেন, ‘স্যারের বাংলা এলাকাটিকেই বদলে গিয়েছে বাগানবিলাস, বাড়ি নয়, ফুলের সারিই হয়েছে আনন্দময়তা। যারাই দেখতে আসেন তাদের মধ্যে কেউ কেউ ঝরে থাকা সজীব ফুল পরম যত্নে কুড়িয়ে তুলে নিচ্ছেন কোঁচড়ে, কারো পড়ার মেয়েদের ব্যাগে বাগানবিলাস জায়গা নিচ্ছে, আর সেলফির তো কোনো বিরাম নেই।

পথচারী সিরাত ও সামিদ বলেন, ‘আমরা ঘুরতে এসে দেখি খান বাড়ির গেটে লাল ফুলের সমাহার। আমাদের নজর কেড়ে নিল গেট ফুলে। তাই কাছে এসে না দেখে যেতে পারি নাই। তাই দু’চোখে মেলে দেখে গেলাম লাল টকটকে গেট ফুল। যা সহজে গ্রামের বাড়িতে চোখে পড়ে না।’

ডা: তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট থেকেই ফুল ও ফল গাছের প্রতি পাগল ছিলাম তাই নিজের বাড়ি আর পুরনো বাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্যই এই গাছ-গাছালি লাগানো। তিনি গাছ লাগিয়েই ঐতিহ্য ধরে রাখেননি। মানুষের সেবার দেয়ার মধ্য দিয়ে তিনি বাড়ি ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। তিনি বাড়ি আসলে বিনা ভিজিটে রোগীদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে এ ব্যাপারে সহযোগীতা করেন আসছেন আমার সহধর্মীনি মায়মুনা আক্তার হোমা। এছাড়াও সার্বক্ষণিক বাগানের পরিচর্যা করে থাকেন ভাইয়ের ছেলে বিশিষ্ট সমাজ সেবক জাতীয় পর্যায়ের রেফারি মো: দিদারুল আহসান খান (দিদার)।’


আরো সংবাদ



premium cement