কুয়াকাটায় প্রসব করাতে গিয়ে আয়ার হাতে নবজাতকের মৃত্যু
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৭ জুন ২০২৪, ২৩:১৪
কুয়াকাটার মৎস্যবন্দর মহিপুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রসব করাতে গিয়ে আয়ার হাতে নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে মহিপুর থানা সদরের কেয়ার মডেল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে।
স্বজনদের অভিযোগ চিকিৎসকের দায়িত্ব নেয়া ওই আয়া নিজেই প্রসূতির ডায়াগনইসিস রিপোর্ট পর্যালোচনা করে স্বাভাবিক ডেলিভারির আশ্বাসও দিয়েছেন। অপরদিকে ডাক্তার না ডেকে নিজেই গ্রাম্য পদ্ধতিতে ডেলিভারী করতে গিয়ে নবজাতকের এমন মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এখবর ছড়িয়ে পড়লে প্রসূতির স্বজনরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এ সংবাদে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থালে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই আয়া পারভীন এবং নার্স মানসুরাকে থানায় নেয়া হয়েছে।
মহিপুর থানা পুলিশ ও স্বজনরা জানায়, মহিপুর থানা সদর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের আনোয়ারের স্ত্রী সন্তান সম্ভাবা শারমিন বেগমকে (৩৩) বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় ওই হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ সময় পারভীন নামে ওই আয়া অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে ডেলিভারি করান। ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স মানসুরা (৩০) আসার আগেই নবজাতক মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর ডাক্তারকে ফোন করা হলে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তিনি হাসপাতালে পৌঁছে নবজাতকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
নবজাতকের বাবা আনোয়ার আরো জানান, তার দুই মেয়ে সন্তানের পর এই ছেলে সন্তানের জন্ম হয়েছে। ছেলে সন্তানের আশায় তিনি তৃতীয় সন্তান নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তার সেই আশা অনুযায়ী আল্লাহ ছেলে সন্তান দিলেও আয়া আমার সন্তানকে মেরে ফেলেছে। আমরা এর বিচার চাই।
অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকবার ঘোষণা থাকলেও ওই সময় কোনো চিকিৎসক ছিলেন না।
প্রসূতি শারমিন এবং তার স্বামী আনোয়ার ও তার স্বজনরা অভিযোগে বলেন, এভাবে আর যেন কোনো মা ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সন্তান হারা না হয়। তাদের দাবি এ হাসপালে এর আগেও ডেলিভারি করার সময় দু’টি নবজাতক মারা যায়।
হাসপাতালের আয়া পারভীন ও নার্স মানছুরা জানান, প্রসূতির ডায়াগনইসিস রিপোর্ট অনুযায়ী নরমাল ডেলিভারি হবার কথা, হয়েছেও তাই। এজন্য তারা ডাক্তারকে ডাকেননি। তবে ডাঃ ছাড়া কিভাবে এমন ঝুকিঁ তারা নিলেন তার কোন সঠিক দিতে পারেননি তারা।
ওই হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. পপি সুর জানান, হাসপাতাল থেকে তাকে নরমাল ডেলিভারীর হবার কথা জানালে ফোনে তিনি নার্সকে পরামর্শ দিয়েছেন। পরে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এসে দেখেন বাচ্ছা মৃত।
হাসপাতালটির মালিক মো: মনিরুজ্জামান বলেন, আল্টাসনোগ্রাফি রিপোর্ট অনুযায়ী নরমাল ডেলিভারি হবার কথা ছিল বলে ডাক্তার ডাকা হয়নি। তার দাবি রোগি হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই বাড়িতে বসে স্থানীয়ভাবে ডেলিভারী করানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। নবজাতকের গলায় নারী পেচানো ছিল। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং আয়ার বক্তব্য পরস্পর বিরোধী।
তবে অভিযোগ রয়েছে, হাসপাতালটিতে বিভিন্ন ডাক্তারের সাইন বোর্ড জুলিয়ে রাখা হলেও তা শুধু কাগজে কলমেই রয়েছে। বাস্তবে এক দুইজন চিকিৎসক রয়েছে। তা অনিয়মিত। নার্স আয়াদের দিয়েই চলছে চিকিৎসা।
মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, তদন্ত অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা