১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

পথের পাশে ফুটে অপরূপ সৌন্দর্যে ‘সোনালু’ ফুল

- ছবি : নয়া দিগন্ত

গ্রীষ্মের এই প্রচণ্ড তাপদাহে মানুষজন যখন ওষ্ঠাগত তখন তৃষ্ণা মেটাতে একটু গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছে। আর এ সময়ে এই গ্রীষ্মে প্রকৃতি বিভিন্ন প্রকারের ফুল ফোটে তার অপরূপ সৌন্দর্যে। বসন্তে পাতা ঝেড়ে ফেলে গ্রীষ্মে গাছে জন্ম নেয় নতুন পাতা। পথের পাশে কিংবা রাস্তার পাশে এমনকি বাড়ির আঙ্গিনায় ফোটে ‘সোনালু’ ফুল।

ফুলে ফুলে ছেয়ে যায় সবুজ গাছ। ফুলের পাঁপড়িতে যেন রঙময় হয়ে আছে প্রকৃতি। প্রকৃতি যেন নিজের রূপে সজ্জিত হচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহে যখন দুর্ভোগে পড়েছে, ঠিক তখনই প্রকৃতি মেতে উঠেছে আনন্দে। সবুজ গাছ থেকে যেন হলুদ ঝরনা নেমে এসেছে। বাতাসে কিশোরীর কানের দুলের মতো দুলতে থাকা এ ফুল আকৃষ্ট করে তরুণ-তরুণীসহ সব বয়সি মানুষকে।

গ্রীষ্মের তাপদাহে ওষ্ঠাগত পথচারীরা পুলকিত নয়নে, অবাক বিস্ময়ে উপভোগ করেন এই সৌন্দর্য। শোভাবর্ধনকারী এ বৃক্ষটি দেশের গ্রামীণ জনপদে জন্মে থাকে। গ্রীষ্মের খরতাপে প্রকৃতিতে প্রাণের সজীবতা নিয়ে যেসব ফুল ফোটে তার মধ্যে সোনালু উল্লেখযোগ্য।

ঝাড়বাতির মতো ঝুলে থাকা এ ফুলগুলো চারপাশ আলোকিত করে রাখে। বড় বড় থোকায় হলুদ-সোনালি রঙের ফুল চলতি পথে পথিকের নজর কাড়বেই। গ্রীষ্ম রাঙানো এ ফুল দেখতে যেমন আকর্ষণীয় তেমনি তার নামের বাহার সোনালু, সোনাইল, সোঁদাল, বান্দরলাঠি ইত্যাদি। পুষ্পিত সোনালু তখন যেন কাঁচা সোনা রঙে আবৃত। ফুলের এমন শোভার কারণেই এ ফুলের ইংরেজি নাম ‘গোল্ডেন শাওয়ার’।

বৈশাখী হাওয়ার পরশে এর থোকাগুলো দুলতে থাকে কানের দুলের মতো। আর হলুদ বরণ সৌন্দর্য মাতোয়ারা করে রাখে চারপাশ। দিন দিন কমে আসছে সোনালুর সংখ্যা।

কারণ হিসেবে অনেকেই মনে করেন, এ গাছের কাঠ খুব একটা দামী নয়। কিংবা গাছটি খুব আস্তে আস্তে বাড়ে বলেই কেউ উৎসাহ নিয়ে সোনালু গাছ রোপণ করেন না। প্রাকৃতিকভাবে যা হয়, তার ওপর ভর করেই হলুদ-সোনালী রঙের সৌন্দর্য বিতরণ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে সোনালু। পথে প্রান্তরের গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে টুকটুকে লাল কৃষ্ণচূড়া, স্বর্ণাভ হলুদ সোনালু যেন পাপড়ির পেখম মেলে বসেছে এবং ঝুমকোর মতো পাপড়ি দুলছে সোনালু রঙিন ফুল। গ্রীষ্মের এমন খরতাপেও প্রকৃতিজুড়ে এসব ফুলের নান্দনিকতায় চোখ জুড়িয়ে যায়।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার মো: আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘সোনাল’ গাছটাকে স্থানীয়ভাবে অনেক নামে ডাকে। তবে এসব গাছ রাস্তার পাশে এমনকি বাড়ির আশপাশে জন্মে থাকে। আবার এলাকাভিত্তিক ‘হোনাই ফুল’ নামে ডাকে। এ গাছের প্রয়োজনীয়তা তেমন নেই। তাই এ গাছ তেমন রোপন করা হয় না। বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে রাস্তার পাশে গাছে গাছে দেখা যায় যেন সোনালী রঙ ছড়িয়ে আছে। তবে আমাদের প্রকৃতিকে সাজিয়ে রাখতে এবং পরিবেশের ভারসাম্যে বজায় রাখতে এসব গাছের চারা রোপন করা একান্ত প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement