০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯ মাঘ ১৪৩১, ২ শাবান ১৪৪৬
`

তাপদাহে পুড়ছে ফসল, মলিন কৃষকের হাসি

ফসলের গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে - ছবি - নয়া দিগন্ত

পটুায়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলায় রবি মৌসুমের শুরু থেকে প্রচণ্ড তাপদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে রবি মৌসুমে ফসল কম হওয়ার আশঙ্কা করেছেন কৃষকরা। অতিরিক্ত তাপদাহে শুকিয়ে যাচ্ছে বাদাম, মরিচ, মুগডালসহ শত শত হেক্টর ফসলের মাঠ। অনাবৃষ্টি ও তাপদাহ যেন কেড়ে নিয়েছে এখানকার কৃষকের মুখের হাসি।

বৃষ্টি না হওয়ায় নদীগুলোতে লবন পানি ঢুকে পড়ায় চাষীরা উদ্বিগ্ন। এতে লোকসানের মুখে পড়তে পারেন চাষীরা। খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় ফসলের ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে পড়েছে। ফসলের গাছ শুকিয়ে মরে যাচ্ছে।

তীব্র গরমে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়েরিয়াসহ পানিবাহিত রোগ। কয়েকমাস থেকেই এ অঞ্চলের তাপমাত্রা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। অসহনীয় গরম ও কাঠফাটা রোদে অস্থির হয়ে পড়েছে মানুষ। মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে শুধু ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছে দুই শতাধিক রোগী। তাদের বেশির ভাগই শিশু, নারী ও বৃদ্ধা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, মির্জাগঞ্জ উপজেলায় চলতি রবি মৌসুমে ৯ হাজার ৪৫৫ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে মুগ ডাল, বাকি জমিতে অন্য শস্য চাষ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার মুগডাল দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বেশি চাষ হয়েছে।

এছাড়াও চলতি মৌসুমে করলা, মিষ্টি কুমড়া, বেগুন, ঢেঁড়স, বরবটি ও পুঁইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি ও লতাকৃষির চাষ করা হয়েছে।

উপজেলায় বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে দেখা গেছে, প্রয়োজনীয় পানির অভাবে ও তীব্র রোদের তাপে শস্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক ক্ষেতে জোয়ারের পানি ঢুকলেও লোনা পানির কারণে হলদে হয়ে যাচ্ছে গাছগুলো। এতে এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকরা লোকশানের মুখে পড়বেন।

এ বছর এপ্রিলের ২৫ তারিখ পর্যন্ত কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলের গাছ বৃদ্ধি হয়নি। ফুল ও ফল রোদের তাপে ঝড়ে পড়েছে। আর যতটুকু ফলন হয়েছে তাতে এখনো পুষ্টি আসেনি। এই বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠে যেখানে মাঠঘাট পানিতে ডুবে থাকে অথবা অতি বৃষ্টি হয়, সেখানে টানা খরা, রোদ আর বৈশাখী খরতাপে চাষিরা এবার দুর্ভাবনায় পড়েছেন।

অনেক জমিতে শসা, করলা প্রথম দিকে ভালো আবাদ হলেও পরে টানা খরায় মেশিন দিয়ে পানি দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। কুমড়া, শসাতে রোদের খরতাপে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে।

চাষীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতায় ফসল পরিপক্ক হাওয়ার প্রাক্কালে অনাবৃষ্টি ও অতিবৃষ্টির কারণে ক্ষেত পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়ে থাকে। কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়া এবং আশপাশের নালা শুকিয়ে যাওয়া ও পরিমাণ মতো পানি সেচ দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই উৎপাদনে কাঙ্খিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। এরফলে কৃষকদের লোকশান গুনতে হবে।

লোকসান পুষিয়ে উঠতে কৃষকদের বিশেষ প্রণোদনা পাওয়ার দাবি জানান অনেকে। পশ্চিম সুবিদখালী গ্রামের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম জানান, এবছর আমি এক একর জমিতে মুগডালের চাষ করেছি। কিন্তু রোদের তীব্র তাপ ও বৃষ্টি না থাকায় ফলন এতো কম হয়েছে যে, খেতে আর ডাল তুলতে যেতে হবে না। আর বিভিন্ন ফল রোদের তাপে ঝরে পড়েছে। খালে পানি না থাকায় সেচের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। এতে আমার অনেক লোকসান হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আরাফাত হোসেন জানান, ‘প্রচণ্ড তাপদাহে মাটির নিচে জমা পানি শুকিয়ে খেতে লবণাক্ততা দেখা দেয়ায় গাছ ঝলসে গেছে। যে পরিমাণে ক্ষেতে ফসল আছে তা রক্ষায় কৃষকদেরকে পোকা নিধন ও প্রয়োজনীয় সেচের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। এ বছর উপজেলায় রবি মৌসুমে আবাদ বেশী হয়েছে। পর্যাপ্ত সেচের অভাবে ও বৃষ্টি না হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে কৃষকদের। ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষুদ্র চাষীদের যাচাই বাছাই করে প্রণোদনা দেয়া যেতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement
নির্বাচকের দায়িত্ব ছাড়লেন হান্নান, হতে চান কোচ ৭ জেলায় আংশিক ও মেহেরপুরে পূর্ণাঙ্গ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা বিএনপির ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির পর নির্বাচন চায় যুক্তরাষ্ট্র সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্র রওনা হবেন মির্জা ফখরুল-আমীর খসরু জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের শ্যামলীতে সড়কে অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সব সমস্যা দ্রুত সমাধান সম্ভব নয় : উপদেষ্টা আসিফ শ্রীলঙ্কায় ৬৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যহ্রাস পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বিমান হামলায় কিশোরসহ নিহত ৫ আকাশ মেঘলা থাকতে পারে বান্দরবানের লামায় ৭ শ্রমিককে অপহরণ বাঁশ দিয়ে রাস্তা আটকে দিলেন তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

সকল