২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বেতাগীতে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর বেড ও স্যালাইন সঙ্কট

বেতাগীতে হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর বেড ও স্যালাইন সঙ্কট - ছবি- সংগৃহীত

বরগুনার বেতাগীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এসব রোগী হাসপাতালে সীমিত জনবল নিয়ে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। এ দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে বেড ও শিরায় দেয়ার জন্য কলেরা স্যালাইনের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নির্ধারিত বেড ও ওয়ার্ডে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝে ও সিঁড়িতে রোগী রেখে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসাধীন অবস্থায় উপজেলার বলইবুনিয়ার আহম্মেদ হাওলাদারসহ (৬৫) গত চার দিনে ডায়রিয়ায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩৮ জন ডায়রিয়া রোগী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে। একই সময় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৪১ জন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে ৯৭ জন।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে কর্মরত সিনিয়র স্টাফ নার্স ছবি মন্ডল জানান, শুক্রবার থেকে প্রতিদিন ৫০-৬০ জন মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদের চাপে এমনিতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জায়গা নেই। অনেকেই বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছে। জায়গার অভাবে বারান্দায় চাদর বিছিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন উপজেলার লক্ষ্মীপুরা গ্রামের শিশু মুবিন। তার মা আয়শা বেগম জানান, এখানে দুর্ভোগের শেষ নেই। চিকিৎসকরা কাকে রেখে কাকে দেখবেন বলা মুশকিল। তার বর্ণনা অনুযায়ী, ছেলে মুবিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাই হাসপাতালে না থেকে উপায় নেই।

এরই মধ্য স্যালাইনের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বাইরের ফার্মেসি থেকে স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। এই সুযোগে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে চড়া দামে কলেরা স্যালাইন বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত ওষুধ ও সেবা না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বজনরা।

ভুক্তভোগীরা জানায়, এখন চড়া দামেও স্যালাইন মিলছে না। বেতাগী পৌর শহরের পাইকারি ওষুধ বিক্রেতা রনজিৎ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, ‘এক সপ্তাহ ধরে চার-পাঁচ দিন ধরে আইভি স্যালাইনের তীব্র সঙ্কট চলছে।’

স্যালাইনের জন্য মানুষ বিভিন্ন ফার্মেসিতে ঘুরছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর বরিশাল ডিপোতেও চাহিদাপত্র দিয়ে স্যালাইন পাওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি করা হচ্ছে।

জানা গেছে, এমন পরিস্থিতিতে যার পাঁচটি দরকার তাকে একটি স্যালাইন দিয়ে হাসপাতাল থেকে বিদায় করে দেয়া হচ্ছে।

তবে পরিস্থিতি সামাল দিতে বরগুনার সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নাদিরা সুলতানা ৩০০ ও বেতাগী উপজেলা পরিষদ থেকে থেকে ৩০০ কলেরা স্যালাইন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতর সাত হাজার কলেরা স্যালাইন ও ৩০ হাজার ওআরএস বরাদ্দ দিয়েছে বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালায়ের অতিরিক্ত সচিব মো: রেজাউল করিম নিশ্চিত করেন। অবশ্য কবে নাগাদ তা হাসপাতালে পৌঁছবে এখনো নিশ্চিত নয় বলে জানিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা তেন মং।


আরো সংবাদ



premium cement