রোগীর তরুণী বোনকে যৌন নিপীড়নে গ্রেফতার ক্লিনিক মালিক
- উজিরপুর (বরিশাল) সংবাদদাতা
- ২০ আগস্ট ২০২০, ১৭:৪২
ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন এক নারী রোগীর বোনকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে বরিশালের উজিরপুরে মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক ও ভুয়া চিকিৎসক রেজাউল করিমকে (৩০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে উপজেলার পশ্চিম সাতলা এলাকার ওই ক্লিনিক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে ওই এলাকার মৃত আদম আলীর ছেলে।
পুলিশ বলছে, গ্রেফতারকৃত রেজাউল নিজেকে পল্লী চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তিনি ভুয়া চিকিৎসক বলেই প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। রোগীর স্বজন ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের রাজৈর থানাধীন গোয়ালদী গ্রামের বাসিন্দা ওই তরুণীর অসুস্থ বোনকে চিকিৎসার জন্য গত ১১ আগস্ট বরিশালের উজিরপুর উপজেলার পশ্চিম সাতলা এলাকার মায়ের দোয়া ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভর্তি করা হয়।
সেখানে ভর্তির পর অসুস্থ বোনের সেবা-যত্মের জন্য স্বজনেরা তাকে ক্লিনিকেই রাখেন। এরপর থেকেই ওই তরুণীকে মায়ের দোয়া ক্লিনিকের পরিচালক রেজাউল করিম নানানভাবে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করেন। এতে অতিষ্ঠ হয়ে ওই তরুণী বাড়িতে চলে যেতে চাইলে ক্লিনিকের পরিচালক রেজাউল তাতে বাধা দেয় এবং অশালীন আচরণ শুরু করেন। একপর্যায়ে ক্লিনিকের কর্মচারীদের দিয়ে ওই তরুণীকে গত ১৬ আগস্ট থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ক্লিনিকের ভেতরে আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন স্বজনরা।
ভুক্তভোগী তরুণী জানান, ক্লিনিকে অবস্থানের পরপরই পরিচালক রেজাউল তাকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করা শুরু করে। এরই মধ্যে গত সোমবার মধ্যরাতে রোগীর ওয়ার্ডে এসে ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ তার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় রেজাউল। তখন চিৎকার দিয়ে উঠলে রেজাউল নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দেন এবং অবস্থা বেগতিক দেখে সটকে পরেন।
সবশেষ গত বুধবার সন্ধ্যার পর তাকে রেজাউল করিম তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন। সেখান থেকে তিনি কোনোভাবে বেরিয়ে এসে তার ভাইকে বিষয়টি জানান। পরে তার ভাই উজিরপুর থানা পুলিশকে বিষয়টি জানান এবং লিখিত অভিযোগ দিলে রাতেই ক্লিনিকে অভিযান চালিয়ে রেজাউলকে আটক করে। যৌন নিপীড়নের শিকার ওই তরুণী আরও জানান, ক্লিনিকের স্টাফ ও আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানতে পেরেছেন, রেজাউল করিম দীর্ঘদিন ধরে ওই ক্লিনিকে নারী রোগী ও তার স্বজনদের চিকিৎসা দেয়ার নামে যৌন হয়রানি করে আসছেন। অনেকেই লজ্জায় বিষয়টি গোপন করেন। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি বা টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেন ক্লিনিক মালিক রেজাউল করিম। তাকেও যৌন নিপীড়নের পর হুমকি দেয়া হয়েছিল।
এদিকে থানা হেফাজতে থাকাকালীন রেজাউল করিম অভিযোগগুলো অস্বীকার করে বলেন, উত্ত্যক্ত করা, কু-প্রস্তাব দেওয়ার এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয়ার বিল না দেওয়ার জন্যই মিথ্যে কথাগুলো বলা হচ্ছে।
উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল আহসান জানান, এক নারী রোগীর ছোট বোনকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ক্লিনিক মালিক রেজাউল করিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত রেজাউল তার নামের আগে ডাক্তার শব্দটি ব্যবহার করলেও এটি ভুয়া বলেই জানা গেছে। এ ঘটনায় নারী নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা