২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১, ২১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

দুর্যোগ মৌসুমেও চলছে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান

-

চলমান দুর্যোগ মৌসুমেও পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরাঞ্চলে চলছে ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান। অসাধু এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী ও প্রভাবশালীরা নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে ইঞ্জিল চালিত ছোট ছোট ট্রলার নদী পথে ব্যবহার করে আসছে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় এর উপর নির্ভর হয়ে আছে পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন কয়েকটি চরাঞ্চলের মানুষ। অনিরাপদ ট্রলারে ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত মানুষ পারাপার করছেন। এ কারণে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন মহল। কিন্তু এসব অবৈধ নৌযান বন্ধ করতে স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।

জানা গেছে, সাগর উপকূলে জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত দূর্যোগ মৌসুম। আর এই দুর্যোগ মৌসুম মানেই উপকূলবাসীর জন্য বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাস আতঙ্ক। চলতি দূর্যোগ মৌসুসে সকল প্রকার অনিরাপদ নৌযান বন্ধ থাকার কথা। কিন্তু পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলের বিভিন্ন নৌ-রুটে তা মানা হচ্ছে না। বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার- আগুনমুখা, বুড়াগৌরাঙ্গ ও তেতুলিয়া সহ উত্তাল নদীগুলোতে চলছে ফিটনেস ও অনুমোদন বিহীন ছোট ছোট ট্রলার ও ইঞ্জিন চালিত নৌকা। ঝুঁকিপূর্ণ এসব ইঞ্জিল চালিত নৌকায় প্রতিনিয়ত শত শত যাত্রীরা পারাপার করছে। এতে করে যে কোনো সময় বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন যাত্রীরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গাবালীর উপজেলার চরমোন্তাজ থেকে গলাচিপা, কোড়ালিয়া থেকে চালিতাবুনিয়া, চমোন্তাজ থেকে উলানিয়া, গহীনখালী থেকে চরমোন্তাজ এসব নৌ-রুটে ফিটনেস বিহীন ঝুঁকিপূর্ণ নৌযান চলাচল করছে। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালীর সাথে সড়ক পথে জেলা শহরের কোনো প্রকার সংযোগ নেই। এছাড়াও এখানকার ছয় ইউনিয়নের মধ্যে দুই ইউনিয়ন তথা চরমোন্তাজ ও চালিতাবুনিয়া উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন। এসব বিচ্ছিন্ন দ্বীপের যোগের একমাত্র মাধ্যম নৌপথ। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে নদী পথেই অনিরাপদ নৌযানে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় যাত্রীদের। দুর্ঘটনায় প্রাণহানীর আগেই উপকূলীয় এলাকায় এসব অবৈধ নৌ-যানের পরিবর্তে নিরাপদ লঞ্চ সার্ভিস চালু হবে এমনটাই প্রত্যাশা সচেতন মহলের।

রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ স্লুইস বাজারের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম জানান, চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চারদিকে নদী। জেলা ও উপজেলা থেকে এ ইউনিয়নটি বিচ্ছিন্ন। যে কোনো দিকে যেতে হলে নৌ পথেই যেতে হয়। অথচ এই রুটে বিআইডব্লিউটি নির্ধারিত একটি মাত্র লঞ্চ। যাতে দৈনিক একবার পার হওয়া যায়। বাকি সময় লঞ্চ থাকে না। তাই জনগণ প্রয়োজনের তাগিদে বাধ্য হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রলার গুলোতেই চলাচল করে।

একই এলাকার অরেক ব্যবসায়ী কবির মোল্লা বলেন, ফিটনেসবিহীন ওইসব ট্রলারগুলোতে যাত্রী চলাচলই দায়। কিন্তু ট্রলার মালিকরা অধিক লাভের আশায় যাত্রীর সাথে মাল বোঝাই করে নেয়। তাতে যাত্রীদের কষ্টের সীমা থাকে না। যার কারণে প্রতিনিয়ত প্রাণ হাতের মুঠোয় নিয়ে পারাপার করতে হয় যাত্রীদের।

রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাশফাকুর রহমান জানান, ইতোমধ্যে বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। দুর্যোগ মৌসুমে এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ট্রলারে যাত্রী চলাল করলে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পরে। আমরা এ ব্যাপারে অচিরেই পদক্ষেপ নিচ্ছি।


আরো সংবাদ



premium cement