কুয়াকাটায় ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে অনিয়ম
- কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
- ১৩ আগস্ট ২০২০, ১০:২২
কুয়াকাটার আজিমপুর লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কারণে নির্মাণ কাজ শেষ হবার আগেই সিমেন্ট বালু খসে পড়ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সীমানা প্রাচীর নির্মাণে কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছে না ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য প্রকৌশল দফতর। ঠিকাদারের খেয়াল খুশি মতো যেনতেনভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তবে অনিয়মের কথা স্বীকার করে পটুয়াখালী জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নাজমুল হক বলেন, বিষয়টি সরেজমিনে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, পটুয়াখালী জেলায় ৩টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের ১ হাজার ৬শ’ ফুট সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ দেয়া হয় ঝালকাঠির ঠিকাদার জনৈক রেজা মিয়াকে। ২৮ লাখ টাকা প্রকল্পের নির্মাণ ব্যয় নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে একটি কুয়াকাটার আজিমপুর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্র। এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চার পাশে ৬ ফুট উচ্চতার সাড়ে ৪শ’ ফুট সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ নিয়ে নানা অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। প্রায় ৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে নিম্নমানের ইট শুড়কি, রড ও লোকাল বালু ব্যবহার করছে এমন অভিযোগ।
এ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষের দিকে। নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়ে নির্মাণ কাজের তদারকির দ্বায়িত্বে থাকা জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল দফতরের সহকারী প্রকৌশলী শোভন শাহরিয়ারের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পায়নি স্থানীয়রা। মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সরেজমিনে গেলে এর সত্যতা পাওয়া যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ আ: রশিদ মৃধা জানান, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজে সিলেটের লাল বালু এবং মোটা সাদা বালু সমান হারে দেয়ার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। লোকাল বালুর সাথে মোটা সাদা বালু মিশিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ কাজ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ৬ বস্তা লাল বালু এনে নমুনা স্বরূপ রেখে দেয়া হয়েছে। যা অদৌও ব্যবহার করা হয়নি।
একই অভিযোগ করেন স্থানীয় ফারুক হোসেন। ফারুক হোসেন বলেন, কাজে নিম্নমানের ইট শুড়কি ও লোকাল বালু ব্যবহারের কারণে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই সীমানা প্রাচীরের আস্তরণ খসে পড়ছে। একটি পিলারের সাথে অন্য পিলারের দূরত্ব নকশা অনুযায়ী করা হয়নি। এমনকি সঠিকভাবে রডের ব্যবহারও করা হয়নি। যেমন খুশি তেমনভাবে কাজ করা হয়েছে।
এসব অনিয়মের কথা স্বীকার করে এ কাজের সাব ঠিকাদার মো: হাসান বলেন, প্রথমদিকে ১ গাড়ি মানহীন বালু দিয়ে কাজ করা হয়েছে যার কারণে কোথাও কোথাও কাজ একটু খারাপ হয়েছে। পরবর্তীতে এসব বালু দিয়ে আর কাজ করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, ইঞ্জিনিয়ার প্রতিনিয়ত এ কাজের তদারকি করছেন। কাজের মান খারাপ হলে কর্তব্যরত প্রকৌশলীর দেখার বিষয়। তবে এ বিষয়ে ঠিকারের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে লতাচাপলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রের জমিদাতা ও লতাচাপলী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সাঈদ বলেন, সীমানা প্রাচীর নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। ঠিকাদার ইচ্ছামত কাজ করছে। এ বিষয়ে প্রকল্প প্রকৌশলীকে বার বার বলা হলেও তিনি রহস্যজনক কারণে এড়িয়ে যাচ্ছেন।
কাজে অনিয়ম হচ্ছে স্বীকার করে তদারকি কর্মকর্তা সহকারী প্রকৌশলী শোভন শাহরিয়ার বলেন, কাজের তদারকি সহকারী অনিয়মের বিষয়ে তাকে অবহিত করেছেন এবং নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ভিডিও ধারণ করে নিয়ে এসেছে। নির্বাহী প্রকৌশলীকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: নাজমুল হক জানান, কাজে অনিয়ম হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা