৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

বরিশালে ইমামকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা : চেয়ারম্যান গ্রেফতার

বরিশালে ইমামকে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা : চেয়ারম্যান গ্রেফতার - ছবি : নয়া দিগন্ত

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় একটি মাদরাসার অফিস সহকারীকে মারধর ও জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করার ঘটনায় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো: মোস্তফা রাঢ়ীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত পৌণে ৯টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত সুপার মো: নাঈমুল হক।

তিনি জানান, সন্ধ্যা ৬টায় মুলাদী পৌর এলাকা থেকে ওই ঘটনার দায়েরকৃত মামলার মূল অভিযুক্ত দরির চর খাজুরিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোস্তফা রাঢ়ী ও সাবেক মেম্বার সাত্তার শিকদারকে গ্রেফতার করা হয়।

এর আগে এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকা বজলু আকন নামে একজনকে বৃহস্পতিবার সকালে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বজলু মামলার এজাহারভূক্ত আসামি বলে জানিয়েছেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবিদুর রহমান। পাশাপাশি বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জে একটি মাদরাসার অফিস সহকারী ও স্থানীয় একটি মসজিদের ইমামকে মারধর ও জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে মামলাটি দায়ের করা হয়। থানায় মামলাটি দায়ের করেন মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দরিচর-খাজুরিয়া দাখিল মাদরাসার ওই অফিস সহকারী শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন।

মামলায় দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: মোস্তফা রাঢ়ী, স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান মেম্বার শহীদ দেওয়ান, সাবেক মেম্বার ইউনুস বয়াতি ওরফে কামরুজ্জামান, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদারসহ দশজনকে নামধারী ও আরো ৫ থেকে ৬ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সালিশের নামে বুধবার বিকেলে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে স্থানীয় মাদরাসার অফিস সহকারী ও ইমাম শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিনকে মারধর ও জুতার মালা পরিয়ে হেনস্থা করা হয়। যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। যে ভিডিওতে দরিচর-খাজুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: মোস্তফা রাঢ়ী, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আব্দুস ছত্তার সিকদার এবং স্থানীয় চৌকিদার মিলে জুতার মালা পরিয়ে তাদেরকে হেনস্থা করার দৃশ্য রয়েছে।

এদিকে নির্যাতিত আলাউদ্দিনের স্ত্রী নাহিদা সুলতানা স্বামীর বরাত দিয়ে জানান, ২০১৯ সালে উপবৃত্তির তালিকা পাঠানোর সময় এক ছাত্রী মাদরাসায় না আসায় সেখানে নিজের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে দেন তিনি। কিন্তু দীর্ঘ দিন নম্বরটি ব্যবহার না করায় এটি বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট মোবাইল কোম্পানি। এরই মধ্যে ছাত্রীর এক বছরের উপবৃত্তির ১৮ শ’ টাকা ওই মোবাইল নম্বরে জমা হয়। কিছুদিন আগে মোবাইল নম্বরটি সচল করে উপবৃত্তির টাকা দেখতে পান তিনি। ওই টাকা ছাত্রীর পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়ার আগেই গত ৩০ মে তাকে মারধর করে সিম কার্ডটি নিয়ে যায় ছাত্রীর খালু সাবেক ইউপি মেম্বার সত্তার সিকদার। পরে এ বিষয়টি নিয়ে তিনি শিক্ষা অফিসার ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দেন। এরপর চেয়ারম্যান তাকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন।

তিনি বলেন, টাকা আত্মসাতের ইচ্ছে থাকলে গোপনে টাকা উঠিয়ে ফেলতে পারতেন, কিন্তু মাওলানা সাহেব তা করেননি। তিনি ওই ছাত্রীর স্বজনদের অবগত করার আগেই মেম্বার সব ঘুরিয়ে দিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement