১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪ মাঘ ১৪৩১, ১৭ রজব ১৪৪৬
`

৫ দিনের নবজাতককে নদীতে ফেলে দিলো স্কুলশিক্ষিকা মা

৫ দিনের নবজাতককে নদীতে ফেলে দিলো স্কুলশিক্ষিকা মা - ছবি : সংগৃহীত

বরিশালে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে পাঁচ দিনের এক নবজাতক কন্যা শিশুকে ফেলে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। গত বুধবার দুপুর আনুমানিক ১টা ৩০ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে। এখনো নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা দিয়ে গোপন করতে চাইলেও পরে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় লোকমুখে জানাজানি হয়। এ নিয়ে নগরীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, নিজেকে আড়াল করতে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতার কারণ দেখিয়ে স্কুল শিক্ষিকা মা ঐশী আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্ট্রারে নাম গোপন করতে কৌশল করে তার নাম রাবেয়া লিপিবদ্ধ করা হয়। বর্তমানে শেবাচিমেই রয়েছেন তিনি। ঘটনার চাঞ্চলের সৃষ্টি হলে খবর শুনে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার রাত ৭ টার দিকে হাসপাতালে পৌঁছে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।

আরো জানা গেছে, নবজাতক স্কুল শিক্ষিকা মা ঐশী আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে ও কুলকাঠি ইউনিয়নের হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। তার স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। বর্তমানে তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

নবজাতক কন্যা শিশুর বাবা মো: সোহেল আহমেদ জানান, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ভোর রাতে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। এর দুই দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রী'র বড় বোনের বাসায় রেখে আসি। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। এরপর সে অটোরিকশা করে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে আমার সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে আমার সন্তানের হদিস মিলছে না। এ বিষয়ে আমি আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

শেবাচিম হাসপাতালের কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়। এরপর সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে আবারো হাসপাতালে এনে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সাথে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে এসে খোঁজখবর নিয়েছে।

নবজাতকের মামা মো: মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এজন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই রাবেয়া লেখা হয়। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি ও তার বোন কিছুই বলতে পারছে না।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত। আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছে থেকে পরিষ্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।


আরো সংবাদ



premium cement